বাংলা নববর্ষে দেশবাসীকে তারেক-ফখরুলের শুভেচ্ছা
১৩ এপ্রিল ২০২৫ ২০:৩৬ | আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০২৫ ২৩:০৪
ঢাকা: বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রোববার (১৩ এপ্রিল) বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো পৃথক বিবৃতিতে তারা এ শুভেচ্ছা জানান।
শুভেচ্ছা বার্তায় তারেক রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশি জাতিসত্তার ইতিহাস ও ঐতিহ্যের গুরুত্বপূর্ণ অংশ নববর্ষ উদযাপন। আবহমানকাল ধরে নানা রূপ ও বৈচিত্র্য নিয়ে জাতির জীবনে বারবার ঘুরে আসে পহেলা বৈশাখ। নববর্ষের উৎসবের সাথে যেন ভরে ওঠা প্রকৃতি ও প্রাণের যোগ আবহমানকাল ধরে বিদ্যমান।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের হৃদয়ে সঞ্চারিত হয় স্বজাতির অতীত গৌরব ও ঐশ্বর্য। আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সুদুর অতীতকাল ধরে নির্মিয়মান বিশালত্ব এক শক্ত ভিত্তি লাভ করে। ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও মনুষ্যত্বের বাণী একত্রিত হয়ে গঠন করে এক সুগ্রন্থিত জাতি। জাতির আত্মপরিচয়ে পহেলা বৈশাখ এক উজ্জল উপাদান। প্রতি বছর নববর্ষ পেছনের আলোকের দীপ্তিতে উৎকর্ষতা ও অগ্রগতির পথে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে প্রেরণা দেয়।’
তারেক রহমান বলেন, ‘এখন আমাদের প্রাণবন্ত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য জনগণের উদার দৃষ্টিভঙ্গির যে সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং প্রবণতা রয়েছে তার ভিত্তিতে বহুমত ও পথের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার চিরস্থায়ী কাঠামো গড়ে তুলতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘নানা ঘটনা ও দুর্ঘটনার সাক্ষী ১৪৩১ সাল অতিক্রম করে ১৪৩২ সালের প্রভাতে অজানা কাল-প্রাঙ্গণের সীমানায় আমরা উপস্থিত হয়েছি। বিশ্বের বিভিন্ন স্থান ভেসে যাচ্ছে রক্তে-বিষ্ফোরণ। বিশ্বে শান্তি আনতে সমাধানহীন এক প্রহেলিকার মধ্যে থাকলে হবে না। স্বার্থ কখনো সমাধান নয়। আমরা নি:স্বার্থ সমাধান চাইলে রক্ত ঝরবে না, শান্তির জন্য অপেক্ষায় থাকতে হবে না। আমাদের গত বছরের ক্লান্তি, হতাশা ও গ্লানিকে অতিক্রম করে নতুন উদ্যমে অগ্রসর হতে হবে।’
তারেক রহমান বলেন, ‘বাংলা সন-তারিখ আমাদের প্রাত্যহিক জীবন, দৈনন্দিন অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের অপরিহার্য অনুষঙ্গ, তাই এটি জাতীয় সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ, বিদগ্ধজনের মানসিক আশ্রয় ও মননের পরিচর্যার উৎসস্থল। সুপ্রাচীনকাল ধরে গড়ে ওঠা ভাষা ও কৃষ্টির নিবিড় বন্ধন ভেঙ্গে ফেলার জন্য বিদেশী আধিপত্যবাদী প্রভুরা সাংস্কৃতিক আধিপত্য বিস্তারের জন্য মহাপরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে চলেছে। আমাদের এ সম্পর্কেও সচেতন ও সদা জাগ্রত থাকতে হবে।
নববর্ষের প্রথম দিনে সকলের কল্যাণ ও শান্তি কামনা করে তিনি বলেন, ‘বৈশাখের বহ্নিতাপে সমাজ থেকে মুছে যাক অসত্য, অন্যায়, অনাচার ও অশান্তি। চারিদিকে প্রবাহিত হোক শান্তির সুবাতাস, সুশীলা নদী, সমস্ত জগৎ হোক অমৃতময়।’
পৃথক বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বাংলাদেশিদের সমগ্র সত্তাকে ধারণ করে আছে বাংলা নববর্ষ। বৈশাখের উষালগ্ন থেকেই ছায়াসুনিবিড় শান্তির আশ্রয়ের ন্যায় আমাদের মনকে ভরিয়ে তোলে বৈশাখী উৎসব। বাংলা নববর্ষ আমাদের জাতীয় জীবনের এক আলোকিত আনন্দময় উৎসব। উৎসবে বৈরিতা, দ্বন্দ্ব থাকবে না, প্রাণ-প্রাচুর্য্যে সঞ্চারিত হবে সবার হৃদয়। উৎসব সংহতিরও প্রতীক। পহেলা বৈশাখ থেকেই শুরু হয় নতুন বছরকে বরণ করে নেওয়ার আকুলতা। নতুন বছর মানেই অতীতের সকল ব্যর্থতা, জ্বরাজীর্ণতা পেছনে ফেলে নতুন উদ্দীপনা ও উৎসাহে নতুন গতিশীল কর্মপ্রবাহে সুন্দর, সমৃদ্ধ আগামী নির্মাণ করা।’
তিনি বলেন, ‘গত বছরের নানা ঘটনা ও দুর্ঘটনার অভিঘাত পেরিয়ে আমাদের শান্তি, স্বস্তি, সুস্থতা ও সহাবস্থান ফিরিয়ে আনতে হবে। নতুন বছর আদর্শ জীবন-এই শিক্ষা এবং উন্নত সংস্কৃতির তাগিদ সৃষ্টি করে। মানুষে মানুষে বিচ্ছিন্নতা ও বিভাজন দুর করে পহেলা বৈশাখ ভরে উঠুক পারস্পরিক শুভেচ্ছায়। রাষ্ট্রক্ষমতা থেকে ফ্যাসিষ্টদের পতনের পর এবারের পহেলা বৈশাখ স্বস্তির বাতাবরণে উদযাপিত হবে। তাই আমি বিশ্বাস করি, মানুষে মানুষে বিচ্ছিন্নতা ও বিভাজন দুর করে পহেলা বৈশাখের উৎসব ভরে উঠবে পারস্পরিক শুভেচ্ছায়।
ইতিহাসে বাংলাদেশিদের স্বাতন্ত্র্যধর্মের পরিচয় মেলে। ধর্ম-লোকাচার, রাজনীতি, সাহিত্য-সংস্কৃতির পরিমণ্ডলে এই স্বাতন্ত্র্যবোধ বাংলাদেশিদের মানসলোকের বিশেষত্ব। প্রতিটি উৎসবের অন্ত:স্থলে থাকে ধনী-নির্ধন নির্বিশেষে সব মানুষের মিলন, পরোক্ষে একটি জাতির নানা সম্প্রদায়, ধর্ম-গোষ্ঠীকে সংযুক্ত করে নানাভাবে।
সারাবাংলা/এজেড/এনজে