অগণতান্ত্রিক ‘দল নিবন্ধন বিধিমালা’ প্রত্যাহার করে নতুন প্রজ্ঞাপন জারির দাবি বাসদের
১১ মার্চ ২০২৫ ১৫:১৮ | আপডেট: ১১ মার্চ ২০২৫ ১৭:২৮
ঢাকা: নির্বাচন কমিশন কর্তৃক পূর্বের অগণতান্ত্রিক ‘দল নিবন্ধন বিধিমালা’ অক্ষুণ্ণ রেখে নিবন্ধনের বিজ্ঞপ্তি জারির প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী)। জারি করা প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার করে সংস্কার কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে নিবন্ধনের নতুন প্রজ্ঞাপন জারির দাবি জানিয়েছেন দলের নেতারা।
মঙ্গলবার (১১ মার্চ) গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় নির্বাহী ফোরামের সমন্বয়ক কমরেড মাসুদ রানা এ কথা বলেন।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, “দীর্ঘদিন থেকে রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের ক্ষেত্রে পূর্বের অগণতান্ত্রিক বিধি ও শর্ত বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছি।এ আইন অনুসারে নিবন্ধন পেতে একটি দলকে ২১টি জেলায় কার্যালয় এবং ১০০টি উপজেলা বা থানায় কার্যালয় ও প্রতিটিতে ২০০ জন ভোটারের সমর্থনের প্রমাণ দেখাতে হয়। আমরা মনে করি, রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের ক্ষেত্রে এ ধরণের শর্ত আরোপ বহুদলীয় গণতন্ত্র, জনগণের রাজনৈতিক দল গড়ে তোলার স্বাধীনতা, মত প্রকাশ ও সংগঠিত হওয়ার অধিকারকে সংকুচিত করেছে, যা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার কাজে লাগিয়েছে। একটা বহুদলীয় গণতন্ত্রের দেশে নিবন্ধনের প্রয়োজনীয়তা ততটুকুই, যতটুকু রাষ্ট্রীয়ভাবে একটি দলকে নথিবদ্ধ করার জন্য প্রয়োজন হয়, রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন প্রয়োজনে আলোচনার জন্য। আমাদের পার্শ্ববর্তী ভারত, শ্রীলঙ্কাসহ বিভিন্ন দেশে রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের জন্য কিছু নিয়ম মেনে আবেদন করতে হয়, কিন্তু কোথাও বাংলাদেশের মতো একটা দলকে ২০ হাজার সমর্থক, ২১টি জেলায় দলীয় কার্যালয় দেখাতে হয় না। অথচ নিবন্ধনের শর্তে দলের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের পক্ষে কোন তথ্য প্রমাণ চাওয়া হয়নি, যেটা ছিল সবচেয়ে জরুরী।”
তিনি আরো বলেন,”আমরা দেখেছি, বিদ্যমান নিবন্ধন আইনকে হাতিয়ার করে বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার মাঠে ক্রিয়াশীল সরকারবিরোধী বেশ কিছু রাজনৈতিক দলকে নিবন্ধন দেয়নি, অন্যদিকে ভোট ডাকাতির নির্বাচন করার জন্য সরকারি অর্থে রাতারাতি গড়ে তোলা ভূঁইফোড় অনেক দলকে নিবন্ধন দিয়েছে। গণঅভ্যুত্থানের পর এই ধরনের আইন বাতিল হবে -এটাই স্বাভাবিক। প্রায় সকল রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তি এর পক্ষে মত দিয়েছেন এবং নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন সেটা গ্রহণ করে দল নিবন্ধনের নতুন শর্ত প্রস্তাবও করেছেন। অথচ নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী সে নিবন্ধন আইন সংস্কার না করেই, পূর্বের আইনেই নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে- যা নিন্দনীয়। রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত নিয়ে, সংস্কার কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে নিবন্ধন নীতিমালা সংস্কার করে নিবন্ধনের বিজ্ঞপ্তি জারি করা উচিত ছিল। তা না করে পুরনো নিয়ম বহাল রাখা গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার পরিপন্থী। নির্বাচন অনুষ্ঠানে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে দল নিবন্ধনের এই বিজ্ঞপ্তি নিঃসন্দেহে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে, যা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের একটি বড় ব্যর্থতা হিসেবে পরিগণিত হবে।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/আরএস