টাঙ্গাইল: দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে টাঙ্গাইলে যমুনা নদীর ওপর নির্মিত যমুনা সেতুর ৩০০ মিটার উজানে দেশের দীর্ঘতম নবনির্মিত যমুনা রেলওয়ে সেতুটির উদ্বোধন করা হয়েছে। উদ্বোধনের দিনে মূল সেতুতে প্রবেশ করে ১২০ কিলোমিটার গতিতে মাত্র ৩ মিনিটে ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার এই সেতু দিয়ে যমুনা নদী পারি দিয়ে ট্রেন।
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) সকাল ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে জেলার ভূঞাপুর প্রান্তে যমুনা সেতু পূর্ব ইব্রাহিমাবাদ রেল স্টেশনে সেতুটির আনুষ্ঠানিকতা উদ্বোধন করা হয়।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে যমুনা রেল সেতুর উদ্বোধন করেন অতিথি ও রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম।
বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত মি. সাইদা শিনিচি, দক্ষিণ এশিয়া বিভাগ (জাইয়া) মহাপরিচালক মি. ইতো তেরুয়ুকি। অনুষ্ঠানে যমুনা রেলওয়ে সেতু নির্মাণ প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মো. মাসউদুর রহমান, টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক শরীফা হক ও জেলা পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান, দেশি-বিদেশী অতিথিসহ নির্মাণ প্রকৌশল ও শ্রমিকরা উপস্থিত ছিলেন।
যমুনা রেল সেতু উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে ময়মনসিংহসহ উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের খুলনা, রাজশাহী এবং রংপুর বিভাগের প্রায় অর্ধশত জেলায় রেল যোগাযোগ ব্যবস্থায় নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন হলো। একই সঙ্গে মানুষের ভাগ্য বদলের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। এছাড়া ভারত, মিয়ানমার ও ভূ-বেষ্টিত নেপাল, ভূটানসহ এ অঞ্চলের ট্রানশিপমেন্ট কেন্দ্র ও ট্রান্সপোর্ট হাব হিসেবে গড়ে ওঠার বিশাল সম্ভাবনা তৈরি হলো বাংলাদেশের। ফলে এই রেল সেতুটি জাতীয়, আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক যোগাযোগ নেটওয়ার্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
এখন থেকে প্রতিদিন ৮৮ টি ট্রেন নিয়মিত ট্রেন চলাচল করতে পারবে এবং এই সেতু ব্যবহারকারীদের আসন শ্রেণির ওপর ৪৫ থেকে ১৬০ টাকা অতিরিক্ত ভাড়া গুণতে হবে।
জাপানি ৫টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বিশাল এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে। তারমধ্যে- জাপান, ভিয়েতনাম, নেপাল, অস্ট্রেলিয়া, ফিলিপাইন ও বাংলাদেশের ৭ হাজারেরও বেশি কর্মীর ৪ বছরের পরিশ্রমে সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ হয়। শুরুতে এ সেতুর নাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু রাখা হলেও শেখ হসিনার সরকারের পতনের পর অর্ন্তবতী সরকার সস্প্রতি এক প্রজ্ঞাপন জারি করে সেতুর নাম পরিবর্তন করে ‘যমুনা রেল সেতু’ রাখে। ছাত্র-জনতা গণঅভ্যুত্থানের সময় গত ৫ আগস্টের দিন সেতুরটি টাঙ্গাইল পূর্ব ও সিরাজগঞ্জ পশ্চিম দুই প্রান্তের বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালটি কালো রঙ দিয়ে মুছে দেয় স্থানীয় বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা।