প্রায় ১২ হাজার বছর আগে শেষবার দেখা গিয়েছিল গেম অব থ্রোনসের স্টার্ক পরিবারের সন্তানদের প্রহরী হিসেবে পরিচিত প্রাগৈতিহাসিক ডায়ার উলফ বা ডায়ার নেকড়ে। ‘ডায়ার ওলফ’ নামের এই প্রজাতিকেই এবার পুনরুজ্জীবিত করার দাবি করেছেন একদল মার্কিন বিজ্ঞানী।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য নিউইয়র্ক টাইমস বলছে, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা ডায়ার ওলফ প্রজাতিকে পুনরুজ্জীবিত করেছে। যা প্রায় ১২ হাজার ৫০০ বছর আগে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল। বৈজ্ঞানিক জগতে আলোড়ন তুলেছে তাদের পুনরুজ্জীবিত করা দুটি শাবক। ৩৬ কেজির বেশি ওজনের মাত্র ছয় মাস বয়সী শাবক দুটির নাম রোমুলাস ও রেমাস। কিন্তু ইতোমধ্যেই তারা উচ্চতায় প্রায় চার ফুট।

কলোসালের তৈরি ৬ মাস বয়সী ডায়ার নেকড়ের ছানা। ছবি: সংগৃহীত
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, এটিই বিশ্বের প্রথম সফল ডি-এক্সটিংকশন বা বিলুপ্ত প্রাণী ফিরে আসার দৃষ্টান্ত।
সিএনএনের এক প্রতিবেদন অনুসারে, তাদের পুনর্জন্মের দাবি করা প্রতিষ্ঠান হলো টেক্সাসের ডালাসভিত্তিক বায়োটেক কোম্পানি কলোসাল বায়োসায়েন্সেস। তারা জানিয়েছে, বিভিন্ন জায়গা থেকে উদ্ধার করা জীবাশ্ম, নেকড়ের ডিএনএ, ক্লোনিং ও জিন প্রকৌশল ব্যবহার করে ডায়ার ওলফের শাবক পুনরুজ্জীবিত করেছেন বিজ্ঞানীরা। যুগান্তকারী এই গবেষণার জন্য এর নিকটতম জীবিত আত্মীয় ধূসর নেকড়ের ডিএনএ ব্যবহার করা হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটি জানায়, ডায়ার ওলফের নিকটতম জীবিত আত্মীয় ধূসর নেকড়ের জিন বদলে দেওয়া হয়। এতে একটি হাইব্রিড প্রজাতি পেয়েছেন তারা। এই প্রজাতি ডায়ার ওলফ বলে দাবি তাদের। এই সংশোধিত কোষগুলোকে কুকুরের ডিম্বাণুর সঙ্গে মিলিয়ে গর্ভধারণের জন্য গৃহপালিত কুকুরকে ‘সরোগেট’ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ৬২ দিন গর্ভধারণের পর জন্ম নেয় এই তিনটি জিনগতভাবে পরিবর্তিত শাবক, যাদের চেহারায় ডায়ার ওলফের সঙ্গে অদ্ভুত মিল। এই শাবকগুলোর মধ্যে শুধুমাত্র বাহ্যিক বৈশিষ্ট্য ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে, প্রজাতিগত আচরণ বা অভ্যাস নয়।
প্রতিষ্ঠানটি বলছে, ‘এটি বৈজ্ঞানিক অগ্রগতির একটি মাইলফলক। বিলুপ্ত হওয়া প্রাণীদের ফিরিয়ে আনার প্রযুক্তির অগ্রগতিতে আরও এক পদক্ষেপ। অন্যান্য বিশেষ প্রজাতির প্রাণীকে বিলুপ্তির হাত থেকে ফেরানোর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।’
২০২১ সাল থেকেই ম্যামোথ, ডোডো ও তাসমানিয়ান টাইগার পুনরজ্জীবিত করার কাজ করছে কলোসাল বায়োসায়েন্সেস। কিন্তু ডায়ার ওলফ নিয়ে কাজ করার কথা এর আগে কখনো জানায়নি প্রতিষ্ঠানটি।