হিযবুত তাহরীর কার্যক্রমের প্রতিবাদে গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের বিক্ষোভ
৭ মার্চ ২০২৫ ২০:৪৬ | আপডেট: ৭ মার্চ ২০২৫ ২১:৩৬
ঢাবি: নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন হিযবুত তাহরীরের প্রকাশ্য কর্মসূচির মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করে তোলার চেষ্টা ও তাদের কার্যক্রম ঠেকাতে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর ব্যর্থতার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ।
শুক্রবার (৭ মার্চ) সন্ধ্যায় রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তারা।
এ সময় বিক্ষোভ সমাবেশে ‘দিয়েছিতো রক্ত, আরও দিব রক্ত’, ‘আপোষ না সংগ্রাম, সংগ্রাম,সংগ্রাম’, ‘উগ্রবাদের ঠিকানা এ বাংলায় হবে না’, ‘সন্ত্রাসবাদের ঠিকানা, এ বাংলায় হবে না’, ‘উগ্রবাদ নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক’, ‘সন্ত্রাসবাদ নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তিপাক’, ‘গোলামী না আজাদী, আজাদী আজাদী’সহ নানা স্লোগান দিতে দেখা যায়।
সমাবেশে মুখ্য সংগঠক হাসিব আল ইসলাম বলেন, ‘আপনারা দেখতে পেয়েছেন গত কয়েকদিন ধরে হিযবুত তাহরীরের মত জঙ্গি সংগঠন তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। আজকে তারা বায়তুল মোকাররম মসজিদ থেকে মিছিল করেছে যা আমাদের জন্য উদ্বেগজনক।’
তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ ছয়মাস পরও অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। আজকে আমরা দেখেছি পুলিশ প্রশাসন নামমাত্র তাদের বাধা দিয়েছে। আমরা বলে দিতে চাই, এ বাংলায় উগ্রবাদের কোনো ঠাঁই হবে না।’
গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের ঢাবি শাখার মুখপাত্র রাহনুমা হৃদি বলেন, ‘আমরা আওয়ামী লীগের পতনের পর থেকে দেখতে পাচ্ছি ধর্মীয় সম্প্রীতি নষ্ট করার জন্য বিভিন্ন পায়তারা করতেছে।’
গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের মুখপাত্র তাহমিদ আল মুদাসসির চৌধুরী বলেন, ‘আমরা ১৬০০ মানুষের জীবন দিয়ে এ স্বাধীনতা পেয়েছি, তা জঙ্গিবাদের আঁকড়া বানাতে না। আজকে যখন হিযবুত তাহরীর বায়তুল মোকাররমের সামনে মিছিল করছে তখন পুলিশ তাদেরকে মিছিল করার সুযোগ দিয়েছে। আমরা দেখছি সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দেওয়া হয়েছে তারপরও তারা কেন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তার জবাব দিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘পুলিশ ও সেনাবাহিনী তাদের চূড়ান্ত ব্যর্থতা দেখাচ্ছে। আমরা হুঁশিয়ার করে দিচ্ছি, হাসিনা যে পথে গেছে তারাও সে পথে যাবে।’
গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ ঢাবি শাখার আহ্বায়ক আব্দুল কাদের বলেন, ‘হাসিনার ফ্যাসিবাদী আমলের পতনের পর থেকে হিযবুত তাহরীর মত অনেকগুলো জঙ্গি সংগঠনের তৎপরতা বেড়ে গেছে। যারা আগের মত হাসিনার সেই বাকশালী থিওরি বাস্তবায়ন করছে। যারা হাসিনার মতবাদকে লালন করবে তাদের পরিণত হাসিনার মত হবে।’
তিনি বলেন, ‘হিযবুত তাহরীর উগ্রবাদের চর্চা করেন। ৫ আগস্টের পর থেকে দেখছি তাদের দৌরাত্ম আরও বেড়ে গেছে। সেখানে পুলিশ কী ভূমিকা পালন করেছিল। এখন পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা কী। আমরা আজকে বলতে চাই, আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে তাদেরকে গ্রেফতার করতে হবে। তাদেরকে গ্রেফতার করে তদন্তের আওতায় আনতে হবে। একইসঙ্গে তাদের মদদদাতাদেরও গ্রেফতার করতে হবে।’
উল্লেখ্য, শুক্রবার (৭ মার্চ) জুমার নামাজ শেষ হওয়ার পরেই হিজবুত তাহরীরের ব্যানার নিয়ে একটি মিছিল বের করা হয়। পুলিশের বাধা অতিক্রম করে মিছিলটি পল্টন মোড় পার হয়ে বিজয়নগর মোড়ের দিকে যায়। এ সময় পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুঁড়ে। একপর্যায়ে পুলিশ লাঠিপেটা করে। মিছিলটি ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা অলিগলিতে ঢুকে পড়ে। কিছুক্ষণ পরে তারা আবার সংগঠিত হয়ে পল্টন মোড়ের দিকে আসতে থাকে। পুলিশ এ সময় সাউন্ড গ্রেনেড ছুঁড়ে। তখন মিছিলটি আবার ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।
সারাবাংলা/এআইএন/ এইচআই