রেকর্ড ভেঙে পাগলা মসজিদের দানবাক্সে মিলল ৯ কোটি ১৭ লাখ টাকা
১২ এপ্রিল ২০২৫ ২০:২০ | আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০২৫ ২০:২২
কিশোরগঞ্জ: কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদে সারা দিন গণনা করার পর ৯ কোটি ১৭ লাখ ৮০ হাজার ৬৮৭ টাকা পাওয়া গেছে। এটি মসজিদের এযাবৎ কালের সর্বোচ্চ টাকা পাওয়ার রেকর্ড। এর আগে গত নভেম্বরে ৮ কোটি ২১ লাখ ৩৪ হাজার ৩০৪ টাকা পাওয়া গিয়েছিল।
শনিবার (১২ এপ্রিল) সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ১০ ঘণ্টাব্যাপী প্রায় ৪০১ জন টাকা গণনার কাজ করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ কমিটির সভাপতি।
জেলা প্রশাসক বলেন, গণনা শেষে সব টাকা রূপালী ব্যাংকের কিশোরগঞ্জ শাখায় জমা দেওয়া হয়েছে। আর দানবাক্স থেকে পাওয়া বৈদেশিক মুদ্রা ও সোনার গয়নাগুলো জেলা প্রশাসনের ট্রেজারিতে গচ্ছিত রাখা হয়েছে।
চার মাস ১২দিন পর আজ শনিবার পাগলা মসজিদের ১১টি দানসিন্দুক খুলে পাওয়া গেছে ২৮ বস্তা টাকা, বিপুল পরিমাণ সোনার গয়না ও বৈদেশিক মুদ্রা।
পাগলা মসজিদ কর্তৃপক্ষ জানায়, সাধারণত তিন থেকে চার মাস পরপর দানসিন্ধুক খোলা হয়। এবার গতবারের তুলনায় বেশ কিছু দিন পর দানসিন্দুক খোলা হয়েছে। এবারো রেকর্ড পরিমাণ টাকা পাওয়া গেছে। কিশোরগঞ্জের আল জামিয়াতুল ইমদাদিয়া ও পাগলা মসজিদের এতিমখানার শিক্ষক-শিক্ষার্থী, ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ ৪০১জন, মসজিদ কমিটি এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও টাকা গণনার নিরাপত্তা কাজে নিয়োজিত ছিলেন।
কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরীর নেতৃত্বে দানসিন্দুক খোলা হয়। দানসিন্দুক খোলার সময় কিশোরগঞ্জ সেনাক্যাম্পের অধিনায়ক ক্যাপটেন মোস্তাফিজুরসহ অন্য সেনা কর্মকর্তা ও সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. এরশাদ মিয়াসহ কয়েকজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও রূপালী ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) রফিকুল ইসলাম, পাগলা মসজিদের খতিব মাওলানা আশরাফ আলী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
জেলা প্রশাসক ও মসজিদ কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খান বলেন, পাগলা মসজিদ ও ইসলামি কমপ্লেক্সের খরচ চালিয়ে দানের বাকি টাকা ব্যাংকে জমা রাখা হয়। এ থেকে জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদরাসা ও এতিমখানায় অনুদান দেওয়ার পাশাপাশি অসহায় ও জটিল রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সহায়তাও করা হয়ে থাকে।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী জানান, সকাল থেকে টাকার সিন্দুক খোলা, বস্তায় ভরে এনে গণনা শেষে ব্যাংকে সব টাকা নিরাপদে পৌঁছে দেওয়া পর্যন্ত সার্বিক নিরাপত্তার কাজে তিনিসহ পুলিশ সদস্যরা যথাযথ দায়িত্ব পালন করেন। গণনার দিন ছাড়াও বাকি দিনগুলো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লোকজন সিন্দুকের নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করেন।
কিশোরগঞ্জ শহরের ঐতিহাসিক স্থাপনার মধ্যে পাগলা মসজিদ অন্যতম। শহরের পশ্চিমে হারুয়া এলাকায় নরসুন্দা নদীর তীরে মসজিদটি স্থাপিত। কথিত আছে, খাস নিয়তে এ মসজিদে দান করলে মানুষের মনের আশা পূরণ হয়। সে জন্য দূরদূরান্ত থেকে অসংখ্য মানুষ এখানে এসে দান করে থাকেন। মানুষ টাকাপয়সা ছাড়াও সোনার গয়না দান করেন। গবাদিপশু, হাঁস-মুরগিসহ বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্রও মসজিদটিতে দান করা হয়।
সারাবাংলা/এইচআই