মুন্সীগঞ্জে পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষের হামলা, আহত ৩
১২ এপ্রিল ২০২৫ ২০:০৯
মুন্সীগঞ্জ: মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় তিনজন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা পাঠানো হয়েছে।
শনিবার (১২ এপ্রিল) সকাল ৯টার দিকে আব্দুল বাতেনের ছেলে রবিউল ইসলামের বাড়িতে হামলা চালায় প্রতিপক্ষের লোকজন। হামলায় ২০/২৫ জন লোক অংশ নেয় ও তাদের অধিকাংশের হাতে অস্ত্র ছিল।
হামলায় আহতরা হলেন, গজারিয়া উপজেলার বাউশিয়া ইউনিয়নের চৌদ্দকাউনিয়া গ্রামের আব্দুল বাতেনের ছেলে রবিউল ইসলাম (৩৫), রবিউলের স্ত্রী সোনিয়া আক্তার (২৫), শ্যালক শাহেদ প্রধান (২৩)।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জমি সংক্রান্ত বিষয়কে কেন্দ্র করে বাউশিয়া ইউনিয়নের চৌদ্দকাউনিয়া গ্রামের আব্দুল বাতেনের পরিবারের সঙ্গে প্রতিবেশী মামুন গংদের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে একাধিকবার হামলা ও পালটা হামলার ঘটনাও ঘটে। সর্বশেষ আজ সকালেও হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় প্রতিপক্ষের লোকজন রবিউল ইসলামকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে তাকে কুপিয়ে জখম করে। হামলাকারীদের বাধা দিতে তার স্ত্রী সোনিয়া আক্তার এবং শ্যালক শাহেদ এগিয়ে আসলে তাদেরকেও মারধর করা হয়। পরবর্তীতে তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও সংঘর্ষে আহত শাহেদ বলেন, ‘শনিবার সকাল থেকেই হামলাকারীরা আমার দুলাভাই রবিউল ইসলামের ওপর নজর রাখতে থাকে। সকাল সাড়ে ৮টার পর তিনি নাস্তা খাওয়ার জন্য বাড়িতে ঢুকলে প্রতিপক্ষ মামুনের নেতৃত্বে সোহাগ, সুমন, মামুন, জয়, বাবু, আমিরুল মেম্বার, হামিমসহ অন্তত ২০/২৫ জন সন্ত্রাসী চারদিক থেকে তার বাড়িঘর ঘিরে ফেলে। সন্ত্রাসীদের মধ্যে দুজনের হাতে পিস্তল ও তিনজনের হাতে শটগান ছিল। বাকিদের হাতে রামদা, বগিদা ও লোহার পাইপ ছিল। তারা প্রথমেই আমার দুলাভাই রবিউল ইসলামকে ঘর থেকে টেনে বের করে উঠানে নিয়ে বগিদা দিয়ে কোপানো শুরু করে। তাকে বাঁচাতে আমার বোন ও আমি এগিয়ে গেলে আমাদেরও লোহার পাইপ দিয়ে পিটিয়া আহত করা হয়। আমার দুলাভাইয়ের অবস্থা ভালো নয়। দায়ের কোপে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ঢাকা পাঠানো হয়েছে।’
এ বিষয়ে তার বক্তব্য জানতে হামলাকারী মামুনের মুঠোফোন একাধিকবার কল করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. খন্দকার আরশাদ কবির বলেন, ‘এই ঘটনায় আহত তিনজন রোগীকে আমাদের হাসপাতালে আনা হয়। তাদের মধ্যে রবিউল ইসলাম এবং তার স্ত্রী সোনিয়া আক্তারের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। রবিউল ইসলামের দুই হাত-সহ গায়ের বিভিন্ন অংশে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। সোনিয়ার ডান হাতে আঘাত রয়েছে। অন্যদিকে আহত অপরজন শাহেদকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’
গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, ‘এরকম একটি খবর আমি পেয়েছি। খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি এখন শান্ত। এ ব্যাপারে এখনো পর্যন্ত কোনো পক্ষ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সারাবাংলা/এমপি