নওগাঁয় টিসিবি’র পণ্য নিতে মধ্যরাত থেকেই দীর্ঘ লাইন
২২ মার্চ ২০২৫ ১৭:১৮
নওগাঁ: নওগাঁয় রমজান মাস উপলক্ষ্যে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে মিলছে টিসিবির পণ্য। এই পণ্য নিতে মধ্যরাত রাত থেকেই লাইনে দাঁড়িয়ে এবং প্রচন্ড রোদকে উপেক্ষা করেও টিসিবির ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে অনেক মানুষকে। এতে কিছুটা কষ্ট হলেও নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের উর্দ্ধগতির বাজার দরে বিশেষ করে রমজান মাসে স্বল্প মূল্যে টিসিবির এই পণ্য পেয়ে কিছুটা স্বস্তিতে রয়েছেন নওগাঁর নিম্ম আয়ের মানুষরা।
শহরের চকমুক্তার এলাকার বাসিন্দা মোছা. ফারজানা জানান, তিনি টিসিবির পণ্য পেতে বুধবার (১৯ মার্চ) দিবাগত রাত ৩টার দিকে এসে উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে সিরিয়াল দিয়ে বসেছিলেন। শুধু তিনিই নন অনেকে সেহেরির খাবার সঙ্গে এনে রাত ১টার দিকে লাইনে সিরিয়াল দিয়ে বসে ছিলেন।
প্রতিদিন পণ্য পাবেন ৪০০ জন আর এর জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে থাকেন ৬০০ থেকে ৭০০ জন মানুষ। দাঁড়িয়ে থাকতে কষ্ট হলেও অনেক কম দামে পণ্যগুলো পাওয়ায় বেশ উপকৃত হচ্ছেন তাদের মতো নিম্ম আয়ের মানুষরা। তবে প্রতিদিনই আবার অনেকেই পরিবারের এক একজন সদস্যদের দিয়ে পণ্য নিচ্ছেন। ফলে যাদের পণ্য প্রয়োজন তারা অনেকেই এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইবনুল আবেদীন জানান, পবিত্র রমজান মাসে নিম্ম আয়ের মানুষদের কাছে স্বল্প মূল্যে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য পৌঁছে দিতে সরকার দেশের ৬৪টি জেলায় ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) পণ্য বিক্রির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সেই সিদ্ধান্ত অনুসারে, নওগাঁতেও জেলা প্রশাসক স্যারের সার্বিক দিক নির্দেশনায় ও সদর উপজেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে গত ৫ মার্চ থেকে নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে ভর্তুকি মূল্যে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রির কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল প্রধান অতিথি হিসেবে এই কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। আগামী ২৮মার্চ পর্যন্ত এই কার্যক্রম চলমান থাকবে।
পৌর সভাসহ সদর উপজেলার পাঁচটি পয়েন্টে ৩৯০ টাকা প্যাকেজ মূল্যে দুই লিটার সয়াবিন তেল, দুই কেজি মসুর ডাল এবং এক কেজি চিনি বিক্রি করা হচ্ছে। ছুটির দিন ব্যতিত প্রতিদিন জেলা শহরের দুই হাজার পরিবার সাশ্রয়ী মূল্যে এই পণ্যগুলো পাচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘প্রতিটি পয়েন্টে পণ্যের চেয়ে চাহিদা সম্পন্ন মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি থাকায় এবং সিরিয়াল লাইনে পেছনে থাকার কারণে অনেকেই প্রথমবার না পেয়ে চলে যাচ্ছেন। তবে প্রথমবার যারা পাচ্ছেন না তারা পরের দিন পণ্য নিচ্ছেন। আবার পণ্য বিতরণে যেন কোনো প্রকারের বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি না হয় সেজন্য প্রতিটি পয়েন্টে একজন করে ট্যাগ কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া শারীরিক প্রতিবন্ধী ও রোগীসহ বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মানুষদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পণ্য সরবরাহ করা হচ্ছে। আমরা চেষ্টা করছি একজন মানুষ যেন একাধিকবার পণ্যগুলো ক্রয় করতে না পারেন।’
তবুও স্বল্প মূল্যে টিসিবির এই পণ্যগুলো পেয়ে নওগাঁর নিম্ম আয়ের মানুষরা অনেকটাই স্বস্তির নি:শ্বাস ফেলছেন। এছাড়াও ন্যায্য মূল্যের দোকান থেকেও সকল শ্রেণিপেশার মানুষরা স্বল্প মূল্যে বিভিন্ন পণ্য নিতে পারছেন। সরকারের এমন কার্যক্রমের প্রভাব পড়েছে খোলা বাজারে। ফলে চলতি রমজান মাসে খোলা বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যগুলোর দাম তেমন একটা বৃদ্ধি পায়নি। আগামীতেও সরকারের এমন কার্যক্রম অব্যাহত থাকার আশ্বাস প্রদান করেছেন এই কর্মকর্তা।
সারাবাংলা/এসডব্লিউ