নির্বাচন নিয়ে গড়িমসি করলে সরকারের প্রতি অনাস্থা আসবে: রিজভী
৭ মার্চ ২০২৫ ১৪:৩৮ | আপডেট: ৭ মার্চ ২০২৫ ১৬:৩৯
রাজশাহী: নির্বাচন নিয়ে গড়িমসি করলে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি জনগণের অনাস্থা আসবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী। তিনি বলেছেন, নির্বাচন কমিশন যদি সঠিকভাবে কাজ করে তাহলে ডিসেম্বর নয়, জুন-জুলাইয়ে জাতীয় নির্বাচন সম্ভব।
শুক্রবার (৭ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে জুলাই আন্দোলনের রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের শহীদ পরিবারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। রাজশাহী নগরের ভুবনমোহন পার্ক শহিদ মিনারে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’।
রিজভী বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকার মনে করি, আমরা মনে করি এই সরকারই জাতীয় নির্বাচন দেবেন। জনগণ নির্বাচনের জন্য মুখিয়ে রয়েছে। জাতীয় নির্বাচনের আগে অন্য কোন নির্বাচন নয় বলেও মন্তব্য করেন বিএনপি নেতা।’
তিনি বলেন, ‘ভারত বাংলাদেশের বিষয়ে আমেরিকার সঙ্গে আলোচনা করছে। বাংলাদেশকে নিয়ে ভারতের এত মাথাব্যথা কেন? ভারত এখন শেখ হাসিনার দোসরদের বাগানবাড়িতে পরিণত হয়েছে। ভারতের সব অপকর্ম শেখ হাসিনা মেনে নিতেন। বিশ্বের সবচেয়ে রক্তাক্ত সীমন্ত ভারত-বাংলাদেশ।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বাংলাদেশিদের পাখির মত গুলি করে মারলেও হাসিনা সরকার নিরব থেকে পররাষ্ট্রনীতির জন্য মাথা নত করে চলতো। ভারত মনে করত হাসিনা তাদের একজন বিশ্বস্ত, অনুগত। শেখ হাসিনা ছিল দস্যু দলের সর্দারনি। যখন যা ইচ্ছে করেছে। ছাত্র ছাত্রীদের হত্যা করে রক্তাক্ত করে শেখ হাসিনা বাংলাদেশ থেকে পালিয়েছে, ভারত তাদের আশ্রয় প্রশ্রয় দিয়েছে।’
রিজভী বলেন, ‘কেউ কেউ বলছেন, গণপরিষদ নির্বাচন করতে হবে। ভাই, আমরা তো এটা বুঝতে পারছি না। গণপরিষদ করতে হয় এই কারণে তার মাধ্যমে একটা সংবিধান রচনা করা হয়। আমাদের তো সংবিধান আছে। শেখ হাসিনা সংবিধানে অনেক ধরনের ফ্যাসিবাদী আইন-কানুন যুক্ত করেছেন। কিন্তু এটা তো সংশোধনের বিধান আছে। অনেকবার সংশোধন হয়েছে। তো গণপরিষদ আসছে কেন? এই কথাগুলো বিভ্রান্তি তৈরি করছে।’
সংস্কার করতে কতদিন সময় লাগে, সে প্রশ্নও তোলেন বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা। তিনি বলেন, ‘আজকে সংস্কারের কথা যারা বলছেন, এই সংস্কার করতে কতদিন সময় লাগে? পুলিশ আচরণ করবে আইন অনুযায়ী। কোনো ক্ষমতাশালীর কথা সে শুনবে না। প্রতিষ্ঠান চলবে তার আইনের গতিতে। এটা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। এটার জন্য কতদিন সময় লাগে?’
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘সংস্কারের জন্য বিভিন্ন কমিশন করা হয়েছে, এটা মার্চ মাস। নির্বাচনের জন্য গড়িমশি কেন? সরকারও নির্বাচনের জন্য একটা মাস দিয়েছিল। বলেছিল ডিসেম্বরে নির্বাচন হতে পারে। আবারও শুনি কেউ কেউ বলছে- না, এই সময়ে নির্বাচন করা কঠিন। নির্বাচন তো করবে নির্বাচন কমিশন, সহায়তা করবে সরকার। আমরা আশা করি, সরকার দেশের মানুষের সঙ্গে ন্যায়সঙ্গত আচরণ করবে। কারণ, ড. ইউনূস একজন সম্মানিত ব্যক্তি।’
আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবি জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দরকার, তার পরে না স্থানীয় সরকার নির্বাচন। সংস্কার তো চলমান ধারা। এটা চলবে যাতে কোনোদিন কোনো ফ্যাসিবাদ মাথাচাড়া দিতে না পারে। বাপেরই জন্ম হলো না, তো সন্তান জন্ম হবে কি করে? আগে জনগণের ক্ষমতা জনগণকে ফিরিয়ে দিতে হলে আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দিতে হবে। তারপর স্থানীয় সরকার নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আমরা বিএনপি পরিবার-এর সভাপতি আতিকুর রহমান রুমন। স্বাগত বক্তব্য দেন সদস্য সচিব মোকছেদুল মোমিন মিথুন। আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, আমরা বিএনপি পরিবার-এর উপদেষ্টা আবুল কাশেম, মোস্তফা-ই-জামান সেলিম, আশরাফ উদ্দিন বকুল, বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, নগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ আলী ঈসাসহ আরও অনেকে।
সারাবাংলা/এমপি
অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচন বিএনপির যুগ্ন মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী