ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে মুসলিম বিশ্বের আলেমদের জিহাদের আহ্বান
৬ এপ্রিল ২০২৫ ১৪:৪৯ | আপডেট: ৬ এপ্রিল ২০২৫ ১৬:১৬
গাজায় চলমান ভয়াবহ ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে মুসলিম বিশ্বের ১৫ জন বিশিষ্ট আলেম একযোগে এক বিরল ধর্মীয় ফতোয়া জারি করেছেন। এতে তারা মুসলিম দেশগুলোকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সামরিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে ‘জিহাদ’ চালানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক মুসলিম আলেম ইউনিয়নের (আইইউএমএস) সেক্রেটারি জেনারেল আলি আল-কারাদাগি শুক্রবার (৪ এপ্রিল) প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলেন, ‘গাজায় গণহত্যা ও সর্বাত্মক ধ্বংস বন্ধে মুসলিম দেশগুলোর এখনই সামরিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে হস্তক্ষেপ করা উচিত, এটি তাদের ধর্মীয় ও মানবিক দায়িত্ব।’
তিনি বলেন, ‘গাজা যখন ধ্বংসের মুখে, তখন আরব ও ইসলামি দেশগুলোর নিষ্ক্রিয়তা ইসলামি শরিয়ত অনুযায়ী বড় অপরাধ।’
এই ফতোয়ায় বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলের মুসলিম নিধনযজ্ঞে কোনো ধরনের সহায়তা দেওয়া ইসলামি দৃষ্টিতে নিষিদ্ধ। অস্ত্র বিক্রি, পণ্য পরিবহন বা যেকোনো রকম সহযোগিতা হারাম।’
ফতোয়ায় সুয়েজ খাল, বাব আল-মানদাব, হরমুজ প্রণালীসহ সব রকমের জল, স্থল ও আকাশপথে ইসরায়েলের ওপর অবরোধ আরোপের আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিশ্বব্যাপী ১ দশমিক ৭ বিলিয়ন সুন্নি মুসলমানের কাছে শ্রদ্ধার পাত্র কারাদাগির এই ফতোয়া বিশাল প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ‘মুসলিম দেশগুলো যেন ইসরায়েলের সঙ্গে সই করা শান্তিচুক্তিগুলো পুনর্বিবেচনা করে।’ একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত মুসলমানদের ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর চাপ প্রয়োগ করে আগ্রাসন বন্ধ ও শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের আহ্বান জানান তিনি।
এদিকে, গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান হামলায় শুক্রবার (৪ এপ্রিল) সকাল থেকেই অন্তত ৩০ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার সিভিল ডিফেন্স এবং স্থানীয় চিকিৎসা সূত্র। ইসরায়েলি বিমান হামলায় স্কুল, আশ্রয়কেন্দ্র, হাসপাতাল, খাদ্য বিতরণ কেন্দ্র, এমনকি নিরাপদ অঞ্চল ও পানিশোধনাগারও গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় ৫০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, যার মধ্যে রয়েছে হাজার হাজার শিশু।
অন্যদিকে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু হামাসকে আরও চাপ দিতে সামরিক অভিযান জোরদারের ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা গাজা বিভাজন করছি এবং চাপ বাড়াচ্ছি যাতে তারা আমাদের জিম্মিদের ফিরিয়ে দেয়।’
হামাসের দাবি, তারা একযোগে সব জিম্মিকে মুক্তি দিতে প্রস্তুত, যদি ইসরায়েল স্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রতিশ্রুতি দেয়। তবে নেতানিয়াহু বলছেন, হামাসকে অবশ্যই নিরস্ত্র হতে হবে, যা হামাস প্রত্যাখ্যান করেছে।
সারাবাংলা/এনজে