পুলিশের ডিসির বিরুদ্ধে ঘুষ বাণিজ্য ও বাদীকে মারধরের অভিযোগ, পরে ওএসডি
১৫ মার্চ ২০২৫ ২১:১৬ | আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২৫ ২২:৫৭
রংপুর: ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগে থানায় মামলা করতে গেলে বাদীকে মারধর ও অস্ত্র বের করে গুলি করতে উদ্যত হওয়ার ঘটনায় রংপুর মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার শিবলী কায়সারকে প্রত্যাহার করে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে সংযুক্ত করা হয়েছে।
শনিবার (১৫ মার্চ) রাতে ডিআইজি প্রশাসন কাজী ফজলুল করিমের সই করা এক আদেশে এই নির্দেশ দেওয়া হয়। মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (প্রশাসন) হাবিবুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে শনিবার সকালে তাকে ‘অপরাধ’ থেকে প্রত্যাহার করে ‘ক্রাইম অ্যান্ড অপসে’ সংযুক্ত করা হয়েছিল।
প্রত্যাহার হওয়া পুলিশ কর্মকর্তা শিবলী কায়সারের বিরুদ্ধে ঘুষ বাণিজ্য এবং বৃহস্পতিবার বিকেলে রংপুর মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানায় মামলা করতে আসা পলাশ হাসান নামে এক বাদীকে মারধর ও কর্তব্যরত কনস্টেবলের রাইফেল কেড়ে নিয়ে ওই ব্যক্তিকে বেধড়ক পিটুনির অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় একটি অভ্যন্তরীণ সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেলে মহানগর কোতোয়ালি থানায় রংপুর মহানগর পুলিশের একজন উপকমিশনারের বিরুদ্ধে ঘুষ–বাণিজ্যের অভিযোগে থানায় মামলা করতে গিয়ে মারধরের শিকার হন এক ব্যবসায়ীর প্রতিনিধি। ওই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কর্তব্যরত কনস্টেবলের রাইফেল কেড়ে নিয়ে ওই ব্যবসায়ীর প্রতিনিধিকে বেধড়ক পিটুনির অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার পর থানা-পুলিশ চাঁদাবাজির অভিযোগে ভুক্তভোগী ব্যক্তির একটি মামলা নিলেও আসামির তালিকায় ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে রাখা হয়নি।
মহানগর পুলিশ কমিশনার মজিদ আলী জানিয়েছিলেন ওই পুলিশ কর্মকর্তার বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার অভিযোগে গত ১৩ নভেম্বর রংপুরের হারাগাছের ব্যবসায়ী লিপি খান ভরসার বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়। মামলার পর রংপুর মেট্রোপলিটন চেম্বারের পরিচালক অমিত বণিকের মাধ্যমে লিপি খানের কাছে ১০ লাখ টাকা ঘুষ দাবির অভিযোগ ওঠে নগর পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (অপরাধ) শিবলী কায়সারের বিরুদ্ধে।
এ নিয়ে ১১ মার্চ পুলিশ সদর দফতরে শিবলী কায়সারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন লিপি খান। অভিযোগের সঙ্গে তিনি অমিত বণিকের সঙ্গে ঘুষ দাবির কথোপকথনের কয়েকটি অডিও জমা দেন। এরপর বৃহস্পতিবার বিকেলে অমিত বণিককে থানায় ডেকে নেয় কোতোয়ালি থানা-পুলিশ।
এদিকে সেদিন বিকেল ৪টার দিকে লিপি খানের পক্ষে থানায় মামলা করতে যান তার প্রতিনিধি পলাশ হাসান (২৭)। বিকেল ৫টার দিকে থানায় যান উপপুলিশ কমিশনার শিবলী কায়সার। তখন থানায় আরেক উপপুলিশ কমিশনার (অপরাধ) হাবিবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, শিবলী কায়সার থানায় ঢুকেই মামলার বাদী পলাশ হাসানের ওপর চড়াও হন এবং তাকে বেধড়ক মারধর করেন। এক পর্যায়ে কর্তব্যরত কনস্টেবলের রাইফেল কেড়ে নিয়ে পলাশকে গুলি করতে উদ্যত হন। এদিকে অভিযোগের বিষয়ে পুলিশ কর্মকর্তা শিবলী কায়সার বলেন, ‘আমাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।’
ব্যবসায়ী লিপি খানের অভিযোগ, ‘আমার ব্যবস্থাপক পলাশকে গতকাল বিকেলে শিবলী কায়সার, অমিত বণিক ও কামরুল ভরসার বিরুদ্ধে ঘুষ-বাণিজ্যের মামলা করতে থানায় পাঠাই। কিন্তু পুলিশ কর্মকর্তা শিবলী কায়সারসহ অন্য দু’জনকে মামলা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।’
সারাবাংলা/পিটিএম