Saturday 12 Apr 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘জিয়াউর রহমান বেঁচে থাকলে ইসরায়েল এই অপকর্ম করার সাহস পেত না’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১০ এপ্রিল ২০২৫ ২০:০২ | আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০২৫ ২৩:৪৯

ঢাকা: জিয়াউর রহমান বেঁচে থাকলে ইসরায়েল এই অপকর্ম করার সাহস পেত না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।

বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) বিকেলে নয়াপল্টনে আয়োজিত র‌্যালিপূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মির্জা আব্বাস বলেন, ‘পত্র-পত্রিকায়, স্যোসাল মিডিয়াতে যেসব ছবি এসেছে, ওই ছবির দিকে তাকানো যায় না। ওটা দেখা যায় না, অসহ্য লাগে। আজকে আমার মনে পড়ছে শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কথা। আমি কৃতজ্ঞচিত্তে শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কথা স্মরণ করব, যিনি ইরাক-ইরান যুদ্ধ বন্ধে হস্তক্ষেপ করেছিলেন। আমি বিশ্বাস করি যদি আজকে শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বেঁচে থাকতেন এমন ভূমিকা নিতেন যে ইসরায়েল এই অপকর্ম করার সাহস পেত না।’

‘বাংলাদেশের জিয়াউর রহমানের মতো নেতৃত্ব দরকার, যিনি সারা পৃথিবীর নেতৃত্ব দিতে পারবেন। আমি বিশ্বাস করি তারেক রহমান তার যোগ্য উত্তরসূরি। উনি পারবেন। আমি মনে করি উনার অবস্থান থেকেই ব্যবস্থা নেবেন। আমি বিশ্বাস করি, সারা বিশ্বের, সারা বাংলাদেশের মানুষ আমার নেতার পেছনে থাকবেন, আমরাও তার পেছনে থাকব’— বলেন মির্জা আব্বাস।

তিনি বলেন, ‘আমরা এই সভা করে, সমাবেশ করে, সংহতি প্রকাশ করে সমবেদনা জানাতে পারি। কিন্তু, আমরা যদি কার্যকর পদক্ষেপ না নিই, জাতিসংঘ যদি কার্যকরপদক্ষেপ না নেয়, যারা এসব অপকর্মের সহযোগী, তাদের বিরুদ্ধে যদি ব্যবস্থা না নিই, তাহলে এই অত্যাচার চলতেই থাকবে। এবং একে একে তারা মুসলিম রাষ্ট্রগুলোকে ধ্বংস করে দেবে, মুসলমানদের কোথায় টিকতে দেবে না।’

মির্জা আব্বাস বলেন, ‘শুধু ইসরায়েল নয়, আমাদের প্রতিবেশি দেশেও মুসলমানদের ওপর অত্যাচার হচ্ছে। আমরা সেটারও প্রতিবাদ করি না। আমাদের রাষ্ট্র প্রতিবাদ করে না, আমরাও প্রতিবাদ করি না। কিন্তু, এখন থেকে আমরা প্রতিবাদ করব। বিশ্বের যেখানেই মুসলমানরা নির্যাতনের শিকার হবে, সেখানেই প্রতিবাদ করব, প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করব।’

বিজ্ঞাপন

বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘বিএনপি সবসময় ন্যায়ের পক্ষে, মানবতার পক্ষে। কিন্তু, দুঃখজনক হলেও সত্য যেভাবেই হোক একটা সরকার তো বাংলাদেশে আছে। এখন পর্যন্ত ফিলিস্তিন ইস্যুতে অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো আলাপ পাইনি। দেশে অনেক সুশীল রয়েছে, জ্ঞানী-গুণি মানুষ রয়েছেন, যারা একটু কিছু হলেই ৫০০ জন, হাজার জন মিলে বিবৃতি দেন। কিন্তু, ফিলিস্তিন ইস্যুতে তাদের কোনো বিবৃতি এখন পর্যন্ত আমাদের চোখে পড়েনি।’

তিনি বলেন, ‘ফিলিস্তিনে মুসলমান মরছে, এটা বড় কথা নয়। সেখানে মানবতাবিরোধী অপরাধ হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে জাতি, ধর্ম, বর্ণ— সবাইকে রুখে দাঁড়াতে হবে। মুসলিম বিশ্বের দ্বিধাবিভক্তির কারণে ফিলিস্তিনিদের ওপর নির্যাতন চলছে। ভারতের সঙ্গে ইসরায়েলের আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক রয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও রয়েছে। ফিলিস্তিনিদের ওপরে ইসরায়েলি বর্বরতার এটাও একটা কারণ।’

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘বাংলাদেশে বিএনপির ক্ষমতায় যাওয়া ঠেকাতে সবাই ব্যস্ত, কিন্তু ফিলিস্তিনের পক্ষে মাঠে নামার জন্য কেউ ব্যস্ত নয়। কিন্তু, দল হিসেবে বিএনপি সব সময় মানবতার পক্ষে ছিল, পক্ষে আছে, পক্ষে থাকবে। আরও বড় কর্মসূচি নিয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে আমরা মাঠে থাকব।’

স্থায়ী কমিটর আরেক সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘বিএনপি সারা পৃথিবীর নিপীড়িত-নির্যাতিত মানুষের পক্ষে। এরই অংশ হিসেবে ফিলিস্তিনিদের পাশে থাকবে বিএনপি। কিন্তু, একটা বিষয় খেয়াল রাখতে হবে, কোনো দেশের পণ্য বর্জন মানে, সে পণ্য ব্যবহার থেকে বিরত থাকা। জোর করে ছিনিয়ে আনা বা দোকান-পাট ভাঙচুর করা না। আমরা মনে করি, ইসরায়েলি পণ্য বিবেচনায় দুই দিন আগে দেশের বিভিন্ন জায়গায় যে হামলা-ভাঙচুর-লুটপাট হয়েছে, তার পেছনে অন্য কোনো শক্তির হাত আছে। এরা পরাজিত ফ্যাসিস্ট শক্তি। তাই এদের সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে। কোথাও এ ধরনের ঘটনা ঘটতে দেখলে প্রতিহত করতে হবে।’

বিজ্ঞাপন

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনুর সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কিমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব শহিদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, ঢাকা উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক প্রমুখ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু।

বিক্ষোভ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, কৃষক দলের আহ্বায়ক হাসান জাফির তুহিন, ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাসিরউদ্দীন নাসির প্রমুখ।

সমাবেশ শেষে নয়াপল্টন থেকে র‌্যালি বের হয়। র‌্যালিটি কাকরাইল, শান্তিনগর, মালিবাগ মোড়, মগবাজার মোড় হয়ে বাংলামোটরে গিয়ে শেষ হয়। র‌্যালিতে হাজার হাজার নেতা-কর্মী অংশ নেন। তারা ফিলিস্তিনের পক্ষে প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন, ব্যানার, ব্যাজ, হেডার ধারণ করেন।

সারাবাংলা/এজেড/এইচআই

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় গাজায় গণহত্যা জিয়াউর রহমান টপ নিউজ নজরুল ইসলাম খান বিএনপি মির্জা আব্বাস

বিজ্ঞাপন

ছবির গল্প মার্চ ফর গাজা
১২ এপ্রিল ২০২৫ ২৩:৪৫

আরো

সম্পর্কিত খবর