আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ও গণহত্যার বিচারের দাবিতে ‘জুলাই রিভাইভজ’ কর্মসূচি ঘোষণা
২৩ মার্চ ২০২৫ ১৫:৫৮ | আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২৫ ১৬:০১
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ও গণহত্যার বিচারের দাবিতে রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনের সামনে ‘গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধকরণ আন্দোলন’ এর সংবাদ সম্মেলন – ছবি : সারাবাংলা
ঢাবি: আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ও গণহত্যার বিচারের দাবিতে আগামী দু’সপ্তাহের জন্য ‘জুলাই রিভাইভজ’ (July Revives) কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে ‘গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধকরণ আন্দোলন’ নামের একটি প্ল্যাটফর্ম।
রোববার (২৩ মার্চ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন প্ল্যাটফর্মটির সংগঠক মোসাদ্দেক আলী ইবনে মোহাম্মদ।
ঘোষিত এ কর্মসূচির আওতায় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ও গণহত্যার বিচারের দাবিতে ‘শহিদ ও আহত পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ, গণসংযোগ এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ, নাগরিক সমাজের ব্যক্তিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ, অনলাইন-অফলাইন প্রচার-প্রচারণা, দেয়াল লিখন’ শীর্ষক প্রচারণামূলক কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন প্ল্যাটফর্মটির নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে মোসাদ্দেক আলী ইবনে মোহাম্মদ বলেন, জুলাই গণহত্যার সাত মাস অতিবাহিত হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও খুনীদের বিচারের ব্যাপারে কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে না। খুনীরা বিভিন্ন স্থানে প্রকাশ্য দিবালোকে ঘুরে বেড়াচ্ছে, দেশে অরাজকতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে গোপনে সংগঠিত হচ্ছে, এমনকি ঝটিকা মিছিল করার মতো দুঃসাহসও দেখাচ্ছে।
তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান কর্তব্য ছিলো- আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত করা এবং শহিদ পরিবার ও আহতদের পুনর্বাসন নিশ্চিত করা। দ্বিতীয় কর্তব্য হওয়া উচিত ছিলো- জুলাই গণহত্যার দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিত করা এবং গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা। কিন্তু অন্তর্বতীকালীন সরকার কোনো ক্ষেত্রেই আশানুরূপ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে নি। আহতদের এখনো নিজেদের চিকিৎসার জন্য আন্দোলন করতে হচ্ছে, যা আমাদের জন্য অত্যন্ত বেদনাদায়ক।
তিনি আরও বলেন, যে সকল আহত ও শহিদ ভাইদের রক্তের বিনিময়ে আমরা একটি ফ্যাসিবাদ মুক্ত বাংলাদেশ পেয়েছি, তাদের যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত করতে না পারার চেয়ে বড় কোনো ব্যর্থতা হতে পারে না। যে জাতি তাদের বীর সন্তানদের যথাযথ মূল্যায়ন করতে পারে না, সে জাতির পক্ষে তাদের সার্বভৌমত্ব অটুট রাখা অত্যন্ত কঠিন। জাতি হিসেবে আমরা বড়ই দুর্ভাগ্য যে, জুলাই এর যোদ্ধাদের যথাযথ মূল্যায়ন তো দূরে থাকুক, এ সরকার তাদের যথাযথ চিকিৎসাই নিশ্চিত করতে পারেনি। শহিদ ইকরামুল হক সাজিদসহ অনেক আহত বীরকে যথাযথ চিকিৎসার অভাবে শহিদ হতে হয়েছে।
আওয়ামী লীগকে ‘জঙ্গি’ সংগঠন হিসেবে আখ্যায়িত করে মোসাদ্দেক বলেন, সরকারের উপদেষ্টাসহ বিভিন্ন মহল থেকে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের হীন প্রচেষ্টা করে যাচ্ছে, যা জুলাইয়ের শহিদ ও আহতদের রক্তের সাথে সুস্পষ্ট বেঈমানী। আওয়ামী লীগ কর্তৃক সংগঠিত জুলাই গণহত্যা শুধু দেশীয় নয় বরং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের পাশাপাশি জাতিসংঘ কর্তৃকও স্বীকৃত। আওয়ামী লীগ একটি সশস্ত্র জঙ্গি সংগঠন, যারা শুধু জুলাইয়ে নয় বরং গত ১৫-১৬ বছর নারী-পুরুষ এমনকি শিশুদেরকে খুন করেও খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে উল্লাস করেছে। শুধু জুলাই গণহত্যাই নয়, শাপলা গণহত্যা, পিলখানা হত্যাকান্ড, গুম-খুনসহ আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার সহস্রাধিক কারণ রয়েছে।
সারাবাংলা/এআইএন/আরএস