ঢাকা-পাইতিখলা বাস চলাচলে জনমনে স্বস্তি, ঈর্ষা কুচক্রি মহলে
১২ মার্চ ২০২৫ ২১:০০ | আপডেট: ১২ মার্চ ২০২৫ ২১:৪৭
ঢাকা: গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী সরকার পতনের পর প্রথমবারের মতো রাজধানী ঢাকা থেকে বরিশালের মুলাদী উপজেলার পাইতিখলায় সরাসরি বাস সার্ভিস শুরু হয়েছে। বিআরটিসি বাসের মাধ্যমে শুরু হয়েছে এ পথ চলা। ফলে দীর্ঘদিনের কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন পূরণ হওয়ায় স্বস্তি মিলেছে জনমনে। তবে সেই স্বস্তি সইছে না কুচক্রি মহলে। মানুষ ঘরের সামনে থেকে যেন সহজেই ঢাকা যেতে যেন না পারে সে জন্য প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগের কুচক্রি মহল।
উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে এলাকাবাসী বলেন, ‘ঢাকা থেকে পাইতিখলা পর্যন্ত বিআরটিসি বাস চলাচল শুরু হওয়ায় খুব ভালো লাগছে। আমরা এখন ঘরের সামনে থেকেই ঢাকা যেতে পারব। এখন আর লঞ্চে দীর্ঘ সময় নষ্ট হবে না এবং অনেক দূর ঘুরে ঢাকা যেতে হবে না।’
তদন্তে জানা যায়, ঢাকা থেকে পাইতিখলা পর্যন্ত যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা ছিল আড়িয়াল খাঁ নদীর উপরে নাজিরপুর-রামারপোল সংযোগ সেতু। দীর্ঘ ১১ বছরের বেশি সময় ধরে নির্মাণ করা হয় এই সেতুটি। বর্তমানে সেতুটি দিয়ে চলাচল করছে ট্রাক, বাস ও প্রাইভেটকারসহ অন্যান্য ভারী যানবাহন। কিন্তু সাধারণ মানুষের চাহিদা অনুযায়ী একটি বিআরটিসি বাস চলাচল শুরু হওয়ায় পদে পদে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির চেষ্টা করছেন আওয়ামী লীগের দোসর। ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগের শুভাকাঙ্ক্ষি সাবেক অতিরিক্ত সচিব মো. ইমদাদুল হকের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ। আওয়ামী লীগের হয়েও এখনো দফতরে প্রভাব খাটিয়ে বেড়ানোর অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
গত ডিসেম্বরে এই রুটে বাস চলাচল শুরু করা হলে চারদিনের মাথায় বিআরটিসি চেয়ারম্যান বরাবর একটি চিঠিতে ঢাকা থেকে পাইতিখলা বিআরটিসির রুট পারমিট বাতিলের আবেদন জানান ইমদাদুল হক। এ বিষয়ে গত ২৪ ডিসেম্বর বিআরটিসির চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম বলেন, ‘তিনি একটি আবেদন দিয়েছেন, যেহেতু ইমদাদুল হক সাবেক অতিরিক্ত সচিব ছিলেন তাই তার আবেদনটি গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি রাস্তার সমস্যার কথা বলেছেন। আমরা তদন্ত করে দেখব, যদি রাস্তা ঠিক থাকে তাহলে বিআরটিসি বাস এই রুটে চলবেই। কারও কথায় বাস বন্ধ হবে না।’
এরপর চার দফা তদন্ত করে বিআরটিসি দফতর। এমনকি বিআরটিসি বাস সার্ভিস চালুর জন্য এলাকাবাসীর পক্ষ থেকেও একটি আবেদনপত্র দেওয়া হয়। ফলে ইমদাদুল হক ব্যক্তিগত স্বার্থে জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় তাজুল ইসলাম এই রুটে আবারো (১০ ফেব্রুয়ারি) বিআরটিসি বাস চলাচলে অনুমতি দেন।
এদিকে, সকল বাধা পেরিয়ে গতকাল মঙ্গলবার (১১ মার্চ) থেকে ঢাকা-পাইতিখলা রুটে বিআরটিসি বাস চলাচল শুরু হয়। কিন্তু আবারো বিআরটিসি বাস চলাচল বন্ধে বিআরটিসি‘র চেয়ারম্যানকে ফোন দিয়ে যাচ্ছেন ইমদাদুল হক।
রাস্তার বিষয়ে মুলাদী উপজেলার প্রকৌশলী তানজিলুর রহমান বলেন, ‘সব ধরনের গাড়ি চলাচলে সম্পূর্ণ উপযুক্ত আছে রাস্তা এবং সেতুটি। গাড়ি চলাচলে আমাদের পক্ষ থেকে কোনো বাধা নাই। আমরাও চাই রাস্তা ও সেতুটি দিয়ে গাড়ি চলুক। কেউ যদি গাড়ি চলাচলে বাধা দিতে চায় সেটা তার সম্পূর্ণ ব্যক্তিস্বার্থ। আমরা জনগণের পক্ষে কাজ করে যাচ্ছি।’
উল্লেখ্য, জনতা ব্যাংকের ২৯৭ কোটি টাকা আত্মসাৎ এর ঘটানায় ২৩ জনের বিরুদ্ধে করা দুদকের মামলার আসামি মো. ইমদাদুল হক। এই ঘটনায় চলতি মাসের ৬ মার্চ ইমদাদুল হকসহ ২৩ জনকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।
সারাবাংলা/এমএইচ/এইচআই