Sunday 09 Mar 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সরকারকে ইসির চিঠি
এনআইডি সরিয়ে নিলে সাংবিধানিক ক্ষমতা খর্ব হবে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৯ মার্চ ২০২৫ ২৩:০৮ | আপডেট: ৯ মার্চ ২০২৫ ২৩:১০

নির্বাচন কমিশন। ছবি কোলাজ: সারাবাংলা

ঢাকা: জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন (এনআইডি) কার্যক্রম ইসি থেকে সরিয়ে নিলে নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক ক্ষমতা খর্ব হবে- এমনটা জানিয়ে সরকারকে চিঠি দিয়েছে কমিশন।

জানা গেছে, জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের কাছে চলমান রাখা প্রসঙ্গে ‘নির্বাচন কমিশনের অভিমত ও সুপারিশ প্রেরণ’ শীর্ষক চিঠিটি রোববার (৯ মার্চ) মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে পাঠিয়েছেন ইসি সচিব আখতার আহমেদ।

চিঠিতে এনআইডি কর্মকর্তাদের দীর্ঘ ১৭ বছরের অভিজ্ঞতার উল্লেখ করে বলা হয়েছে, এনআইডি কার্যক্রম ইসি থেকে সরিয়ে নিলে নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক ক্ষমতা খর্ব হবে। এ ছাড়া, ভোটার তালিকা প্রস্তুত ও নির্বাচন ব্যবস্থাপনা বাধাগ্রস্ত হবে। তাই এ কার্যক্রমটি ইসির অধীনেই রাখা প্রয়োজন।

চিঠির অনুলিপি অন্তর্বর্তী সরকারের মুখ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব ও লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক সচিবকেও দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ২০০৮ সালে ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রস্তুত করে ড. এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন তৎকালীন কমিশন। যার ভিত্তিতে নাগরিকদের দেওয়া হয় জাতীয় পরিচয়পত্র। এরপর ২০১১ সালে এসে একটি সমৃদ্ধ তথ্যভাণ্ডার গড়ে তোলে কমিশন। বর্তমানে ইসির এ সার্ভারে সাড়ে ১২ কোটির মতো দেশের নাগরিক এবং ১১ লাখ রোহিঙ্গার তথ্য রয়েছে।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, কোনো রোহিঙ্গা বা বিদেশি যাতে ভোটার তালিকায় সম্পৃক্ত না হতে পারে এবং এনআইডি সংগ্রহ করতে না পারে, এজন্য নির্বাচন কমিশন কয়েক ধাপের নিরাপত্তা ব্যবস্থা তৈরি করেছে। এতে সহজেই ভিনদেশি চিহ্নিত করা যায়। ফলে একদিকে যেমন ভোটার তলিকার স্বচ্ছতা নিশ্চিত হয়।

বিজ্ঞাপন

উল্লেখ্য, বিগত আওয়ামী লীগ সরকার ইসির সঙ্গে কোনো আলোচনা ছাড়াই এনআইডি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে নেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করে, আইন বর্হিভূতভাবে। এরপর ২০২৩ সালে এসে নতুন একটি আইনও করে। কিন্তু রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর সে উদ্যোগ থেমে যায়। পরবর্তী সময়ে কর্মকর্তাদের দাবির মুখে এএমএম নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বাধীন কমিশন সরকারকে সে উদ্যোগ বাতিল করার সুপারিশ করলে সরকার তা মেনে নেয়। কিন্তু তার কিছুদিন পরই আবার সংস্কার কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে একটি পৃথক কমিশন গঠন করে এনআইডি নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। যেই কমিশনের অধীনে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন থাকবে।

এ অবস্থায় সম্প্রতি ইসি কর্মকর্তারা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তারা কর্মবিরতিতে যাওয়ার আল্টিমেটাম দিলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন জোরালো মতামত দেওয়ার আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, ‘এনআইডিটা ভোটার তালিকার বাই প্রোডাক্ট। এটা তো আগে ছিল না। আগে ভোটার কার্ড ছিল। আস্তে আস্তে যখন ডেভেলপ হলো তখন না এটা হলো। ১৭ বছর ধরে এখানে শ্রম, ঘাম দিয়েছে এখানকার লোকজন। এরাই তো ডেভেলপ করে এ পর্যন্ত এনেছেন। নিজেদের কাজের অতিরিক্ত কাজ হিসেবে এটা করেছেন। একটা নেটওয়ার্ক সারাদেশে ডেভেলপ হয়েছে, এক্সপার্ট ডেভেলপ হয়েছে। সার্বিক এ বিষয়গুলো নিশ্চয় সরকার বিবেচনায় নেবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’

বাংলাদেশ ইলেকশন কমিশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক ও উপ-সচিব মোহাম্মদ মনির হোসেন বলেন, ‘এর আগেও একাধিকবার চেষ্টা হয়েছিল, মাঝে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নেওয়ার চেষ্টা হয়। এখন আবার নতুন কমিশন তৈরি করে তাতে নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘এরই মধ্যে আমরা অ্যাসোসিয়েশেনের পক্ষ থেকে কর্মসূচি ঘোষণা করেছি। আমরা কমিশনকে জানিয়েছি, সময় দিয়েছি। আগামী বুধবারের মধ্যে দৃশ্যমান অগ্রগতি প্রত্যাশা করছি। তা না হলে ১৩ মার্চ ইসি সচিবালয়সহ সারাদেশে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ১১ থেকে ১টা পর্যন্ত মানবন্ধন করব। তারপরও দাবি পূরণ না হলে কর্মবিরতিসহ আরও কঠোর কর্মসূচিতে যাব।’

সারাবাংলা/এনএল/পিটিএম

ইসি এনআইডি

বিজ্ঞাপন

এখনই ওয়ানডে ছাড়ছেন না রোহিত
১০ মার্চ ২০২৫ ০১:৫৬

আরো

সম্পর্কিত খবর