‘রোডম্যাপ বাস্তবায়নে সুপ্রিম কোর্ট ও সরকার নিবিড়ভাবে কাজ করছে’
১২ এপ্রিল ২০২৫ ১৫:৫৮ | আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০২৫ ১৬:০১
খুলনা: বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, রোডম্যাপ কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ও অন্তবর্তীকালীন সরকার নিবিড়ভাবে কাজ করছে। সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃক বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় তৈরির বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে এবং এ সংক্রান্ত অধ্যাদেশ প্রস্তুতের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। এ জন্য তিনি অন্তবর্তীকালীন সরকারকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
শনিবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ও জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি)’র যৌথ আয়োজনে খুলনার হোটেল সিটি ইন-এর সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত ‘জুডিসিয়াল ইন্ডিপেন্ডেন্স অ্যান্ড এফিসিয়েন্সি ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক আঞ্চলিক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মোহাম্মদ আলী।
তিনি বলেন, দেশের বিভাগীয় পর্যায়ে অনুষ্ঠিত সেমিনারগুলো হতে রোডম্যাপ বাস্তবায়নের বিষয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে এসেছে। সেসকল মতামতগুলো অন্তর্ভূক্ত করে অচিরেই বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট দেশের বিচার বিভাগের সার্বিক আধুনিকায়নে একটি স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যান তৈরির কাজ শুরু করবে। উক্ত স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যান সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে জুলাই বিল্পবোত্তর বাংলাদেশের বিচার বিভাগ যে নতুন যাত্রা শুরু করেছে তা পূর্ণতা পাবে এবং জনগণ বিচার বিভাগের উপর হারানো আস্থা ফিরে পাবে।
প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে সরকারের আন্তরিক সহযোগিতায় দেশের আদালতসমূহে বিরাজমান মামলাজট নিরসনে বিভিন্ন স্তরে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বিচারকের পদ তৈরি হয়েছে, যা অদূর ভবিষ্যতে মামলাজট নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এছাড়া বিশেষায়িত বাণিজ্যিক আদালত তৈরির জন্য প্রাথমিক কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। কক্সবাজারে সুপ্রিম কোর্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউট দ্রুত চালু করার বিষয়ে দুইটি বিশেষ কমিটি নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
সেমিনারে প্রধান বিচারপতি ন্যায়বিচার ও আইনের শাসন নিশ্চিতকরণে বিচার বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা এবং তার ঘোষিত বিচার বিভাগ সংস্কারের রোডম্যাপ বাস্তবায়নের অগ্রগতির বিবরণ তুলে ধরেন। তিনি বিচার বিভাগ সংস্কারের রোডম্যাপ এর বিভিন্ন অনুষঙ্গের সফল বাস্তবায়নে অন্তবর্তীকালীন সরকারের আন্তরিক সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। অন্তবর্তীকালীন সরকারের সক্রিয়তার কারণেই দ্রুততম সময়ে উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগের জন্য অধ্যাদেশ প্রণয়ন সম্ভব হয়েছে বলে সকলকে অবহিত করেন।
এছাড়া তিনি তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন যে, রোডম্যাপ কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ও অন্তবর্তীকালীন সরকার নিবিড়ভাবে কাজ করছে। সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃক বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় তৈরির বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে এবং এ সংক্রান্ত অধ্যাদেশ প্রস্তুতের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। এ জন্য তিনি অন্তবর্তী সরকারকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
সেমিনারে শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি)’র আবাসিক প্রতিনিধি স্টিফেন লিলার। এ সময় বিশেষ অতিথির বক্তৃতা দেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার এবং সুইডেনের রাষ্ট্রদূত নিকোলাস লিনাস রাগনার উইকস।
সেমিনারে খুলনা জেলার জেলা ও দায়রা জজ আদালত, মহানগর দায়রা জজ আদালত, চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, শ্রম আদালতে কর্মরত বিভিন্ন পর্যায়ের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাসহ খুলনার বিভিন্ন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এবং সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তারা, খুলনা জেলার সরকারি কৌশুলি ও পাবলিক প্রসিকিউটর উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/এনজে