৬ দাবিতে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ
১৬ এপ্রিল ২০২৫ ১৬:৩১ | আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২৫ ১৯:১৬
সারাবাংলা: দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছয় দাবিতে সড়ক অবরোধ করেছেন সরকারি ও বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। এতে করে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশের হস্তক্ষেপে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) সকাল থেকেই শিক্ষার্থীরা সড়কে অবস্থান নেন।
এদিন কুমিল্লার কোটবাড়ি বাইপাস এলাকায়, সিলেটের চন্ডিপুল এলাকার ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক, পটুয়াখালীর ঝাউতলা এলাকা, কুষ্টিয়ার মজমপুর গেইট সড়ক, পাবনায় বাস টার্মিনালে ঢাকা-পাবনা মহাসড়ক, ময়মনসিংহ নগরীর বাইপাস মোড় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ও নরসিংদীতে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া খুলনা, চট্টগ্রাম ও বগুড়ায়ও শিক্ষার্থীরা অবরোধ কর্মসূচি করেন।
শিক্ষার্থীদের এ অবরোধের কারণে মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। সড়কে চলাচলকারী মানুষ পড়েছিলেন সীমাহীন দুর্ভোগে।
শিক্ষার্থীদের সরাতে প্রথমে পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করেন। তবে শিক্ষার্থীরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাস্তা না ছাড়ার সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, কারিগরি শিক্ষকদের পদোন্নতি সংক্রান্ত একটি রিট বাতিল করতে হবে এবং পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিরা বলেন, আমরা আগেও একাধিকবার একই দাবি উত্থাপন করেছি, কেউ কর্ণপাত করেনি। এখন আমরা রাস্তা অবরোধ করেছি। দাবির ব্যাপারে কথা বলতে হলে আমাদের কাছে আসতে হবে। আমরা কেউ সচিবালয় বা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যাবো না।
তাদের দাবিগুলো হলো—
- জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের অবৈধ পদোন্নতির রায় হাইকোর্ট কর্তৃক বাতিল করতে হবে। পাশাপাশি, ক্রাফট ইন্সট্রাক্টর পদবি পরিবর্তন ও মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করতে হবে। ২০২১ সালে রাতের আঁধারে নিয়োগপ্রাপ্ত ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের নিয়োগ সম্পূর্ণভাবে বাতিল এবং সেই বিতর্কিত নিয়োগবিধি অবিলম্বে সংশোধন করতে হবে।
- ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে যেকোনো বয়সে ভর্তির সুযোগ বাতিলসহ উন্নত বিশ্বের আদলে চার বছর মেয়াদি মানসম্পন্ন কারিকুলাম নিশ্চিত করে একাডেমিক কার্যক্রম পরবর্তী প্রবিধান থেকে পর্যায়ক্রমিকভাবে সম্পূর্ণ ইংরেজি মাধ্যমে চালু করতে হবে।
- উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও সমমান (১০ম গ্রেড) এর পদ চার বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং ও মনোটেকনোলজি (সার্ভেয়িং) হতে পাশকৃত শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত থাকা সত্ত্বেও যেসব সরকারি, রাষ্ট্রায়ত্ত, স্বায়ত্তশাসিত ও স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের নিম্নস্থ পদে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।
- কারিগরি সেক্টর পরিচালনায় পরিচালক, সহকারী পরিচালক, বোর্ড চেয়ারম্যান, উপসচিব, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও অধ্যক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সকল পদে কারিগরি শিক্ষা বহির্ভূত জনবল নিয়োগ নিষিদ্ধ করতে হবে এবং তা আইনানুগভাবে নিশ্চিত করতে হবে। এই পদগুলোতে অনতিবিলম্বে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত জনবল নিয়োগ এবং সকল শুন্য পদে দক্ষ শিক্ষক ও ল্যাব সহকারি নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে।
- কারিগরি শিক্ষায় বৈষম্য ও দুরাবস্থা দূর করার পাশাপাশি দক্ষ জনসম্পদ তৈরিতে ‘কারিগরি ও উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয়’ নামে স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করে দ্রুত সময়ের মধ্যে কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন করতে হবে।
- পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক ইন্সটিটিউট হতে পাসকৃত শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগের লক্ষ্যে একটি উন্নতমানের টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। পাশাপাশি, নির্মাণাধীন চারটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ (নড়াইল, নাটোর, খাগড়াছড়ি ও ঠাকুরগাঁও) পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক হতে পাশকৃত শিক্ষার্থীদের জন্য অস্থায়ী ক্যাম্পাস ও ডুয়েটের আওতাভুক্ত একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে আগামী সেশন থেকে শতভাগ সিটে ভর্তির সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।
সারাবাংলা/এইচআই
পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীরা যান চলাচল স্বাভাবিক শিক্ষার্থীদের অবরোধ