ঢাকা: ইন্টারনেট খাতে যখন-তখন পলিসি পরিবর্তন না করার দাবি জানিয়েছেন ইন্টারনেট সেবাদাতাদের সংগঠন ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি সাইফুল ইসলাম সিদ্দিক।
রোববার (৯ মার্চ) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশন’ আয়োজিত ‘প্রান্তিক পর্যায়ে দ্রুতগতির মানসম্পন্ন ও সহজলভ্য ইন্টারনেট প্রাপ্তিতে করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
সংগঠনটির সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন টেলিযোগাযোগ বিশেষজ্ঞ মুস্তাফা মাহমুদ হোসাইন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী এবং ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রযুক্তিবিদ ও প্রকৌশলী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন বিএনপির আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক কমিটির বিশেষ সহকারী ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন।
অনুষ্ঠানে আইসিসি কমিউনিকেশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও আইএসপিএবি’র সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি সাইফুল ইসলাম সিদ্দিক বলেন, ‘আমাদের তিন হাজার লাইসেন্স দিয়েছে। এর বাইরেও তিন হাজার লাইসেন্স আছে। সবমিলিয়ে ছয় হাজার অপারেটর। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট আমরাই প্রান্তিক পর্যায়ে পৌঁছে দিয়েছি। কিন্তু আমরাই আনফেয়ার মার্কেট কম্পিটিশনের মুখোমুখি হচ্ছি। এটাই আইএসপিএ শিল্পের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।’
তিনি বলেন, ‘দুই বছর আগেই সম্পূর্ণ আইএসপি লাইসেন্সকে ঢেলে সাজানো হলো। চারটি লেয়ার করা হলো। এখন আমরা আবার শুনতে পাচ্ছি, লাইসেন্স রিভিউয়ের চেষ্টা করছে। আমরা মাত্র দুই বছর আগে লাইসেন্স পেয়ে বিনিয়োগ করেছি। প্রান্তিক পর্যায়ে কেউ বাবার জমি বিক্রি করে, কেউ বউয়ের গয়না বিক্রি করে বিনিয়োগ করেছেন।’

আলোচনা সভায় আইএসপিএবি’র সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি সাইফুল ইসলাম সিদ্দিকসহ অতিথিরা। ছবি সারাবাংলা
তিনি আরও বলেন, ‘ছোট ছোট উদ্যোক্তা; তাদের ২০০ থেকে ৫০০ লাইন। একটা গ্রামকে তারা ডিজিটালাইজড করেছে। তারা এনটিটিএন থেকে সার্ভিস নিয়ে প্রত্যন্ত এলাকায় কাজ করছে। কিন্তু সব জায়গায় এনটিটিএন পাওয়া যায় না।’
আইএসপিএবি’র সাবেক এই সিনিয়র সহ-সভাপতি বলেন, ‘৫০০ টাকায় যে ইন্টারনেট দিচ্ছি, সেটা বিশ্বে সবচেয়ে কম। তারা (এনটিটিএন) বিভিন্ন লেয়ারে প্রাইস নির্ধারণ করে রেখেছে। তারা দাম কমায় না। আমরা দাম কমাব কিভাবে? আমরা সর্বনিম্ন দামে ইন্টারনেট সেবা দিচ্ছি। আমাদের তার কাটা পড়ে, ২৪ ঘণ্টা পুনঃবিনিয়োগ হতে থাকে। আমাদের বিনিয়োগের যাতে নিরাপত্তা দেওয়া হয়, এই সেক্টরে যাতে যখন-তখন পলিসি চেঞ্জ করা না হয়- সেটিই অনুরোধ।’
এদিকে অনুষ্ঠানে দেশের টেলিযোগাযোগ খাতের সবাইকে সতর্ক করেছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী এবং ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রযুক্তিবিদ ও প্রকৌশলী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। মান উন্নয়ন না করলে এই খাতে কেউ টিকতে পারবেন না বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।
এ ছাড়া, অনুষ্ঠানে কোনো ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষা করে আইসিটি ও টেলিকম খাতের সংস্কার হবেনা বলে মন্তব্য করেন বিএনপির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির বিশেষ সহকারী ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন- বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মোহাম্মদ ইমাদুর রহমান, টেলি যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ মাহতাব উদ্দিন, আইআইজিএবি’র সভাপতি আমিনুল হাকিম, বিডি জবস’র সিইও ও বেসিসের সাবেক সভাপতি ফাহিম মাশরুর, এবি পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) হেলাল উদ্দিন, বেসিসের অ্যাসোসিয়েট কমিটির সভাপতি রাফেল কবির, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের সাবেক পরিচালক খালেদ আবু নাসির, গ্রামীণফোন লিমিটেডের সিনিয়র ডিরেক্টর করপোরেট অ্যাফেয়ার্স হোসেন সাদাত প্রমুখ।