Saturday 12 Apr 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিএনপি নেতা হত্যার ঘটনায় বিক্ষোভ, থানা ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১২ এপ্রিল ২০২৫ ১৮:৩৭

হত্যাকারীদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে স্বজন ও এলাকাবাসী

রংপুর: রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার মধুপুরে বিএনপির দুই পক্ষের পালটাপালটি সংঘর্ষে নিহত ইউনিয়ন বিএনপি নেতা লাভলু মিয়া হত্যাকারীদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে স্বজন ও এলাকাবাসী।

শনিবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে মধুপুরে বিভিন্ন ব্যানার, ফেস্টুন ও প্লাকার্ড নিয়ে সড়কে মানববন্ধনে দাঁড়ান স্বজন ও শতশত এলাকাবাসী। এ সময় পুলিশের প্রতি স্বজনদের আস্থা নেই উল্লেখ করে বক্তব্য দেন স্বজনরা। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সকল আসামিদের গ্রেফতারে কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে থানা ও ইউএনও কার্যালয়ের ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি দেন স্বজনরা।

বিজ্ঞাপন

উল্লেখ্য, বদরগঞ্জ পৌর শহরে গত ৫ এপ্রিল দুপুরে বদরগঞ্জ শহিদ মিনারের পাশে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত হন স্থানীয় বিএনপি কর্মী উপজেলার মধুপুর কালজানি গ্রামের লাভলু সরকার (৫০)। ওই ঘটনার পর দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে উপজেলা বিএনপি ও যুবদলের আট নেতাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়। এ ঘটনার দুদিন পর ৭ এপ্রিল লাভলু সরকারের ছেলে রায়হান কবীর বাদী হয়ে বদরগঞ্জ থানায় মামলা করেন। মামলায় উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কালুপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল হক ওরফে মানিক (৫০), তার ছেলে তানভীর আহম্মেদ ওরফে তমাল (৩২), বদরগঞ্জ ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সভাপতি সারোয়ার জাহান ওরফে মানিকসহ (৫৫) ১২ জনকে আসামি করা হয়। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ১০০ থেকে ১৫০ জনকে।

এ ঘটনায় পুলিশ সেদিনই মধুপুর ইউনিয়ন পরিষদের রাজারামপুর পাইটকাপাড়া গ্রামের মো. মোরসালিন (৩১) ও বদরগঞ্জ পৌরসভার জামুবাড়ী চাঁদকুঠিরডাঙ্গা গ্রামের হাবিবুর রহমান মন্ডল ওরফে হৃদয়কে (১৯) গ্রেফতারের পর আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠান।

বিজ্ঞাপন

মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন— বদরগঞ্জ শহিদ মিনারের পাশে ইসতিয়াক হোসেনের একটি দোকানঘর রয়েছে। জাহিদুল হক নামের এক ব্যক্তি দোকানটি ভাড়া নিয়ে সেখানে ঢেউটিনের ব্যবসা করে আসছিলেন। এই দোকানকে কেন্দ্র করে ইসতিয়াক হোসেনের সঙ্গে ভাড়াটে জাহিদুল হকের লোকজনের মধ্যে ৪ এপ্রিল পালটাপালটি ধাওয়া হয়। এরপর দোকানটি তালাবদ্ধ ছিল। পরদিন শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিএনপির সক্রিয় কর্মী লাভলু সরকারকে সঙ্গে নিয়ে ইসতিয়াক বাবু শহিদ মিনারের পাশে যান। তখন আসামিরা ছোরা, রামদা, হাসুয়া, চাপাতি ও লোহার রড নিয়ে অতর্কিত তাদের ওপর হামলা করেন। এতে মাথায় ছুরিকাঘাতে লাভলু সরকার মারা যান।

মানববন্ধনে লাভলু সরকারের ছেলে রায়হান কবীর বলেন, সুষ্ঠু বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে পুলিশের ওপর আমাদের আস্থা নেই। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এখন পর্যন্ত তেমন কাউকেই গ্রেফতারের আওতায় আনতে পারেনি। আমরা আশঙ্কা করছি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বিরোধীপক্ষের থেকে অর্থ লেনদেন করেছেন। মামলা তদন্ত করার ক্ষেত্রে তিনি গরীমসী করছেন।

এ সময় তিনি আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সকল আসামিকে গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় না আনলে থানা এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় ঘেরাওয়ের কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

বদরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এ কে এম আতিকুর রহমান বলেন, ওই হত্যা মামলায় গ্রেফতার মোরসালিন এজাহারনামীয় আসামি এবং হাবিবুর রহমান মন্ডলকে ভিডিও ফুটেজ দেখে ওই ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়। অন্য আসামিদের গ্রেফতার করতে পুলিশ কাজ করছে।

এদিকে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে কর্মী লাভলু মিয়া নিহতের ঘটনায় দলের আট নেতাকে বহিষ্কারের পর দলের পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করা হয়। গত বুধবার (৯ এপ্রিল) বিকেলে রংপুর জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক শফি কামাল বাদী হয়ে জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কৃষ্ণ কমল রায়ের আদালতে (আমলি আদালত, বদরগঞ্জ) মামলাটি করেন।

মামলায় তিনি উল্লেখ করেন—আসামিরা নিজেদের মধ্যে ব্যক্তিস্বার্থে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে কলহ ও বিবাদে জড়িত। তারা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও দলীয় সুনাম ক্ষুণ্ন করে মানহানিকর অপরাধ করেছেন। বিএনপির দলীয় পরিচয় ব্যবহার করে দেশের জনপ্রিয় ও সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপির সুনাম ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে আসামিরা মানহানিকর অপরাধ করেছেন। এ ঘটনায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলায় কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশের আলোকে এ মামলা করা হয়।

সারাবাংলা/এইচআই

থানা ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি বিএনপি নেতা হত্যা বিক্ষোভ মানববন্ধন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর