ঢাকা: ফিলিস্তিনের পক্ষে যুদ্ধ করার জন্য বাংলাদেশের সৈন্য পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির শেখ ফজলে বারী মাসউদ।
সোমবার (৭ এপ্রিল) বিকেলে মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বরে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিলপূর্ব সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
ফিলিস্তিনের গাজা ও রাফা শহরে নির্বিচারে গণহত্যার প্রতিবাদে বিশ্বব্যাপী ডাকা ‘গ্লোবাল স্ট্রাইকে’র সমর্থনে এ কর্মসূচি আয়োজন করে ঢাকা মহানগর উত্তর ইসলামী আন্দোলন।
শেখ ফজলে বারী মাসউদ বলেন, ‘‘আজকে গোটা বিশ্বে প্রতিবাদ উঠেছে। আমরা বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ থেকে আমাদের সরকারকে বলতে চাই, ফিলিস্তিনের জনগণের পক্ষে বাংলাদেশের সৈন্য পাঠান। আমাদের সেনাবাহিনী ফিলিস্তিনের পক্ষে যুদ্ধ করার জন্য প্রস্তত আছে। যদি তা না পারেন, আমাদের দেশের জনগণকে যাবার জন্য রাস্তা করে দিন। আমরা বিশ্বাস করি, ইসলামী আন্দোলনের সব কর্মী ফিলিস্তিনের পক্ষে পীর সাহেব চলমোনাইয়ের নেতৃত্বে যুদ্ধ করার জন্য প্রস্তুত আছে।’’
তিনি বলেন, ‘‘আমরা সকলেই মর্মাহত। আমাদের কথা বলার ভাষা নাই। আমরা সকলেই জানি, বুঝি এবং দেখছি- প্রতিদিন আমাদের চোখের সামনে যে চিত্র দেখি, এটা কোনো সভ্য দেশের চিত্র নয়। যারা নিজেদের মানুষ দাবি করে, তারা এই চিত্র সহ্য করতে পারে না। গাজার ছোট ছোট শিশুদের যারা হত্যা করছে, খুন করছে তাদের মানুষ তো দূরের কথা পশু বলতেও আমাদের ঘৃণা হয়।’’
ফজলে বারী মাসউদ বলেন, ‘গাজাবাসী তাদের চৌদ্দপুরুষের ভিটে-মাটিতে বাস করছিল। এটা তাদের পূর্ব পুরুষের নিজস্ব জায়গা। সেইটা দখল নেওয়ার জন্য কুখ্যাত নেতানিয়াহু এবং তার দোসররা ট্রাম্প যা করছে, এটা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। আমরা দুঃখভারাক্রান্ত হৃদয়ে প্রতিবাদ জানাতে এসেছি। আমরা নেতানিয়াহুকে বলে দিতে চাই, আমরা ট্রাম্পকে বলে দিতে চাই, ফেরাউন তোমাদের চাইতে শক্তিশালী ছিল, নমরুদ তোমাদের চাইতে শক্তিশালী ছিল, সাদ্দাদ তোমাদের চৌদ্দগোষ্ঠীর চাইতে আরও বেশি শক্তিশালী ছিল। ইতিহাস পড়ে দেখ ফেরাউনকে আল্লাহ পানির মধ্যে চুবিয়ে মেরেছে, নমরুদকে মশা দিয়ে ধূলিসাৎ করে দিয়েছে, সাদ্দাদের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় না। মনে রেখ তোমাদের অবস্থা এর চাইতে অনেক করুন হবে।’’
তিনি বলেন, ‘‘আমরা জাতিসংঘকে বলতে চাই, আপনারা কিছুই পারেন নাই। শুধু মাত্র অফিস চালিয়ে পয়সা খরচ করে লাভ নাই। বিশ্বের রাষ্ট্রগুলো থেকে চান্দা নিয়ে আপনাদের অফিস চালানোর কোনো দরকার নাই। আপনারা পদত্যাগ করুন, অফিসে তালা মেরে দিন। যে জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠা হয়েছিল মানব জাতির কল্যাণের জন্য, সেই জাতিসংঘ যদি মানুষের বিপদে পাশে দাঁড়াতে না পারে, তাহলে সেই জাতিসংঘের কোনো প্রয়োজন আমাদের নেই। ওটা বন্ধ করে দিন।’’
প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে ফজলে বারী মাসউদ বলেন, ‘‘বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার আমাদের পাসপোর্ট থেকে ‘অ্যাকসেপ্ট ইসরায়েল’ শব্দটা তুলে দিয়েছিল। আমরা জোর দাবি জানাতে চাই, আপনি (ড. ইউনূস) যে ফিলিস্তিনের পক্ষে, সেটা প্রমাণ করার জন্য আমাদের পাসপোর্টে আবার ‘অ্যাকসেপ্ট ইসরায়েল’ লেখার ব্যবস্থা করুন। দেশবাসী আপনার কথা স্মরণ করবে।’’
সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে মিরপুর গোল চত্বর থেকে বিশাল এক মিছিল বের হয়। মিছিলটি মিরপুর ১১ ও পল্লবী দিকে অগ্রসর হয়। মিছিলে ইসলামী আন্দোলনের হাজার হাজার নেতা-কর্মী সমর্থক ছাড়াও সাধারণ মানুষ অংশ নেন। তারা ‘ইসরায়েল নিপাত যাক, গাজা জিন্দাবাদ স্লোগান দেন।