Wednesday 05 Mar 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

৫ মার্চ ১৯৭১
কারাগার ভেঙে শহিদ মিনারে বিক্ষোভ করে কয়েদিরা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৫ মার্চ ২০২৫ ০৮:০০ | আপডেট: ৫ মার্চ ২০২৫ ১১:৪৪

অগ্নিঝরা ৫ মার্চ, ১৯৭১। ছবি কোলাজ: সারাবাংলা

ঢাকা: ১৯৭১ সালের ৫ মার্চ। এদিন সারাদেশে বিক্ষোভ আরও ছড়িয়ে পরে সাধারণ জনতার মধ্যে। এই দিনে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার ভেঙে ৩২৫ জন কয়েদি কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের সামনে এসে বিক্ষোভ করে। কারাগারের ফটক ভাঙার সময় প্রহরীর গুলিতে সাত কয়েদি নিহত হন। গুলি চলে চট্টগ্রামেও।

পাশাপাশি দেশ জুড়ে চলছিল মিটিং, মিছিল ও বিক্ষোভ। সাধারণ মানুষের ওপর গুলিবর্ষণের প্রতিবাদে দেশব্যাপী পালন করা হয় সর্বাত্মক হরতাল। টঙ্গীতে গুলিবর্ষণে আহত হন ১৮ জন বিপ্লবী। যশোরেও নিহত হন এক মুক্তিকামী বাঙালি।

বিজ্ঞাপন

তবে অত্যাচার ও নিপীড়ন উপেক্ষা করে লালদীঘি ময়দানে আয়োজন করা হয় বিশাল সমাবেশের। এদিন দুপুরে বায়তুল মোকররম মসজিদের সামনে থেকে ‘বাঁশের লাঠি তৈরি কর-পূর্ব বাংলা স্বাধীন কর’ স্লোগান নিয়ে সর্বস্তরের মানুষ বিশাল লাঠি মিছিল বের করে।

ঢাকায় এদিন তৎকালীন ছাত্রলীগের লাঠি মিছিলে অংশ নেয় স্বতঃস্ফূর্ত জনতা। একাত্মতা ঘোষণা করে ডক্টর আহমদ শরীফের নেতৃত্বে শহিদ মিনারে শপথ নেন ঢাকার লেখক-শিল্পীরা। বাঙালি উপলব্ধি করতে থাকে পাক হানাদারদের কাছ থেকে স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনার একমাত্র পথ সশস্ত্র সংগ্রাম। সন্ধ্যায় সরকারিভাবে ঘোষণা করা হয়, ঢাকায় সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

মসজিদে মসজিদে জুমার নামাজের পর শহিদের আত্মার শান্তি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত হয়। ঢাকাসহ সারাদেশে প্রতিবাদ সভা ও শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। সেদিন বিভিন্ন জেলায় স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করা হয়।

লাহোরে দেশের পূর্বাঞ্চলে সাম্প্রতিক আন্দোলনে নিহত শহিদদের গায়েবানা জানাজা হয়। সংকটময় মুহূর্তে দেশের সংহতির জন্য বিভিন্ন মসজিদে হয় বিশেষ মোনাজাত। পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান ভুট্টো রাওয়ালপিন্ডির প্রেসিডেন্ট ভবনে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার সঙ্গে পাঁচ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে আলোচনা করেন।

বিজ্ঞাপন

রাতে তৎকালীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দিন আহমদ এক বিবৃতিতে বলেন, ‘ঢাকা চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, রংপুর সিলেটসহ বাংলাদেশের অন্যান্য স্থানে মিলিটারির বুলেটে নিরীহ-নিরস্ত্র মানুষ, শ্রমিক, কৃষক ও ছাত্রদের হত্যা করা হচ্ছে। নির্বিচারে নিরস্ত্র মানুষকে এভাবে হত্যা করা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ ছাড়া আর কিছুই নয়।’

ততদিনে বাঙালি উপলব্ধি করছে, জুলুমের অবসান ঘটিয়ে স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনার একমাত্র পথ হচ্ছে- ‘সশস্ত্র সংগ্রাম’।

সারাবাংলা/এফএন/পিটিএম

কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর