২৪’এর গণঅভ্যুত্থানে মাদরাসা ছাত্রদের ভূমিকা ছিল: শিক্ষা উপদেষ্টা
১৯ মার্চ ২০২৫ ১৯:৫৭ | আপডেট: ১৯ মার্চ ২০২৫ ২৩:৪০
বুধবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে ‘বাংলাদেশে মাদরাসা শিক্ষার অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ করণীয়’ শীর্ষক এক সেমিনারে বক্তব্য রাখেন শিক্ষা উপদেষ্টা চৌধুরী রফিকুল আবরার
ঢাকা: বাংলাদেশ গঠন হওয়ার পর থেকে প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলন এবং২৪’এর গণঅভ্যুত্থানে মাদরাসা ছাত্রদের ভূমিকা ছিল- বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষা উপদেষ্টা চৌধুরী রফিকুল আবরার।
বুধবার (১৯ মার্চ) আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে ‘বাংলাদেশে মাদরাসা শিক্ষার অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ করণীয়’ শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, গত সরকারের আমলে এমন ভীতিকর পরিস্থিতি ছিল, আমরা যে নাগরিক ছিলাম- তা ভুলে গিয়েছিলাম। তখন ক্যাবিনেটে মন্ত্রীরা মন খুলে কথা বলতে পারতেন না। আমরা সবাই প্রজায় পরিণত হয়েছিলাম। সে পরিস্থিতি থেকে ছাত্রজনতার আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা একটি নতুন সমাজ পেয়েছি। আমাদের দায় ও দরদ থেকে এ দেশটাকে গড়ে তুলতে হবে । বর্তমান প্রেক্ষিতে আমাদের মনে রাখতে হবে যে, আমরা সুযোগ পেয়েছি নতুন চিন্তা করার, ন্যায়নিষ্ঠ সমাজ গড়ার, যে সমাজের প্রতিটি নাগরিক সমান। আমাদের শিশু ও কিশোরদের মুক্ত বিহঙ্গের মতো বাধাহীনভাবে উড়তে দিতে হবে, যেন তারা মুক্ত মনে তাদের মতো করে তাদের মেধা ও যোগ্যতা প্রয়োগ করে নিজেদের গড়ে তুলতে পারে।
মাদরাসা শিক্ষা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের দেশের তিনটি ধারায় শিক্ষা ব্যবস্থা পরিচালিত হয়। এর মধ্যে মাদরাসা শিক্ষা একটি অন্যতম ধারা। এ শিক্ষার সাথে প্রায় ত্রিশ/চল্লিশ লাখ ছাত্রছাত্রী ও দুই লাখ শিক্ষক সম্পৃক্ত। সমাজের সুবিধা বঞ্চিত ও অস্বচ্ছল পরিবার থেকে আসা ছাত্রছাত্রীদের দেখভালের দায়িত্ব মাদরাসা শিক্ষকদের। সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে মেধা, যোগ্যতা, সময় ও সুযোগের সদ্ব্যবহার করে তাদেরকে কর্মক্ষম করে তোলার দায়িত্ব আমাদের। এজন্য ন্যায়নিষ্ঠ, বিজ্ঞানভিত্তিক ও আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।
উপদেষ্টা বলেন, আমাদের রাষ্ট্রের সকল প্রতিষ্ঠান জনগণের টাকায় চলে। জনগণের সম্পদের সদ্ব্যবহার করতে হবে। কোন খাতে, কোনভাবে ব্যয় করলে, আমরা আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছতে পারবো, আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এক্ষেত্রে ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক ও প্রশাসন কার কী দায়িত্ব এবং এ দায়িত্ব কীভাবে পালন করলে মাদরাসা শিক্ষার সাথে সম্পৃক্ত এসব সুবিধা বঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে কর্মক্ষম করা যায়- এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। ছাত্রছাত্রীদের চাহিদানুযায়ী কীভাবে মাদরাসা শিক্ষাকে ঢেলে সাজানো যায়, তার জন্য রাষ্ট্র কী করতে পারে, এক্ষেত্রে নাগরিক সমাজের ভূমিকা কী- সেমিনারে এগুলো নিয়ে আলোচনা করতে হবে।
কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব ড. খ ম কবিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়ের। অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ এর অধ্যাপক ড. সলিমুল্লাহ খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক (আরবি বিভাগ) ড. এবিএম সিদ্দিকুর রহমান নিজামী, মাদরাসা দারুল রাশাদ এর শিক্ষা পরিচালক মাওলানা মোহাম্মদ লিয়াকত আলী।
সারাবাংলা/এনএল/আরএস