ডিএনসিসির সব পার্ক-মাঠ সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত: মোহাম্মদ এজাজ
৮ এপ্রিল ২০২৫ ২২:২৪ | আপডেট: ৮ এপ্রিল ২০২৫ ২২:২৬
ঢাকা: ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেছেন, আমরা অভিযোগ পাচ্ছি কয়েকটি পার্ক ও মাঠে জনসাধারণ সবসময় প্রবেশ করতে পারে না। আমি স্পষ্ট ভাষায় বলে দিচ্ছি আজ থেকে ডিএনসিসির মালিকানাধীন সব পার্ক ও মাঠ সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীর উত্তরা কমিউনিটি সেন্টারে ডিএনসিসির অঞ্চল-১ এর অন্তর্গত সব ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের সঙ্গে গণশুনানিতে ডিএনসিসি প্রশাসক এসব কথা বলেন।
গণশুনানিতে অংশ নিয়ে নাগরিকরা সরাসরি ডিএনসিসি প্রশাসকের সঙ্গে তাদের অভিযোগ, পরামর্শ ও সেবা সম্পর্কিত বিষয়ে কথা বলেন এবং প্রশ্ন করেন। ডিএনসিসি প্রশাসক সকলের প্রশ্ন শুনেন ও জবাব দেন। এ ছাড়াও ডিএনসিসির পক্ষ থেকে উপস্থিত সবাইকে একটি ফরম দেওয়া হয়, সবাই যার যার মতামত ও অভিযোগ লিখে জমা দেন।
মোহাম্মদ এজাজ বলেন, কোনো পার্ক ও মাঠে ডিএনসিসির অনুমতি ছাড়া কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কোনো ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজন করতে পারবে না। আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে স্থানীয় কমিউনিটিকে সম্পৃক্ত করে মেইনটেন্সের জন্য কমিটি করে দিবে। তারা মাঠ ও পার্ক দেখভাল করবে এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
নতুন এলাকায় খাস জমিতে মাঠ ও পার্ক নির্মাণ করা হবে বলে জানিয়ে ডিএনসিসি প্রশাসক বলেন, নতুন ওয়ার্ডে অপরিকল্পিত উন্নয়ন শুরু হয়েছিল। যে যার মতো করে ভবন নির্মাণ করেছে। ড্যাপে অনেক জায়গায় খালি দেখানো রয়েছে। রাজউকের সঙ্গে সমন্বয় করে সেগুলো রক্ষা করব। ড্যাপে নির্ধারিত মাঠ, পার্ক ও খালি জায়গায় কেউ কোনো ধরনের অবকাঠামো ভবন নির্মাণ করতে পারবে না। যেখানে খাস জমি আছে সেখানে আমরা জেলা অফিসের সঙ্গে এবং অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে আলাপ করে মাঠ ও পার্ক করে দিব।
হোল্ডিং ট্যাক্সের বিষয়ে প্রশ্নে ডিএনসিসির প্রশাসক বলেন, যদিও দীর্ঘদিন আপনাদের আশানুরূপ সেবা প্রদান ও অবকাঠামো উন্নয়ন করতে পারেনি সিটি করপোরেশন। কিন্তু হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ধারণ ও দেওয়ার ক্ষেত্রে আইন রয়েছে। সেই আইন ভঙ্গ করে কয়েক বছরের হোল্ডিং ট্যাক্স মওকুফের এখতিয়ার আমার নেই। এটা করলে আইন ভঙ্গ করা হবে। এর জন্য ভবিষ্যতে আমি এবং আপনারা বিপদে পড়ব। পরবর্তীতে যিনি দায়িত্বে আসবেন তখন আবার পূর্বের সব বছরের হোল্ডিং ট্যাক্স আদায় করতে বাধ্য হবেন। তাই আপনারা নিয়ম অনুযায়ী সব বছরের হোল্ডিং ট্যাক্স দিবেন। তবে আমার কাছে রিবেটের (কর ছাড়) সুযোগ রয়েছে। রিবেটের জন্য আবেদন করবেন, আমরা এখতিয়ার অনুযায়ী সর্বোচ্চটা পাশ করে দিব। এতে আপনাদের হোল্ডিং ট্যাক্সের পরিমান অনেক কমে যাবে। এতে আইন অনুযায়ী একটি সুন্দর সমাধান হবে।
হকাররা ফুটপাত ও রাস্তা দখল করে জনগণের ভোগান্তি সৃষ্টি করছে উল্লেখ করে কয়েকজন নাগরিক দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা রোজার মাসে মানবিক কারণে অভিযান বন্ধ রেখেছিলাম। আগামী সপ্তাহ থেকে ফুটপাত ও রাস্তা দখলকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান পরিচালনা করা হবে। জনগণের ভোগান্তি সৃষ্টি করে ফুটপাত ও রাস্তায় কোনো ব্যবসা করতে দেওয়া হবে না।
ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও ইজিবাইকের বিষয়ে প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে প্রশাসক বলেন, প্রধান সড়কে অটোরিকশা চলাচল বন্ধে ইতোমধ্যে ডিএমপি ট্র্যাপার (বিশেষ ফাদ) লাগানো শুরু করেছে। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পরে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের সঙ্গে ট্র্যাপার নিয়ে কাজ শুরু করেছি, আইডিয়া শেয়ার করেছি। ডিএনসিসির সব মেইন রোডে অটোরিকশা চলাচল বন্ধে দ্রুত ট্র্যাপার লাগানো হবে।
ডেঙ্গু প্রতিরোধের বিষয়ে তিনি আরও বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশক নিধনে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে পাঁচ হাজার স্বেচ্ছাসেবক যুক্ত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এই বর্ষায় তারা ডিএনসিসির প্রতিটি এলাকায় গিয়ে ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ে মানুষকে সচেতন করবে। এ ছাড়াও ডিএনসিসির মশক কর্মীদের নিয়মিত ওষুধ ছিটানোর কাজে তদারকি বাড়ানো হবে। কোনো কর্মীর অবহেলা পেলে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়াও বর্তমানে যেসব মশার ওষুধ ব্যবহার করা হচ্ছে সেগুলো কতটা কার্যকরী তা ল্যাবে আরও পরীক্ষা নীরিক্ষার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করব। ডিএনসিসির মশক কর্মীদের কাজ যেন সঠিকভাবে তদারকি হয় সেজন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা চলছে। পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকার সোসাইটি গুলোকে সম্পৃক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সারাবাংলা/এমএইচ/এইচআই
উন্মুক্ত ডিএনসিসি প্রশাসক ডিএনসিসির সব পার্ক-মাঠ পার্ক-মাঠ সর্বসাধারণ