Monday 10 Mar 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

গণপিটুনিতে ২ জামায়াত কর্মী নিহতের ঘটনায় খুনের মামলা, আসামি ৪৭

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৯ মার্চ ২০২৫ ১৬:৫২ | আপডেট: ৯ মার্চ ২০২৫ ১৮:৩৬

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলায় গণপিটুনিতে দুই জামায়াত কর্মী নিহতের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় ৪৭ জনকে আসামি করা হয়েছে।

রোববার (৯ মার্চ) নিহত আবু ছালেকের স্ত্রী সুরমি আক্তার সাতকানিয়া থানায় বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলার আরজিতে অভিযুক্ত সবাই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ করেন তিনি।

সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহেদুল ইসলাম সারাবাংলাকে জানান, গণপিটুনিতে নিহতের শিকার আবু ছালেকের স্ত্রী একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় তিনি ৪৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১০ থেকে ১৫ জনকে আসামি করেছেন।

মামলার আরজিতে সুরমি আক্তার উল্লেখ করেন, তার স্বামী আবু ছালেক জামায়াতে ইসলামীর সক্রিয় কর্মী এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সম্মুখ সারিতে ছিলেন। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আবু ছালেক এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে ছিলেন। মামলায় অভিযুক্তরা সবাই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। গত বছরের ৫ আগস্ট এলাকায় আসার পর ছালেক বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি বিচার শালিসও করতেন। চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি উপজেলার ছনখোলা এলাকায় আবদুর নূর নামে এক ব্যক্তির অটোরিকশায় আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

এ ঘটনার বিচারের দায়িত্ব সালেক ও নেজামকে দেওয়া হলে গত ২২ ফেব্রুয়ারি তারা একটি সালিশ করে অভিযুক্তদের শনাক্ত করেন এবং সাত লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করে দেন। কিন্তু ওই বিচারে রিকশার মালিক নুর সন্তুষ্ট না হওয়ায় ৩ মার্চ রাতে ছনখোলায় ফের বিষয়টি নিয়ে বৈঠকের সিদ্ধান্ত হয়।

মামলায় তিনি আরও উল্লেখ করেন , এওচিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও মামলার ৫ নম্বর আসামি নজরুল ইসলাম মানিকের পরিকল্পনায় হারুন, মমতাজ, কামরুল, আজিজুল ও মাহমুদুল হক অটোরিকশা পোড়ানোর অভিযুক্তদের কাছ থেকে টাকা আদায় করে দেওয়ার কথা বলে ঘটনাস্থলে যেতে বলেন। এ প্রেক্ষিতে ছালেক ও নেজাম তাদের আর কিছু সহযোগীসহ ১১ জন অটোরিকশা নিয়ে ঘটনার দিন ছনখোলা যান।

বিজ্ঞাপন

পরে সেখানে গেলে টাকা আদায়ের বিষয় নিয়ে আলোচনা করার সময় আসামিরা নেজামকে মারধর শুরু করে। পরে ছালেক তাকে উদ্ধার করতে গেলে তাকেও মারধর করা হয়। এক পর্যায়ে মসজিদের মাইকে ডাকাত পড়ার কথা ঘোষণা দিলে এলাকাবাসী জড়ো হয় এবং পরিকল্পিত ভাবে মারধর করে খুন করা হয়।

গত ৩ মার্চ রাতে সাতকানিয়া উপজেলার এওচিয়া ইউনিয়নের চূড়ামণি গ্রামের ছনখোলা এলাকায় গণপিটুনিতে জামায়াত কর্মী মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন (৪৫) ও মোহাম্মদ ছালেক (৩৫) নিহত হয়েছিলেন। এ সময় গোলাগুলিতে পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হন। খুনের শিকার নেজাম উপজেলার কাঞ্চনা ইউনিয়নের মধ্যম কাঞ্চনা এলাকার মাহমুদুল হকের ছেলে। আর ছালেক একই ইউনিয়নের গুরগুরি এলাকার আবদুর রহমানের ছেলে।

দুই কর্মী নিহতের ঘটনায় আওয়ামী লীগ দলীয় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মানিক ও তার দুই ভাইয়ের সম্পৃক্ততার অভিযোগ করে গণমাধ্যমে বিবৃতি পাঠিয়েছিল জামায়াতে ইসলামী। বিবৃতিতে নজরুল ইসলাম মানিকের নির্দেশে তার দুই ভাই মমতাজ ও হারুনের পরিকল্পনায় নেজাম ও ছালেককে গণপিটুনির নামে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়।

সারাবাংলা/আইসি/আরএস

জামায়াতে ইসলামী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর