ঢাকা: ১৯৭১ সালের ১৭ মার্চ। এদিন শেখ মুজিবুর রহমান সকাল ১০টায় প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে দ্বিতীয় দফা বৈঠকে মিলিত হন। কড়া সামরিক প্রহরার মধ্যে প্রেসিডেন্ট ভবনে এই বৈঠক শুরু হয়, যা চলে ঘণ্টাব্যাপী।
প্রথম দিনের মতোই আলোচনা শেষে অপেক্ষমাণ দেশি-বিদেশি সাংবাদিকদের শেখ মুজিব বলেন, ‘আলোচনা এখনো শেষ হয়ে যায়নি। তবে আলোচনার পরবর্তী সময়ও ঠিক হয়নি। আলোচনা চলছে।’ লক্ষ্য অর্জন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা। জনগণকে ত্যাগ স্বীকারের জন্য প্রস্তুত থাকার আহ্বান।
এদিকে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান জুলফিকার আলী ভুট্টোকে ঢাকায় আসার জন্য আমন্ত্রণ জানান।
এদিন ছিল শেখ মুজিবর রহমানের ৫২তম জন্মদিন। তিনি তার বাসভবনে পৌঁছলে দেশি-বিদেশি সাংবাদিকদের অনুরোধে তাদের সঙ্গে এক ঘরোয়া বৈঠকে মিলিত হন। ৫২তম জন্মদিনে তার কামনা কী? জনৈক বিদেশি সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে শেখ মুজিব বলেন, ‘জনগণের সার্বিক মুক্তি।’
অসহযোগ আন্দোলনের ১৬তম দিবসে স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য ব্যাপক প্রস্তুতির অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ময়দানসহ বিভিন্ন এলাকায় কুচকাওয়াজ ও রাইফেল চালানোর প্রশিক্ষণ শুরু করেন।
২৩ মার্চ পাকিস্তান দিবসকে ‘প্রতিরোধ দিবস’ হিসেবে পালনের জন্য স্বধীন বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ছাত্রসংগ্রাম কর্মসূচি ঘোষণা করে। এ উপলক্ষ্যে ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ নেতারা ওইদিন সকাল ৬ টায় সরকারি-বেসরকারি অফিস, আদালত, শিক্ষা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং সকল প্রকার যানবাহনে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন, প্রভাতফেরী, শহিদদের মাজার জিয়ারত, শহিদ মিনারে পুষ্পমাল্য অর্পণ, জয় বাংলা বাহিনীর কুচকাওয়াজ এবং বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বটতলায় ছাত্র-জনসভার কর্মসূচি ঘোষণা করে।