শোভাযাত্রার র্যালির মোটিফে আগুন রহস্যজনক, সিসি ফুটেজ ধরে শনাক্তের চেষ্টা
১২ এপ্রিল ২০২৫ ১৫:১৭ | আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০২৫ ১৫:২১
ঢাকা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে নববর্ষের শোভাযাত্রা উদযাপনের জন্য বানানো দুটি মোটিফে আগুন লাগার ঘটনা রহস্যজনক বলছে ফায়ার সার্ভিস। এ ঘটনায় পুলিশের পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিসও তদন্ত শুরু করেছে। পুলিশ বলছে, ঘটনা যারাই ঘটিয়েছে তাদের শিগগিরই খুঁজে বের করা হবে। এরইমধ্যে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। জড়িতদের শনাক্তে কাজ করা হচ্ছে।
শনিবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে ডিএমপির একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা সারাবাংলাকে বলেন, আশেপাশের একাধিক সিসি ক্যামেরার ফুটেজের ডিভিআর সংগ্রহের কাজ চলছে। ফুটেজ দেখে জড়িতদের শনাক্ত করার কাজ চলছে।
শনিবার ভোর ৫টা ৫ মিনিটে আগুন লাগার খবর পায় তারা। পুরান ঢাকার সিদ্দিকবাজার ফায়ার স্টেশনের দুটি ইউনিট ৫টা ১৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
আগুনের সূত্রপাত জানতে চাইলে সিদ্দিকবাজার ফায়ার স্টেশনের কর্মকর্তা রুহুল আমিন মোল্লা জানান, নববর্ষের শোভাযাত্রা উদযাপনের জন্য অনেকগুলো মোটিভ সেখানে রয়েছে। এর মধ্যে কেনো শুধু দুটি মোটিফে আগুন লেগেছে, সেটি রহস্যজনক।
এ বিষয়ে ডিএমপির রমনা জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, তারা ঘটনাস্থলে রয়েছেন। আশপাশের অনেককে তারা জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। এছাড়া ঘটনাস্থল ও আশেপাশের একাধিক সিসি ক্যামেরার ডিভিআর সংগ্রহের কাজ চলছে। ডিভিআরগুলো থেকে ফুটেজ দেখে জড়িতদের শনাক্ত করা হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ফ্যাসিবাদের দোসর যারা কেবল তারাই এই আগুন লাগানোর ঘটনায় জড়িত বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। কারণ জড়িতরা চায়নি শেখ হাসিনাকে রাক্ষুসে রূপে বা হায়েনা রুপে কোনো মোটিফ আনন্দ শোভাযাত্রায় থাকুক। তবে জড়িত যেই হোক না কেন তাদের অচিরেই আইনের আওতায় আনা হবে।
এদিকে, আজ সকালে চারুকলা অনুষদ এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, নববর্ষের শোভাযাত্রা উপলক্ষে বানানো ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতির মোটিফটি কে বা কারা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। এ জন্য তারা দুঃখপ্রকাশ করেছেন।
এ ঘটনায় শাহবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আর মাত্র এক দিন বাকী পহেলা বৈশাখের। পহেলা বৈশাখের আনন্দ র্যালিতে যুক্ত হওয়ার কথা ছিল ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতির মোটিফ। অথচ মাত্র একদিন আগে সেটি পুড়িয়ে দেওয়া হলো। যেটি আনন্দ শোভার অনুষ্ঠানকে নস্যাৎ করার ষড়যন্ত্র বলে মনে করছে শোভাযাত্রার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা।
মোটিফ হলো কোনো স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য বা ধারণা যা একটি গল্পকে কেন্দ্র করে পুনরাবৃত্তি হয়। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনাকে সামনে রেখে এবার নববর্ষের প্রতিপাদ্য ঠিক করা হয় ‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’। এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে এবারকার প্রধান মোটিফ ছিল ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’। এটির উচ্চতা ২০ ফুট। এই মোটিফে বাঁশ ও বেত দিয়ে দাঁতাল মুখের এক নারীর মুখাবয়ব বানানো হয়। মাথায় খাড়া চারটি শিং, হাঁ করা মুখ, বিশালাকৃতির নাক ও ভয়ার্ত দুটি চোখ। এটিকে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিকৃতি হিসেবে ধারণা করেছিলেন অনেকে।
সারাবাংলা/ইউজে/এমপি