ঢাকা: বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) এর সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেছেন, বাংলাদেশের প্রগতিশীল সমাজ ও নারীরা বর্তমানে এক ভয়াবহ দুঃসময় পার করছে। নারী বিদ্বেষ, নারীর প্রতি সহিংসতা চরম আকার ধারণ করেছে। সারাদেশে অব্যাহত নারী, শিশু ধর্ষণ ও নিপীড়ন চলছে। এর দায় অন্তর্বর্তী সরকার এড়াতে পারে না।
আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে শনিবার ( ৮ মার্চ ) সিপিবি কেন্দ্রীয় নারী সেলের উদ্যোগে রাজধানীর পুরানা পল্টন মোড়ে আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশ শেষে একটি র্যালি পল্টন মোড় থেকে শুরু হয়ে প্রেসক্লাব ঘুরে মুক্তিভবনে এসে শেষ হয়।
সিপিবি সাধারণ সম্পাদক বলেন, নারীদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানো, নারীর ওপর সহিংসতা ও আক্রমণ চলছে, যা গণ-অভ্যুত্থানের চেতনার পরিপন্থি। সমাজে নারীর অধিকার নিশ্চিত করা এবং সকল কাজে সমান সুযোগ ও সমান মজুরি ছাড়া দেশের অগ্রগতি নিশ্চিত করা যাবে না।
এ সময় মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে যে অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক, মানবিক, শোষণমুক্ত সমাজ গড়ার লক্ষ্য ছিল- তাকে পেছনের দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চলছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সিপিবির প্রেসিডিয়াম সদস্য লক্ষ্মী চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দলের কেন্দ্রীয় সম্পাদক লুনা নূর, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এভভোকেট মাকসুদা আক্তার লাইলী। সমাবেশ পরিচালনা করেন সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড লাকী আক্তার।
সিপিবি’র কেন্দ্রীয় সম্পাদক লুনা নূর বলেন, আমরা ক্ষোভের সাথে লক্ষ্য করছি যে, নারীদের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে সর্বত্র নারী বিদ্বেষ এবং একের পর এক আক্রমণের ঘটনা ঘটছে, যা জননিরাপত্তার জন্য খুবই উদ্বেগজনক। এ বিষয়ে সরকারের জোরালো কোনো পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। পাহাড়ে ও সমতলে নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে জনগণকে রুখে দাঁড়াতে হবে।
কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এভভোকেট মাকসুদা আক্তার লাইলী বলেন, বিদ্যমান আইনি কাঠামোতে নারীর সমঅধিকার চরমভাবে অবহেলিত। রাষ্ট্রে বিচারহীনতা ও জবাবদিহীতার অভাব, সর্বোপরি গণতন্ত্রহীনতার কারণে নারী-নির্যাতন-শোষণ ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। এর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে লক্ষ্মী চক্রবর্তী বলেন, আন্তর্জাতিক নারী দিবস মানে নারী শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের ইতিহাস। নারী দিবসের শতবর্ষ পরে এসেও নারীর সামগ্রিক মুক্তি অর্জিত হয়নি। পুঁজিবাদ নারীকে পণ্যে পরিণত করে মুনাফা অর্জনের জন্য নারী অধস্তনতা, নারী নির্যাতন ও বৈষম্যের সকল উপাদানকে টিকিয়ে রেখেছে। তাই কাজেই নারীমুক্তির মূল শত্রু পুঁজিবাদকে রুখে দেয়ার মধ্য দিয়ে নারীমুক্তির লড়াইকে বেগবান করতে হবে। নারীমুক্তির লড়াই একটি রাজনৈতিক লড়াই। নারীমুক্তির লড়াই এবং সমাজ পরিবর্তনের লড়াই একইসঙ্গে অগ্রসর করতে হবে।