সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ৫০ লাখ টন ধান কেনার দাবি
১৩ এপ্রিল ২০২৫ ১৫:৩৮ | আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০২৫ ১৭:৫০
ঢাকা: ধানের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ৫০ লাখ টন ধান কেনাসহ সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর ও কৃষক সংগঠন।
রোববার (১৩ এপ্রিল) সংগঠনের আহবায়ক আহসানুল আরেফিন তিতু ও সাধারণ সম্পাদক অজিত দাস এর এক যৌথ বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়।
বিবৃতিতে তিন দফ দাবি জানানো হয়। এগুলো হচ্ছে- ধানের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে সরকারি উদ্যোগে হাটে হাটে ক্রয়কেন্দ্র খুলে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ৫০ লক্ষ টন ধান ক্রয় করা; দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি বন্ধ করে গোডাউনে ধান ক্রয়ের জটিলতা (আদ্রতা পরিমাপ, কৃষি কার্ড দিয়ে অ্যাপসের মাধ্যমে ধান ক্রয়) দূর করা এবং হাটে হাটে ‘ধলতা প্রথা’র নামে অতিরিক্ত ফসল আদায় বন্ধ করা।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘গত ৯ এপ্রিল সরকার এবছর বোরো মৌসুমে ধান চাল কেনার ঘোষণা দিয়েছে। সেখানে ৩ লাখ মেট্রিক টন ধান ও ১৪ লাখ মেট্রিক টন চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সরকারের এ ঘোষণা বরাবরের মতো চালকল মালিকদের স্বার্থ রক্ষা করবে। প্রতিবছরই সরকার ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা কম রাখে, চাল কেনে বেশি। এবছর ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা গতবছরের তুলনায় ২ লাখ মেট্রিক টন কম। এছাড়াও প্রতিবছর দেখা যায় মৌসুম শেষে সরকার নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চাল শতভাগ কিনলেও ধান কিনতে পারে ৫০ শতাংশ বা তারও কম। অথচ কৃষক ধান বিক্রি করতে পারে চাল নয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, সরকারের ধান কেনার সিদ্ধান্ত ও বাস্তবায়ন পদ্ধতি থেকে এ কথা অনস্বীকার্য যে, তারা কৃষক নয় চালকল মালিক ও ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের স্বার্থই রক্ষা করেন। ফলে মিল মালিকরা সিন্ডিকেট করে কৃষকদের কম মূল্যে ধান বিক্রি করতে বাধ্য করে। সেক্ষেত্রে সরকারি সংগ্রহের পুরোটাই সরাসরি কৃষকদের নিকট থেকে ধান কেনার মাধ্যমে সিন্ডিকেট ভাঙ্গা সম্ভব। সরকার যতটুকু ধান কেনে সেটাও নানা জটিলতার (যেমন- নির্ধারিত আদ্রতা, কৃষি কার্ড ও অ্যাপস ব্যবহার ইত্যাদি) কারণে সরাসরি কৃষক বিক্রি করতে পারে না। অবিলম্বে এসকল জটিলতা দুর করে হাটে হাটে সরকারি ক্রয় কেন্দ্র খুলে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনতে হবে এবং মিলারদের সাথে চুক্তি করে সেই ধান থেকে চাল করতে হবে। এ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে প্রতিবছর পর্যায়ক্রমে ৫০ লক্ষ টন ধান কিনতে হবে। সরকার পর্যাপ্ত ধান কেনার উদ্যোগ না নিলে কৃষক কখনও তার ন্যায্য মূল্য পাবে না।’
বিবৃতিকে আরও বলা হয়, ‘সরকার ধানের মূল্য নির্ধারণ করলেও বাজার নিয়ন্ত্রণে কোন ভুমিকা রাখে না। ফলে কৃষক ধান বিক্রি করে প্রতিবছর সর্বশান্ত হয়। কোন সরকারই কৃষকদের পক্ষে কোন ভুমিকা রাখে না। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সরকারও একই পথে হাঁটছে, এটা দুঃখজনক। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বৈষম্যহীন দেশ নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হওয়া উচিত কৃষকের অধিকার নিশ্চিত করা।’
সারাবাংলা/আরএস