আ.লীগ ক্ষমতায় যেতে শক্তিশালী প্রতিবেশী রাষ্ট্রের অপেক্ষায় বসে আছে: সিদ্দিকী নাজমুল
১১ এপ্রিল ২০২৫ ১৪:৩৫ | আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০২৫ ১৭:১০
ঢাকা: আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ের চাইতেও অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে এবারের রমজানে তেমন লোডশেডিং হয়নি বলে মন্তব্য করে, ইউনূস সরকারের প্রশংসা করলেন নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম। একই সঙ্গে তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অনিয়ম দুর্নীতি সমালোচনা করে বলেন, মুসলমানরা ফিলিস্তিনিদের রক্ষার জন্য যেমন আবাবিল পাখির অপেক্ষায় বসে আছেন আর আমরা আওয়ামী লীগের লোকজন শক্তিশালী কিংবা প্রতিবেশী রাষ্ট্রের অপেক্ষায় বসে আছি। যে তারা আমাদের দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) রাতে নিজের ফেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া পোস্টে তিনি লেখেন, আমাদের সরকারের সময়ের চাইতে এবারের রমজানে তেমন লোডশেডিং হয়নি।
তিনি লেখেন, ‘অনেকদিন নিঃশ্বাস বন্ধ রেখে চুপ থাকলাম, কিন্তু আমার মাথায় আসে না, আমাদের নেত্রী ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছানোর লক্ষে বিদ্যুৎ সেক্টরে অভূতপূর্ব উন্নতিসাধন করেছেন। কিন্তু আমাদের সরকারের সময়ের চাইতে এবারের রমজানে তেমন লোডশেডিং হয়নি। তার মানে হলো- প্রধানমন্ত্রীর চোখ ফাঁকি দিয়ে বিদ্যুৎ চোর বিপু এবং কিছু বিদ্যুৎ চোর আমলাদের সমন্বয়ে কৃত্রিম লোডশেডিং তৈরি করত এবং নিজেদের পছন্দের পাওয়ার প্লান্ট ব্যবসায়ীদের রমরমা একচেটিয়া ব্যবসা করার সুযোগ করে দিয়ে। সিন্ডিকেট করে কমিশন কামাত। বিদ্যুৎ চোর বিপু বড় ব্যবসায়ী বংশের রাজনৈতিক নেতার ছেলে ছিলেন আমাদের নেত্রী ভালো চিন্তা করেছিলেন, মনে করেছিলেন বড় লোকের ছেলে দায়িত্ব দিলে দুর্নীতি করবেন না। কিন্তু না নেত্রীর বিশ্বাস ভেঙে দিয়ে সর্বকালের সেরা বিদ্যুৎ চোরে পরিণত হয়েছেন বিপু।
সিদ্দিকী নাজমুল লিখেছেন, যে শালারা লুটপাটপাট করে দলটাকে শেষ করলেন। অতিরঞ্জিত, অতিকথনে টেলিসামাদ স্টাইলে রাজনীতিকে জোকারিতে পরিণত করলেন। তাদের বিরুদ্ধে লিখলেই একদলের জ্বালা উঠে এভাবে যে, এখন ঐক্যের সময়, এখন এগুলো লিখা যাবে না। আবার ক্ষমতায় গেলে, এসব নিয়ে আলোচনা করা যাবে। মোটকথা, তাদের কথা হলো আমরা তাদের পক্ষে লিখে তাদের সব হালাল করব, আমরা আমাদের পরিবার জীবন দিবে আর তারা সুটেট-বুটেট হয়ে আবার আমাদের নেত্রীর চারপাশ দখলে রাখবেন।
তিনি আরও লেখেন, বিপু একটা চোর চোর চোর। ওর বউ চোর, ভাই চোর, সন্তানেরা চোর। ওদের গত ১০ বছরের চলাচল দেখলে মনে হয়, বিপু রাজা আর আমরা প্রজা।
নাজমুল লেখেন, বিপুর সমস্ত ব্যবসা বাণিজ্য বিএনপি জামাতের নেতারা অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে দেখাশোনা করছেন। বিপুরা ক্ষমতা এবং টাকার কারণে নিজেদের ঈশ্বর মনে করতেন।
তিনি পোস্টে লেখেন, চরিত্রহীন লম্পট পরিবার বিপুর পরিবার। ওই পরিবারের পুরুষদের চাইতে নারীরাও পিছিয়ে নেই। এই চোরের চুরির কারণে এবং বিপুর কেরামতিতে রাজনীতিকে রাজপথ থেকে এসি রুমে চলে গেছে ফাইভ স্টারে নিয়ে গেছেন রাজনীতিকে।
পোস্টে তিনি উল্লেখ করেন, এলাকার রাজনীতিতেও বিপু জিরো। পুরো রাজনীতিটা করেন ওইখানে শাহীন চেয়ারম্যান। অত্যন্ত জনপ্রিয় কর্মীবান্ধব দুঃসময়ের শাহীন চেয়ারম্যানের সাজানো বাগানের মালিক হলো বিপু অথচ শাহীন চেয়ারম্যানের মতো পুরোনো মানুষের সঙ্গে উপজেলার সাধারণ সম্পাদক বানিয়েছেন বিপুর ব্যক্তিগত সহকারী এক ইয়ো ইয়ো বয়কে।
নাজমুল ক্ষোভ প্রকাশ করে লেখেন, বিপু কিন্তু তার ছেলেমেয়েদের লাক্সারিয়াস লাইফ লিড করাচ্ছেন। কিন্তু আমি আপনি আমাদের ছেলেমেয়েদের মৌলিক চাহিদা পূরণ করতে হিমশিম খাচ্ছি। আমি সরকারি দলে থাকতেও সমালোচনা করেছি, নিজের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের জবাব দিয়েছি, বড় বড় যথী মহারথীদের সঙ্গেও অন্যায় ইস্যুতে ছাড় দেয়নি দিবও না। নেত্রী জীবিত যতদিন থাকবেন, ততদিন রাজনীতি করার চেষ্টা করব। আমার স্পষ্ট অবস্থান থেকে নেত্রী যেদিন থাকবে না, সেদিন থেকে আর রাজনীতিও করব না।
দীর্ঘ পোস্টের সর্বশেষ তিনি লেখেন, নেত্রী সংসদে দাঁড়িয়ে অনেকবারই বলেছেন- এই আওয়ামী লীগে শেখ হাসিনা ছাড়া সবাইকে কেনা যায়। ব্যক্তিগতভাবে এটা আমি শতভাগ বিশ্বাস করি এবং মানি।
সারাবাংলা/জিএস/এমপি