চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক ছয় লেইন করার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন রাজনীতিবিদসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নাগরিকরা। এতে ৩০ এপ্রিলের মধ্যে মহাসড়ক ছয় লেইন করার দৃশ্যমান উদ্যোগ নেয়া না হলে কঠোর কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
রোববার (৬ এপ্রিল) দুপুরে নগরীতে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালনের পর প্রধান উপদেষ্টা বরাবরে স্মারকলিপি দেয়া হয়েছে। স্মারকলিপি গ্রহণ করেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. কামরুজ্জামান।
গত ৩১ মার্চ ও ২ এপ্রিল চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার জাঙ্গালিয়া এলাকায় মহাসড়কে পৃথক দুটি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৬ জনের প্রাণহানি হয়েছে। মর্মান্তিক এ সড়ক দুর্ঘটনার পর মহাসড়কটি ছয় লেইন করার দাবিতে নিয়মিত কর্মসূচি পালিত হয়ে আসছে।
রোববার (৬ এপ্রিল) বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নাগরিকদের মাননবন্ধনে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান বলেন, ‘চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক পর্যটন নগরী কক্সবাজার এবং পার্বত্য জেলা বান্দরবান যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম। এই সড়ক ব্যবহার করে বিপুল পরিমাণ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য রসদ নেওয়া হয়। একটি সরু সড়কে এত চাপের কারণে প্রায় সময় দুর্ঘটনা এবং প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকার টানেলের মতো অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি প্রশস্ত করার কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। আমরা অতিদ্রুত সড়কটি ছয় লেনে উন্নীত করার দাবি জানাচ্ছি।’
মানববন্ধনে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও লোহাগাড়া উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, ‘প্রতিটি দুর্ঘটনার পর আমাদেরকে আশ্বাস দেওয়া হয় সড়কটি প্রশস্ত করার। কিন্তু দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এবার দুই দুর্ঘটনায় ১৬ জনের প্রাণহানির পর চুনতির জাঙ্গালিয়ায় সড়কের ওপর স্পিডব্রেকার এবং কিছু ইট বসিয়ে দায় সারছে কর্তৃপক্ষ। আমরা লোকদেখানো এমন কাজ দেখতে চাই না। বাস্তবিক অর্থে সড়কটিকে ছয় লেইন দেখতে চাই। এজন্য কোনো আমলাতান্ত্রিক জটিলতা না করে দ্রুত কাজ দেখতে চাই।’
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ সোহাইব বলেন, ‘দেশের অন্যতম ব্যস্ত এই সড়কটি পাড়ার গলির চেয়েও সরু। জাঙ্গালিয়ার মতো কিছু কিছু জায়াগায় রাস্তা ঢালু এবং আঁকাবাঁকা। রাতে লবণের গাড়ি যাতায়াতের ফলে রাস্তা পিচ্ছিল হয়ে যায়। সব মিলিয়ে রাস্তাটা মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। আগামী ৩০ এপ্রিলের মধ্যে আমরা যদি সরকারের পক্ষ থেকে কোন দৃশ্যমান অগ্রগতি না দেখি, তাহলে দক্ষিণ চট্টগ্রামের সর্বস্তরের মানুষ নিয়ে আমরা কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব।’
চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিইউজে) প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মিনহাজুল ইসলামের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন- চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষক মাহমুদুর রহমান সাঈদী, সিইউজের টিভি ইউনিটের প্রধান তৌহিদুল আলম, ছয় লেন বাস্তবায়ন পরিষদের সমন্বয়ক মিজানুর রহমান, মুজিবুল হক, শফিকুল আলম, গনতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সংগঠক ইমন মোহাম্মদ, আইনজীবী মো.শরীফ ও জিয়াউর রহমান।