ইউক্রেনের সঙ্গে চুক্তি রাশিয়ার চেয়ে কঠিন: ট্রাম্প
৮ মার্চ ২০২৫ ০৯:৫২ | আপডেট: ৮ মার্চ ২০২৫ ১৫:৫৮
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, রাশিয়ার তুলনায় ইউক্রেনের সঙ্গে সমঝোতা করা অত্যন্ত কঠিন। শুক্রবার (৭ মার্চ) ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প জানান, রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক ভালো থাকলেও ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনা কঠিন হয়ে পড়ছে।
ট্রাম্প বলেন, ‘রাশিয়ার সঙ্গে আমরা খুব ভালোভাবে এগোচ্ছি এবং মস্কোর সঙ্গে চুক্তি করা কিয়েভের চেয়ে সহজ হতে পারে।’
এর কয়েক ঘণ্টা আগে, ট্রাম্প ঘোষণা দেন যে তিনি ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি না হওয়া পর্যন্ত রাশিয়ার ওপর বড় ধরনের নিষেধাজ্ঞা ও শুল্ক আরোপের কথা বিবেচনা করছেন।
এদিকে, মার্কিন মহাকাশ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্সার জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের জন্য নির্দিষ্ট কিছু স্যাটেলাইট চিত্রের প্রবেশাধিকার সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে। এর আগে, ট্রাম্প ইউক্রেনের সামরিক সহায়তাও স্থগিত করেন।
২৮ ফেব্রুয়ারি হোয়াইট হাউসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকে ট্রাম্প প্রকাশ্যে জেলেনস্কিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি অসম্মানজনক আচরণের জন্য তিরস্কার করেন। এর পরপরই ট্রাম্প কিয়েভের জন্য সমস্ত সামরিক সহায়তা ও গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান বন্ধ করে দেন।
এ ঘটনার পর, বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) রাতে রাশিয়া ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামো লক্ষ্য করে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায়।
ট্রাম্প দাবি করেছেন, পুতিন যুদ্ধের ইতি টানতে চাইলেও ইউক্রেন সেই আগ্রহ দেখাচ্ছে না।
ট্রাম্পের এই কূটনৈতিক পদক্ষেপ ন্যাটোর মিত্রদের হতবাক করেছে, কারণ পশ্চিমা বিশ্ব ২০২২ সালের রুশ আগ্রাসনের পর থেকে মস্কোর সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের সংযোগ এড়িয়ে চলেছে।
যদিও ট্রাম্প ও জেলেনস্কির মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে, তবে গত দুই দিনে মার্কিন পররাষ্ট্র নীতির অবস্থান কিছুটা নমনীয় হয়েছে।
ওয়াশিংটন চায়, ইউক্রেন একটি চুক্তি স্বাক্ষর করুক, যা যুক্তরাষ্ট্রকে দেশটির খনিজ সম্পদের ওপর বড় ধরনের অধিকার দেবে এবং কিয়েভকে মস্কোর সঙ্গে দ্রুত যুদ্ধবিরতির জন্য বাধ্য করবে।
জেলেনস্কি, অবশ্য, একটি দৃঢ় নিরাপত্তা প্রতিশ্রুতি চেয়েছেন, যা শান্তি চুক্তির অংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে বলে তিনি দাবি করেছেন।
আগামী সপ্তাহে ট্রাম্পের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা সৌদি আরবে যাবেন, যেখানে তারা জেলেনস্কির টিমের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন। এই আলোচনার লক্ষ্য হচ্ছে, ইউক্রেনকে দ্রুত একটি শান্তি চুক্তিতে স্বাক্ষর করানো।
ট্রাম্পের সঙ্গে প্রকাশ্য বিবাদের পর জেলেনস্কি সম্পর্ক পুনরুদ্ধারে কাজ করছেন। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ জানান, ট্রাম্প জেলেনস্কির কাছ থেকে একটি চিঠি পেয়েছেন, যেখানে তিনি দুঃখপ্রকাশ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
ব্রিটিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রায় ২০টি দেশ ইউক্রেনকে সহায়তার জন্য একটি স্বেচ্ছাসেবী জোট গঠনে আগ্রহী। ইউরোপীয় নেতারা সামরিক ব্যয় বৃদ্ধিরও পরিকল্পনা করছেন।
এদিকে, ইউক্রেনের মাটিতে সংঘর্ষ চলমান রয়েছে। ডোনেস্ক অঞ্চলে রুশ বাহিনীর হামলায় শুক্রবার (৭ মার্চ) কমপক্ষে পাঁচজন নিহত হয়েছেন বলে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
সারাবাংলা/এনজে