২২ মার্চ ১৯৭১
বায়তুল মোকাররমে শিশু-কিশোরদের সমাবেশ অনুষ্ঠিত
২২ মার্চ ২০২৫ ০৮:০০ | আপডেট: ২২ মার্চ ২০২৫ ০৮:১২
ঢাকা: ২২ মার্চ ১৯৭১। এদিন স্বাধীনতার দাবিতে মিছিল চলছিল ঢাকাসহ সারাদেশ। পল্টনে প্রাক্তন সৈনিক সংস্থার সভা থেকে স্বাধীনতার ডাক আসায় আরও বেগবান হয় আন্দোলন। পরের দিন জনসভা ও জাতীয় সংগীত এবং প্যারেডের মধ্য দিয়ে সারাদেশে আনুষ্ঠানিক পতাকা উত্তোলন সফল করার প্রস্তুতি নেয় ছাত্ররা।
এদিন সকালে রমনার প্রেসিডেন্ট ভবনে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান, শেখ মুজিব ও জুলফিকার আলী ভুট্টো বৈঠকে মিলিত হন। এটা ছিল প্রেসিডেন্টের সঙ্গে শেখ মুজিবের ষষ্ঠ দফা বৈঠক। বৈঠক প্রায় সোয়া ঘণ্টা স্থায়ী হয়। কিন্তু সেটি ফলপ্রসূ হয়নি।
প্রেসিডেন্ট ভবন থেকে নিজ বাসভবনে ফিরে শেখ মুজিবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা আন্দোলনে আছি এবং লক্ষ্য অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।’
দুপুরে প্রেসিডেন্ট ভবন থেকে কড়া সামরিক প্রহরায় হোটেলে ফিরে ভুট্টো তার উপদেষ্টাদের নিয়ে বৈঠকে বসেন। এই বৈঠক শেষে ভুট্টোর নেতৃত্বে পিপলস পার্টি নেতারা সন্ধ্যায় প্রেসিডেন্ট ভবনে যান। রাতে সেখান থেকে ফিরে ভুট্টো হোটেল লাউঞ্জে এক অনির্ধারিত সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট এবং আওয়ামী লীগ প্রধান বর্তমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনের জন্য একটি সাধারণ ঐকমত্যে পৌঁছেছেন। তবে ওই ঐকমত্য অবশ্যই পিপলস পার্টির কাছে গ্রহণযোগ্য হতে হবে। পিপলস পার্টির অনুমোদন ছাড়া কোনো সিদ্ধান্ত পশ্চিম পাকিস্তানিরা মেনে নিতে পারে না।’
সেদিন শেখ মুজিবের ডাকে চলমান অসহযোগ আন্দোলনের ছিল ২১তম দিবস। এদিন বায়তুল মোকাররম প্রাঙ্গণে শিশু-কিশোরদের এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ শেষে শিশু কিশোররা বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করে।
পল্টন ময়দানে সশস্ত্র বাহিনীর সাবেক বাঙালি সৈনিকরা এক সমাবেশ ও কুচকাওয়াজের আয়োজন করে। সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘বাংলার নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের জন্য যে অভূতপূর্ব ঐক্য গড়ে উঠেছে তাতে প্রাক্তন সৈনিকরা আর প্রাক্তন হিসেবে বসে থাকতে পারে না। আমাদের অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের মূল্যবান সম্পদ। আমরা মুজিবের নির্দেশ পালনে প্রস্তুত।’
ঢাকার কয়েকটি পত্রিকায় এদিন ‘বাংলার স্বাধিকার’ শিরোনামে একটি ক্রোড়পত্র প্রকাশিত হয়। ওই ক্রোড়পত্রে অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ চৌধুরী, অধ্যাপক রেহমান সোবহান প্রবন্ধ লেখেন। অবজারভার গ্রুপের পত্রিকাগুলো সেদিন এই ক্রোড়পত্র প্রকাশ করেনি। তারা পরদিন ছাপে। এই ক্রোড়পত্রে মূল পরিকল্পনায় ছিলেন নাট্য আন্দোলনের কর্মী রামেন্দু মজুমদার।
সারাবাংলা/এফএন/পিটিএম