ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন
ব্যালট পেপার ও মনোনয়ন ফরমে লাগবে ১ লাখ ৭০ হাজার রিম কাগজ
১৫ এপ্রিল ২০২৫ ১৭:০৩ | আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০২৫ ১৯:৫৪
মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওস্থ নির্বাচন ভবনে বিজি প্রেসের সঙ্গে বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিং করেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ
ঢাকা: আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে ব্যালট পেপার, মনোনয়ন ফরমসহ বিভিন্ন নির্বাচনী সামগ্রী ছাপাতে কাগজ লাগবে ১ লাখ ৭০ হাজার রিম কাগজ লাগবে। এতে ব্যয় হবে প্রায় ৩৬ কোটি টাকা, আর মুদ্রণে সময় লাগবে ৩-৪ মাস। এসব সামগ্রী ছাপানোর কাজ করবে সরকারি মুদ্রণ প্রতিষ্ঠান বিজি প্রেস।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) সকালে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে বিজি প্রেসের সঙ্গে বৈঠক শেষে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রয়োজনীয় কাগজ কেনাকেটা ও মুদ্রণ কাজ ভোটের আগে চার মাসের মধ্যে করার প্রস্তুতি রাখছে কমিশন। নির্বাচন প্রস্তুতি যেন পিছিয়ে না থাকে সেজন্যে কাজগুলো গুছিয়ে রাখা হচ্ছে।
তিনি বলেন, “মূলত পেপার প্রকিউরমেন্ট থেকে প্রিন্টিং পযন্ত সময়সীমা কতটুকু লাগে। উনারা বলেছেন যে, তিন মাস থেকে চার মাস সময় লাগে। যেভাবে ব্যাকওয়ার্ড ক্যালকুলেশন হবে সেভাবে (এগোবে)। নির্বাচনের তারিখ বা নির্বাচনের সিডিউল সম্পর্কে যে সিদ্ধান্তটা হবে; তখন যেন আমাদের ব্যাকওয়ার্ড ক্যালকুলেশনটা থাকে।”
ইসি কর্মকর্তারা জানান, সংসদ নির্বাচনে ২১ প্রকার ফরম, ১৭ প্রকার প্যাকেট, ৫ প্রকার পরিচয়পত্র, আচরণবিধি, প্রতীকের পোস্টার, নির্বাচন পরিচালনা ম্যানুয়েল, প্রশিক্ষণ ম্যানুয়েল, নির্দেশিকাসহ অনেক কিছু মুদ্রণ করতে হয়।
সচিব আখতার আহমেদ বলেন, “আসন্ন নির্বাচনে কাগজ কী পরিমাণ লাগে সে সম্পর্কে ধারণা নেওয়া, এ সংক্রান্ত বাজেটের সংস্থানের ব্যাপার এবং আগের নির্বাচনের কিছু কাগজপত্র বিজিপ্রেসে রয়েছে সেগুলোর গুণগত মান নষ্ট হয়ে থাকলে ডিসপোজালের ব্যবস্থা করা (নিয়ে সভায় আলোচনা হয়েছে)।”
নির্বাচনকে সামনে রেখে কাজটির বিষয়ে অগ্রগতি নিতে একটি কমিটিও করে দিয়েছে ইসি সচিবালয়।
তিনি বলেন, “আমরা একটি কমিটি করে দিয়েছি। তারা যাচাই বাছাই করবে, যে কাগজগুলো নষ্ট হয়েছে গিয়েছে সেগুলোর প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ডিসপোজাল করা হবে। কাগজের পরিমাণ কতটুকু ও কতদিন টাইম লাগতে পারে সে বিষয়ে নিজেদেরকে প্রস্তুতি রাখার জন্যে এ আলোচনা করা হয়েছে।”
সচিব বলেন, “সে সাথে আরও একটি ফ্লেক্সিবিলিটি যদি রাখে চার মাসের ভেতরে আমরা সবগুলো প্রকিউমেন্ট করতে পারবো।”
উল্লেখ্য, আগামীতে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সংসদ এবং অন্যান্য স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ ব্যতীত) নির্বাচনে ব্যালট পেপারসহ অন্যান্য মুদ্রণ সামগ্রী মুদ্রণের জন্য কী পরিমাণ কাগজ প্রয়োজন হবে, তার হিসাব জানার জন্য গভর্নমেন্ট প্রিন্টিং প্রেস, তেজগাঁও এবং কাগজের বর্তমান মজুদ সম্পর্কে জানার জন্য বাংলাদেশ স্টেশনারি অফিস, তেজগাঁও, ঢাকাকে গত ১৩ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে পত্র পাঠানো হয়।
এর পরিপ্রেক্ষিতে গভর্নমেন্ট প্রিন্টিং প্রেস, তেজগাঁও ও বাংলাদেশ স্টেশনানি অফিস, তেজগাঁও, ঢাকা নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সংরক্ষিত কাগজের বিস্তারিত হিসাব দেয়। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ ও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য নির্বাচন উপলক্ষ্যে ২০২৩ সালে ১ লাখ ৬১ হাজার ৭৪ রিম কাগজ ক্রয় করা হয়েছিল। আগামীতে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও অন্যান্য স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ ব্যতীত) নির্বাচন উপলক্ষ্যে গভর্নমেন্ট প্রিন্টিং প্রেসের পাঠানো হিসাব অনুসারে বিভিন্ন ধরনের সম্ভাব্য ১ লাখ ৬৯ লাখ ৬২৯ রিম কাগজ ক্রয় করা প্রয়োজন হবে। যার ক্রয় বাবদ সম্ভাব্য ৩৫ কোটি ৭৭ লাখ ৫৫ হাজার ৫২৩ টাকা টাকা ব্যয় হবে।
ইউনিয়ন পরিষদ বাদে সংসদ নির্বাচনসহ স্থানীয় অন্যান্য নির্বাচনের জন্য মোট ২ লাখ ৩০ হাজার রিম কাগজ প্রয়োজন হবে। এখন এক লাখ ৭০ হাজার রিম কাগজ কিনতে হবে। বাকি কাগজ বিজি প্রেসের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে।
সারাবাংলা/এনএল/আরএস