‘যুক্তরাষ্ট্রের নতুন করে শুল্ক আরোপ ভয়ের কিছু নেই, সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে’
৫ এপ্রিল ২০২৫ ২২:১১ | আপডেট: ৫ এপ্রিল ২০২৫ ২২:১৪
ঢাকা: বাংলাদেশের রফতানি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নতুন করে শুল্ক আরোপ ভয় পাওয়ার, আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই, আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ খলিলুর রহমান। তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা সময়মতো উদ্যোগ নিয়েছেন।
শনিবার (৫ এপ্রিল) সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কারোপ নিয়ে নীতি-নির্ধারকদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার জরুরি বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ খলিলুর রহমান এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশের রফতানি পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন করে শুল্ক আরোপ ইস্যুতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জরুরি বৈঠক করেছেন।
বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে প্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বৈঠক শেষে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন, প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেন্টিটিভ ড. খলিলুর রহমান ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী সাংবাদিকদের বৈঠকের বিষয় অবহিত করেন।
খলিলুর রহমান বলেন, ‘এটা আকস্মিক কোনো বিষয় নয়। সরকার এ বিষয়ে প্রস্তুত ছিল। ফ্রেব্রুয়ারির শুরুতে প্রধান উপদেষ্টা আমাকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেছেন। আমি সেই অনুযায়ী দ্বিতীয় সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর, ট্রেড ও অ্যাগ্রিকালচার ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে যোগাগোগ করেছি।’
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন বলেন, ‘আমাদের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সরাসরি যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর সঙ্গে আলোচনা করছি। করণীয় বুঝার চেষ্টা করছি। বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে এনে প্রতিযোগি দেশের চাইতে ভাল অবস্থানে যাওয়ার চেষ্টা করছি।’
তিনি বলেন, ‘আমদানি বৃদ্ধির মাধ্যমে ঘাটতি কমানো যেতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে সয়াবিন, শিল্পপণ্য, জ্বালানি পণ্য ও শিল্পের উপকরণ, তুলা আমদানি হয়ে থাকে। প্রয়োজনীয় এসব পণ্য আমদানি বৃদ্ধির মাধ্যমেই বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা করব। আমাদের ধারণা এতে কিন্তু আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হবো না। আমাদের যেসব দেশ প্রতিযোগী তাদের ট্যারিফ বেশি। আমাদের পণ্যের বৈচিত্র অনেক ভাল। ভারত-পাকিস্তানের শুল্ক কম হলেও তাদের চেয়ে আমাদের শিল্পের অবস্থা ভাল। আমরা মনে করি এটা আমাদের জন্য একটা সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিতে পারে।’
বৈঠকে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন, অর্থ উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদ, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর, এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান, প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ খলিলুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব মো. সিরাজ উদ্দিন মিয়া, বিশ্বব্যাংকের পরামর্শক অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন, বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী, পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) চেয়ারম্যান জায়েদী সাত্তারসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ও বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার (২ এপ্রিল) ওয়াশিংটনের স্থানীয় সময় বিকেল ৪টায় (বাংলাদেশ সময় বুধবার দিবাগত রাত ২টা) হোয়াইট হাউসে সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়িয়ে ৩৭ শতাংশ করার ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যেখানে বাংলাদেশি পণ্যে এতদিন গড়ে ১৫ শতাংশ করে শুল্ক ছিল। হোয়াইট হাউস প্রকাশিত চার্ট অনুযায়ী, বাংলাদেশ মার্কিন পণ্যের ওপর ৭৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে। তাই বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ ‘ডিসকাউন্টেড রিসিপ্রোকাল ট্যারিফ’ ধার্য করা হয়েছে।
সারাবাংলা/জিএস/এইচআই
প্রধান উপদেষ্টা প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ যুক্তরাষ্ট্রে শুল্ক শুল্ক আরোপ