যশোর: কবি ও দার্শনিক ফরহাদ মাজহার বিএনপির সমালোচনা করে বলেছেন, দলটির অনেক নেতা ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয়নি। তারা নিশ্চিতভাবে বঙ্গোপসাগরে ডুববে।
শনিবার (১৫ মার্চ) যশোর শিল্পকলা একাডেমিতে জুলাই বিপ্লবোত্তর বাংলাদেশে তরুণদের করণীয় শীর্ষক এক আলোচনা সভায় মুখ্য আলোচক হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন। যশোরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার জনগণের রক্তের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকার। বিএনপি যে মডেলের নির্বাচন চাচ্ছে তার সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোনো পার্থক্য নেই, তাহলে এত রক্ত ঝরানোর দরকার ছিল না। এভাবে চলতে থাকলে আবারো ফ্যাসিবাদ ফিরে আসবে।
বর্তমানে বিদ্যমান সংবিধানে জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটেনি উল্লেখ করে ফরহাদ মাজহার বলেন, জনগণের জন্য গঠনতন্ত্র চাই, সে জন্যে গণপরিষদ নির্বাচন চাই।
তিনি আরও বলেন, ৭২ এ যে সরকার গঠিত হয়েছিল তা ছিল পাকিস্তান সংবিধানের সরকার। কারণ সে সরকার ও সংবিধান বাংলাদেশের গণপরিষদের মাধ্যমে গঠিত হয়নি। এই সংবিধানে মানুষের চাওয়া পাওয়ার প্রতিফলন ঘটেনি। যে কারণে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল দেশ স্বাধীনের পর তা ভারতের হাতে তুলে দিতে পাক-ভারত যুদ্ধের রূপ দেওয়া হয়েছিল। আমাদের মুক্তিফৌজের সর্বাধিনায়ক জেনারেল ওসমানির কাছে আত্মসমার্পণ করানো হয়নি এবং সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতাকে সংযুক্ত করা হয়েছে। যে ৩ নীতির ভিত্তিতে স্বাধীনতা যুদ্ধ হয়েছিল যুদ্ধের পর তা বাদ দিয়ে চাপিয়ে দেওয়া আধিপত্যবাদকে স্থান দেওয়া হয়েছিল বলেও তিনি দাবি করেন।
আলোচনা সভায় মুখ্য আলোচক বিএনপির তড়িঘড়ি নির্বাচন চাওয়া, ছাত্র-জনতা নতুন দলের কী কী ভুল রয়েছে, সরকারের সঙ্গে সেনাবাহিনীর দূরত্ব না কমানোর সরকারি উদ্যোগ না নেওয়া, ছাত্ররা সেনাবাহিনীর
বিপ্লবের সময়ের ভূমিকার প্রশংসা না করা, বিপ্লবী সরকার গঠন না করা, পুরাতন ও ফ্যাসিবাদী সরকারের রাষ্ট্রপতি এবং সেই সংবিধানের অধীনে শপথ নেওয়াসহ নানা ভুল নিয়ে আলোচনা করেন।
তিনি বলেন, বিএনপির ভুলে বেগম খালেদা জিয়াকে এত নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে।
তিনি জুলাই বিপ্লবের ভিত্তিতে খালেদা জিয়ার অবদান এবং সেনাবাহিনীর অবদান স্বীকার করে বলেন, এখনো ভারতীয় শক্তি এই বিপ্লবকে নস্যাৎ করার চেষ্টা করছে এবং এই তরুণ সমাজ যদি ভুল করে তবে ফ্যাসিবাদ আবার ফিরে আসবে বলেও হুঁশিয়ার করেন।