এপি সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার ফেরাতে মার্কিন আদালতের নির্দেশ
৯ এপ্রিল ২০২৫ ১৩:০৪ | আপডেট: ৯ এপ্রিল ২০২৫ ১৩:৩৭
হোয়াইট হাউসে বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) এর প্রবেশাধিকার পুনরুদ্ধার করতে ট্রাম্প প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছে মার্কিন আদালত।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) মার্কিন বিচারক ট্রেভর ম্যাকফ্যাডেন এই রায় ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, এপি সাংবাদিকদের উপর প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা প্রথম সংশোধনীর পরিপন্থী যা বাকস্বাধীনতাকে নিশ্চয়তা দেয়।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক নির্বাহী আদেশের পর ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা এপিকে হুশিয়ার দেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ মেনে মেক্সিকো উপসাগরের নাম এখন থেকে ‘গালফ অব মেক্সিকো’র বদলে ‘গালফ অব আমেরিকা’ লিখতে হবে। এর জের ধরে এপি’র প্রবেশাধিকার বন্ধ করে দেয় হোয়াইট হাউস।
এই নিষেধাজ্ঞার ফলে এপি হোয়াইট হাউস এবং এয়ার ফোর্স ওয়ানের সংবাদ সম্মেলনে প্রবেশ করতে পারছে না।
বিচারক ট্রেভর ম্যাকফ্যাডেন তার রায়ে উল্লেখ করেন, ‘আদালত স্পষ্টভাবে এটা বলছে যে, প্রথম সংশোধনী অনুযায়ী যদি সরকার তার নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গির কারণে কিছু সাংবাদিকের জন্য তার দরজা খুলে দেয় সেক্ষেত্রে অন্য সাংবাদিকদের জন্য তার দরজা বন্ধ করতে পারে না। হোক সেটি ওভাল অফিস, ইস্ট রুম বা অন্য কোথাও। এক্ষেত্রে সংবিধানও রয়েছে।’
এদিকে এপি’র দাবি, ভাষা নিয়ে মতবিরোধের কারণে তাদের প্রবেশাধিকার সীমিত করেছে ট্রাম্প প্রশাসন যা সংবাদ সংস্থার বাকস্বাধীনতার সাংবিধানিক অধিকারকে লঙ্ঘন করেছে।
মঙ্গলবারের রায়ের পর এপি মুখপাত্র লরেন ইস্টন জানিয়েছেন যে, সংস্থাটি আদালতের সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট।
তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আজকের এই রায় সংবাদমাধ্যম ও জনসাধারণের স্বাধীনভাবে কথা বলার মৌলিক অধিকারকে নিশ্চিত করে। এটি মার্কিন সংবিধান অনুযায়ী সকল আমেরিকানদের জন্য বাকস্বাধীনতা নিশ্চিত করে।’
এপির উপর প্রাথমিক বিধিনিষেধের সমালোচনাকারী অন্যান্য সংস্থাগুলোও এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছে।
কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নাইট ফার্স্ট অ্যামেন্ডমেন্ট ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক জামিল জাফর বলেছেন, ‘এটি একটি সতর্ক, সুবিবেচিত মতামত যা প্রেস পুল থেকে এপি’র বাদ দেওয়াকে প্রতিশোধ প্রবণ, দৃষ্টিভঙ্গি-ভিত্তিক এবং অসাংবিধানিক হিসেবে বর্ণনা করে।’
ওদিকে, ট্রাম্প প্রশাসনের তিন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা- প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট, চিফ অফ স্টাফ সুসি ওয়াইলস এবং ডেপুটি চিফ অফ স্টাফ টেলর বুডোভিচ এর বিরুদ্ধে মামলা করেছে এপি। অভিযোগ করা হয়েছে যে, এই নিষেধাজ্ঞাগুলো বেআইনি এবং সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা লঙ্ঘন করেছে।
ট্রাম্প প্রশাসন যুক্তি দিয়েছিল যে, অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস রাষ্ট্রপতির কাছে ‘বিশেষ অ্যাক্সেস’ পাওয়ার অধিকার রাখে না।
ট্রাম্পের শপথের তিন দিন পর এপি জানিয়েছিল, তারা ‘গালফ অব মেক্সিকো’ নামটিই ব্যবহার করবে থাকবে। এপি এ ক্ষেত্রে যুক্তি দেয়, বৈশ্বিক সংবাদমাধ্যম হিসেবে তারা কোনো জায়গার নাম ও ভৌগলিক বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে সর্বজনবিদিত ও বেশিরভাগ মানুষ সহজে চিনতে ও বুঝতে পারে, এমন ভাষা ব্যবহার অব্যাহত রাখবে।
ইতোমধ্যে গুগল ম্যাপ ও অ্যাপল ম্যাপে শুধু মার্কিন ইউজারদের জন্য মেক্সিকো উপসাগরের নাম ‘গালফ অব আমেরিকা’ করা হয়েছে।
মজার বিষয় হল, মেক্সিকোর ইউজাররা শুধু গালফ অব মেক্সিকো দেখছেন এবং যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া বিশ্বের বাকি সব দেশের মানুষ দুইটি নামই দেখতে পাচ্ছেন।
সারাবাংলা/এসডব্লিউ