জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে শক্তিশালী সংবিধান প্রণয়নের আহ্বান সালাহউদ্দিনের
১২ মার্চ ২০২৫ ২১:২২ | আপডেট: ১২ মার্চ ২০২৫ ২৩:২৪
বুধবার রাজধানীর বারিধারায় জামিয়া মাদানিয়া মাদ্রাসায় জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ আয়োজিত এক দোয়া ও ইফতার মাহফিলে বক্তব্য রাখেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ
ঢাকা: জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে একটি শক্তিশালী সংবিধান প্রণয়নে সকল রাজনীতিক দলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।
বুধবার (১২ মার্চ) সন্ধ্যায় রাজধানীর বারিধারায় জামিয়া মাদানিয়া মাদ্রাসায় জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ আয়োজিত এক দোয়া ও ইফতার মাহফিলে তিনি এ আহ্বান জানান।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, যারা গণপরিষদের মাধ্যমে নতুন সংবিধান চান, আমি তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, আপনারা সংস্কার কমিশনে ব্যাপক সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। আপনাদের একজন প্রতিনিধি সেই সংস্কার কমিশনে দায়িত্বও পালন করেছে। আমরাও সংস্কার প্রস্তাবনা কমিশনে দিয়েছি। আসুন, সবাই মিলে একটি শক্তিশালী সংসদ গঠন করি, যেখানে সকল সংস্কার প্রস্তাবনা নিয়ে আলাপ হবে। জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে একটি শক্তিশালী সংবিধান প্রণয়ন করি। সেই সংবিধানকে আপনারা দরকার হলে নতুন সংবিধান হিসেবে অভিহত করুন, আমাদের তাতে আপত্তি নাই। কিন্তু যে নামই রাখুন না কেনো, আমাদের সবাইকে সম্প্রীতি বজায় রেখে এই বাংলাদেশে চলতে হবে।
আলেম সমাজকে উদ্দেশ্য করে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ২০১৩ সালের ৫ মে ফ্যাসিস্ট হাসিনা যে অত্যাচার চালিয়েছিলো এ দেশের আলেম সমাজের উপরে, সেদিন আমি নিজেও কারাগারে ছিলাম। কারাগারে বসেই আমি সেদিন টেলিভিশনে দেখেছিলাম। ইতিহাসে এর চেয়ে বড় গণহত্যাকাণ্ড কখনো এ পৃথিবীতে কেউ প্রত্যক্ষ করেনি এবং এতো বড় ঘটনার পর এরকম মিথ্যাচারও কেউ প্রত্যক্ষ করেনি। যাই হোক, জালেমের পরিসমাপ্তি হয়েছে। এই দেশের ইতিহাসে, এ দেশের আলেম সমাজ তাদের রক্ত দিয়ে বিজয় অর্জন করেছে। আমরা এর স্বাক্ষী।
দেশ এখনও ফ্যাসিবাদ মুক্ত হয়নি- এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, এই দেশ ফ্যাসিস্টমুক্ত হয়েছে। কিন্তু ফ্যাসিবাদি কালচার, ফ্যাসিবাদ প্রচারণা বন্ধ হয় নাই। আমরা যদি ঐক্য থাকি এবং এই ফ্যাসিবাদ বিরোধী ঐক্যকে জাতীয় শক্তিতে রূপান্তর করতে পারি তাহলে আমাদের দেশ এগিয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, এ দেশের শতকরা ৯২ভাগ মুসলমান। দেশের মুসলিম সমাজই সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত ছিলো এই হাসিনার আমলে। কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে, ইসলামের শিক্ষা অনুযায়ী যারা অমুসলিম, তাদের সাথে নিয়ে আমাদের একসাথে চলতে হবে। প্রতিটি ধর্মের মানুষকে মিলেমিশে চলতে হবে। আমরা যেনো তাদেরকে সংখ্যালঘু না বলি। কোনো শক্তি যেনো সাম্প্রয়ায়িক সম্প্রীতিতে বিষ রোপণ করতে না পারে। সংবিধান অনুযায়ী যেনো তাদেরকে নাগরিক হিসেবেই চিহ্নিত করি। সবাই যেন সিটিজেন হিসেবে বসবাস করতে পারি। সেরকম একটি আবহ পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। এটাই ইসলামের শিক্ষা। সেটা আপনাদের নেতৃত্বেই করতে হবে। যাতে কোনো সিটিজেন শুধুমাত্র সংখ্যালঘুর জন্য নির্যাতিত না হয়। সবাই আমরা সমান। সংখ্যালঘুদের এই নিশ্চিত করতে হবে যে, যে যে যার যার ধর্ম অনুযায়ী তাদের সংস্কৃতি পালন করতে পারবে। সেই নিশ্চিতের জন্য আমরা সংবিধানে গণতান্ত্রিক সংস্কার নিয়ে আসবো।
জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সালাহউদ্দিন বলেন, গণঅভ্যুত্থানে যারা শহীদ হয়েছেন, যে সমস্ত বন্ধুরা পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন, তাদের যে প্রত্যাশা, যে আকাংক্ষা, সে আকাঙ্ক্ষাকে অবশ্যই মর্যাদা দিতে হবে।
সারাবাংলা/এফএন/আরএস