টাঙ্গাইলে যমুনার তীরে অষ্টমীর স্নানে পুণ্যার্থীদের ঢল
৫ এপ্রিল ২০২৫ ১৬:২৮
টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যমুনা নদীতে মহাষ্টমী স্নানে পুণ্যার্থীদের ঢল নেমেছে। শনিবার (৫ এপ্রিল) ভোর হতে দূরদূরান্ত হতে পুণ্যার্থীরা যমুনা নদীতে স্নানে আসতে শুরু করেন। উৎসবকে কেন্দ্র করে মেলার আয়োজন করা হয়।
জানা যায়, উপজেলার খানুরবাড়ি যমুনা নদীর তীরে কয়েক হাজার ভক্তদের আগমন ঘটে। নদীরপাড়ে পূজারীরা পুরোহিতদের মাধ্যমে পূজা-অর্চনা করেন। বেলপাতা, চিনি, লবণ ও কলাসহ পূজার সামগ্রী পূজা শেষে নদীতে বিসর্জন দেন তারা। পাপমোচন, মনোবাসনা ও মঙ্গল কামনায় যমুনা নদীতে স্নান করে থাকেন পুণ্যার্থীরা। এ অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে আগত পুণ্যার্থীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থাসহ প্রসাদ বিতরণ করা হয়। তাদের দাবী এই স্নানের মাধ্যমে পাপমোচন হয় এবং আত্মার শুদ্ধি ঘটে। টাঙ্গাইলের সব চেয়ে বড় স্নান উৎসব এখানেই অনুষ্ঠিত হয়।
তীর্থ স্নানে ভক্তদের পূজা-অর্চনায় অংশ নিতে আশা পুরোহিত জানান, সনাতন ধর্ম মতে, এই দিনে গঙ্গা স্নানের মাধ্যমে তাদের পাপমোচন হয়। সেইসঙ্গে তারা সৃষ্টিকর্তার কাছে জগতের সকল জীবের মঙ্গল কামনায় প্রার্থনা করে। সেই বিশ্বাস থেকেই ভক্তরা এখানে আসে এবং গঙ্গাস্নান করেন।
স্নান উৎসবে আশা শিক্ষিকা রমা রানী দাস বলেন, ‘প্রতিবছরই আমি এখানে গঙ্গা স্নান করতে আসি। এখানে যারা স্নান করবে তারা অনায়াসে পাপ থেকে মুক্তি লাভ করবে। স্নান শেষে সৃষ্টিকর্তার কাছে দেশের মঙ্গলের জন্য প্রার্থনা করি।’
মন্দির কমিটি এই উৎসবকে আরও প্রাণবন্ত করতে এবং পুণ্যার্থীদের ভেজা জামাকাপড় বদলানোর জন্য পুরুষ এবং মহিলাদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। দূরদূরান্ত থেকে আসা ভক্তদেরসহ সবার জন্য রয়েছে প্রসাদের ব্যবস্থা।
বিশেষ করে টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, কালিহাতী, ঘাটাইল, মধুপুর, ধনবাড়ি, গোপালপুর ও আশপাশের জেলা- উপজেলা থেকে আগত সনাতন ধর্মাবলম্বীরা পরিবার-পরিজন নিয়ে আসেন এই পুণ্যস্নানে অংশ নিতে। নদীরপাড় জুড়ে চলে শঙ্খধ্বনি, উলুধ্বনি আর পূজার্চনার আয়োজন। এ ছাড়া এখানে বিভিন্ন পণ্য সমগ্রীর স্টল রয়েছে এবং আগত পুণ্যার্থীরা যাওয়ার সময় কেনাকাটা করছে।
পুণ্যার্থী স্বপন ঘোষ বলেন, ‘আমরা প্রতিবছরই এই দিনে যমুনায় স্নান করি। মন থেকে প্রার্থনা করি যেন সবার মঙ্গল হয়।’
সকালে শুরু হওয়া স্নান চলতে থাকে দুপুর পর্যন্ত চলে এই কর্মযজ্ঞ। এরপর অনেকে ঘাটে বসে পূজা দেন, কেউ আবার প্রসাদ বিতরণ করেন। উৎসবের আমেজে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান ঘিরে এক অনন্য পরিবেশ তৈরি হয় যমুনার পাড়ে।
ভুঞাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এ কে এম রেজাউল করিম জানান, শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং গোবিন্দাসি তীর্থ স্নানে নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সদা তৎপর রয়েছে।
সারাবাংলা/এইচআই