যুক্তরাষ্ট্রে দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রদূতকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা
১৫ মার্চ ২০২৫ ১৪:৫৫ | আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২৫ ১৫:২১
দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রদূত ইব্রাহিম রসুলকে এখন থেকে আর স্বাগত জানানো হবে না বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী মর্কো রুবিও।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে মার্কো রুবিও বলেন, ‘ইব্রাহিম রসুল একজন ‘জাতি-বিদ্বেষী’ রাজনীতিবিদ, যিনি যুক্তরাষ্ট্র ও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ঘৃণা করেন। তার সঙ্গে আমাদের আলোচনার কিছু নেই, এখন থেকে তাকে পারসোনা নন গ্রাটা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।’
যুক্তরাষ্ট্রে বিদেশি রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কারের ঘটনা খুবই অস্বাভাবিক। কখনো-কখনো নিম্ন পদ-মর্যাদার কূটনীতিকদের ‘পারসোনা নন গ্রাটা’ ঘোষণা করা হয়। এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রদূত হিসেবে ইব্রাহিম রসূলের ভূমিকা শেষ হলো।
বিগত ১৩ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে নিজের পরিচয়পত্র দেন ইব্রাহিম রসুল। যুক্তরাষ্ট্রে দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রদূত হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি। এর আগে ২০১০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত একই পদে দায়িত্ব পালন করেন দক্ষিণ আফ্রিকার এই রাজনীতিবিদ।
এদিকে, দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাপোসার অফিস থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এই বহিষ্কারের ঘটনা দুঃখজনক।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পারস্পরিক লাভজনক সম্পর্ক গড়তে দক্ষিণ আফ্রিকা অঙ্গীকারাবদ্ধ।’
এর আগে শুক্রবার (১৪ মার্চ) জোহানেসবার্গের একটি ইনস্টিটিউটের ওয়েবিনারে অংশ নিয়ে ইব্রাহিম রসুল বলেন, ‘ক্ষমতার বিরুদ্ধে, দক্ষিণ আফ্রিকায় যারা ক্ষমতায় আছেন তাদের বিরুদ্ধে শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদীদের আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।’
উল্লেখ্য, শৈশবে যুক্তরাষ্ট্রের কেপ টাউনের একটি গ্রাম থেকে ইব্রাহিম রসুলের পরিবারকে উচ্ছেদ করে সেখানকার শ্বেতাঙ্গরা। পরবর্তীতে তিনি বর্ণবাদবিরোধী প্রচারে নামেন। দেশটির বর্ণবাদবিরোধী নেতা নেলসন ম্যান্ডেলা তাকে ‘বন্ধু’ বলে আখ্যায়িত করেছিলেন। পরে ম্যান্ডেলার আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসে যোগ দেন ইব্রাহিম রসুল।
সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকার কৃষ্ণাঙ্গ নেতৃত্বাধীন সরকারের সমালোচনা করতে দেখা গেছে ট্রাম্প ও তার মিত্র ইলন মাস্ককে। যদিও দক্ষিণ আফ্রিকায়ই বেড়ে উঠেছেন ইলন মাস্ক। তাদের দাবি, দেশটিতে নতুন ভূমি আইনে শ্বেতাঙ্গদের বিরুদ্ধে বৈষম্য করা হয়েছে।
ফেব্রুয়ারিতে দক্ষিণ আফ্রিকায় মার্কিন সহায়তা বন্ধ করার ঘোষণা দেন ট্রাম্প।
শ্বেতাঙ্গদের কাছ থেকে ভূমি কেড়ে নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করে গত সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকার কৃষকদের যুক্তরাষ্ট্রে স্বাগত জানানো হচ্ছে।’
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ট্রুথে ট্রাম্প বলেন, ‘যদি কোনো কৃষক নিরাপত্তার কারণে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে পালিয়ে আসতে চান, তাকে যুক্তরাষ্ট্রে স্বাগত জানানো হচ্ছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাকে মার্কিন নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।’
সারাবাংলা/এসডব্লিউ