যুক্তরাষ্ট্রে গাড়ি আমদানিতে ২৫% শুল্কারোপ ট্রাম্পের
২৭ মার্চ ২০২৫ ১২:৫২ | আপডেট: ২৭ মার্চ ২০২৫ ১৪:২৩
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দেশটিতে গাড়ি ও গাড়ির যন্ত্রাংশ আমদানির ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। এই পদক্ষেপ বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য যুদ্ধ আরও বাড়ানোর হুমকি তৈরি করেছে।
ট্রাম্প জানিয়েছেন, নতুন শুল্ক ২ এপ্রিল কার্যকর হবে, এবং ৩ এপ্রিল থেকে গাড়ি আমদানিকারক ব্যবসাগুলোর ওপর এই কর বসবে। তবে গাড়ির যন্ত্রাংশের ওপর শুল্ক কার্যকর মে বা তার পর থেকে শুরু হবে। তিনি দাবি করেছেন, এই পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের গাড়ি শিল্পে অসাধারণ প্রবৃদ্ধি আনবে এবং কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগ বাড়াবে।
তবে বিশ্লেষকরা সতর্ক করে বলেছেন, এই শুল্কের ফলে যুক্তরাষ্ট্রে কিছু বড় গাড়ি নির্মাণ কারখানা সাময়িকভাবে বন্ধ হতে পারে, গাড়ির দাম বাড়বে এবং আন্তর্জাতিক মিত্রদের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্কের টানাপোড়েন সৃষ্টি হবে।
যুক্তরাষ্ট্র প্রতিবছর প্রায় ৮০ লাখ গাড়ি আমদানি করে, যার বাজার মূল্য প্রায় ২৪০ বিলিয়ন ডলার। দেশটির প্রধান গাড়ি সরবরাহকারী দেশগুলোর মধ্যে মেক্সিকো শীর্ষে রয়েছে, এরপর দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, কানাডা ও জার্মানি রয়েছে।
মেক্সিকো ও কানাডার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে চলা মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আওতায় অনেক মার্কিন গাড়ি কোম্পানির কারখানা ওই দুই দেশে রয়েছে। তবে হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, কানাডা ও মেক্সিকো থেকে আমদানিকৃত গাড়ির যন্ত্রাংশ আপাতত শুল্ক মুক্ত থাকবে, যতক্ষণ পর্যন্ত কাস্টমস কর্তৃপক্ষ শুল্ক নির্ধারণের নতুন ব্যবস্থা চালু না করে।
ট্রাম্পের ঘোষণার পর বুধবার (২৬ মার্চ) জেনারেল মোটরসের শেয়ার ৩ শতাংশ কমে যায়। ফোর্ডসহ অন্যান্য গাড়ি কোম্পানির শেয়ারও নিম্নমুখী হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, তিনি তার সিদ্ধান্ত বদলাবেন না এবং এটিই স্থায়ী সিদ্ধান্ত। তিনি আরও বলেন, আপনি যদি যুক্তরাষ্ট্রে গাড়ি তৈরি করেন, তাহলে কোনো শুল্ক নেই।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা ট্রাম্পের ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, তারা সব ধরনের পদক্ষেপ বিবেচনা করবে। জাপান, যেটি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম গাড়ি রফতানিকারক দেশ, এই সিদ্ধান্তে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
টোকিওর শেয়ারবাজারে ট্রাম্পের ঘোষণার পর টয়োটা, নিসান ও হোন্ডার শেয়ার মূল্য কমে গেছে।
ট্রাম্প এর আগেও বিভিন্ন আমদানি পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করেছেন, যা মার্কিন ব্যবসাকে রক্ষা করার এবং উৎপাদন বৃদ্ধি করার উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়েছে। তবে বিশ্লেষকদের মতে, গাড়ির যন্ত্রাংশ আমদানিতে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ফলে একটি গাড়ির দাম ৪ হাজার থেকে ১০ হাজার ডলার পর্যন্ত বাড়তে পারে।
তবে মার্কিন গাড়ি নির্মাতারা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, উচ্চ শুল্ক তাদের উৎপাদন ব্যয় বাড়িয়ে তুলবে এবং প্রতিযোগিতা সক্ষমতাকে বাধাগ্রস্ত করবে।
সারাবাংলা/এনজে