ঠাকুরগাঁওয়ে সরকারি গাছ কাটার অভিযোগ প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে
৩০ মার্চ ২০২৫ ২৩:১৬
ঠাকুরগাঁও: ঠাকুরগাঁও-গড়েয়া সড়কের ঢেপা নদীর ওপর ব্রিজ নির্মাণের দোহাই দিয়ে অবৈধভাবে লাখ লাখ টাকার গাছ কাটার অভিযোগ উঠেছে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলী মিজানের বিরুদ্ধে।
সরোজমিনে দেখা গেছে, ঠাকুরগাঁও-গড়েয়া সড়কের ঢেপা নদীর ওপর দীর্ঘদিন ধরে ব্রিজ নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। সেই ব্রিজের দুই দিকে রাস্তার দুই পাশে পুরোনো ৭-১০টি মেহগনি গাছ কাটার পরিকল্পনা করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলী মিজান। ইতোমধ্যে বেশকয়েকটি গাছ কেটেও ফেলেছে। যার এক একটি গাছের মূল্য প্রায় ৩০-৪০ হাজার টাকা।
বিষয়টি জানাজানি হলে বনবিভাগ এবং উপজেলা প্রশাসনকে অবগত করা হলে বনবিভাগ কর্তনকৃত গাছগুলো জব্দ করে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের জিম্মায় রাখেন।
পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে যখন সব সরকারি দফতর বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে এবং মানুষের মনোযোগ অন্যদিকে, ঠিক সে সময়ে জেলা পরিষদ, সড়ক ও জনপদ বিভাগ এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের যোগসাজসে লাখ লাখ টাকার দীর্ঘদিনের পুরোনো গাছ কেটে সাবাড় করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলী মিজান ও তার সহযোগিরা।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব প্রাপ্ত প্রকৌশলী মিজান বলেন, আমার কার্য এরিয়ার মধ্যে গাছ পড়েছে, তাই গাছ অপরাসরণ করছি। গাছ কাটার অনুমতি দিয়েছে সড়ক ও জনপদ বিভাগ, আবার কখনো বলছেন জেলা পরিষদ।
ঠাকুরগাঁও সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রাফিউল ইসলামসহ একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করেও পাওয়া যায়নি।
অপরদিকে অভিযোগ উঠে ঠাকুরগাঁও জেলা পরিষদের প্রধান সহকারি বিমল চন্দ্র শর্মার বিরুদ্ধে। তার মৌখিক অনুমতিতে গাছ কাটা হচ্ছে বলে জানা যায়। এ ব্যাপারে বিমল চন্দ্র শর্মার সঙ্গে একাধিকারবার যোগাযোগ করেও পাওয়া যায়নি।
ওই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা বেলাল হোসেন বলেন, ঢেপা নদীর নির্মাধীণ ব্রিজের পাশে মেহগনিসহ কিছু মূল্যবান গাছ ঠিকাদারের লোকজন কেটে ফেলছে। তাদের গাছ কাটার কোনো অনুমতি পত্র নেই। সেক্ষেত্রে অবৈধভাবে গাছ কাটার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
আরেক স্থানীয় বাসিন্দা জুয়েল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ব্রিজের কাজ চলছে। তাদের পরিকল্পনা থাকলে অনেক আগেই অনুমতি নিতে পারত। সেক্ষেত্রে হঠাৎ করে গাছ কাটাটা এক ধরনের অপরাধ বলে মনে করেন তিনি। এ ব্যাপারে আইনগত প্রদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান।
ঠাকুরগাঁও বনবিভাগের সদর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম জানান, ঠাকুরগাঁও-গড়েয়া সড়কে গাছ কাটার পূর্বা অনুমতির কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই। তবে তিনি বলেন, জেলা পরিষদের প্রধান সহকারি বিমল চন্দ্র শর্মা মৌখিকভাবে গাছ কাটার অনুমতি দিয়েছেন বলে জেনেছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলীর কাছে।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার খাইরুল ইসলামের কাছে গাছ কাটার অনুমতি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোথায় কাটা হচ্ছে, ছবি তুলে হোয়াটসঅ্যাপে দেন।
সারাবাংলা/এইচআই