চীনা পণ্যে শুল্ক বাড়িয়ে এবার ২৪৫% করেছে যুক্তরাষ্ট্র
১৭ এপ্রিল ২০২৫ ১১:১২ | আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২৫ ১২:৪৬
যুক্তরাষ্ট্রে আমদানিকৃত চীনা পণ্যে সর্বোচ্চ ২৪৫ শতাংশ শুল্কারোপ করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছে হোয়াইট হাউস। মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) বিকেলে এই ঘোষণা দেয়া হয়। এর আগে পালটা পালটি শুল্কারোপে যুক্তরাষ্ট্র চীনা পণ্যে ১৪৫ শতাংশ এবং চীন আমেরিকান পণ্যে ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিল। তবে এবার পাল্টা পদক্ষেপের জবাবে চীনের উপর শুল্কের হার ১০০ শতাংশ বাড়িয়ে ২৪৫ শতাংশ করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশে বলা হয়েছে, আমদানি নির্ভরতার কারণে যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘমেয়াদি জোগান শৃঙ্খলের ধাক্কা এবং জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকিতে পড়তে পারে।
যদিও হোয়াইট হাউস এখনও স্পষ্ট করেনি এই ২৪৫ শতাংশ শুল্ক নতুনভাবে যুক্ত কি না, তবে ধারণা করা হচ্ছে এটি মোট শুল্কের সর্বোচ্চ সীমা, যা চীনা পণ্যে আরোপ করা হতে পারে।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) এক চীনা কর্মকর্তা জানান, যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক তাদের উপর চাপ সৃষ্টি করছে। তবে একইসঙ্গে চীন জানিয়েছে, চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে তাদের অর্থনীতি প্রত্যাশার চেয়ে ভালো পারফর্ম করেছে। দেশটির শিল্পোৎপাদন ৬ দশমিক ৫ শতাংশ এবং খুচরা বিক্রি ৪ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়েছে।
তবে বেইজিং সতর্ক করে বলেছে, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিবেশ আরও জটিল ও কঠিন হয়ে উঠছে এবং প্রবৃদ্ধি ও ভোগ বৃদ্ধি করতে আরও পদক্ষেপ নিতে হবে। চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিন জিয়ান বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র যদি সত্যিই আলোচনার মাধ্যমে সমাধান চায়, তাহলে তাকে ব্ল্যাকমেইল বন্ধ করে সমতার ভিত্তিতে, পারস্পরিক সম্মান ও লাভের ওপর ভিত্তি করে চীনের সঙ্গে কথা বলতে হবে।’
অন্যদিকে ট্রাম্প জানিয়েছেন, আলোচনায় প্রথম পদক্ষেপ চীনেরই নিতে হবে। চীনকে আমাদের সঙ্গে চুক্তি করতে হবে, আমাদের চীনের সঙ্গে চুক্তি করার প্রয়োজন নেই।
ট্রাম্প চীন, ভারত, ব্রাজিলসহ অনেক দেশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন যে তারা মার্কিন পণ্যে বেশি শুল্কারোপ করেছে, যেখানে যুক্তরাষ্ট্র তুলনামূলকভাবে কম শুল্ক আরোপ করে থাকে।
এই কারণেই ট্রাম্প তার নির্বাচনি প্রচারে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, সমপর্যায়ে শুল্কারোপের মাধ্যমে অন্য দেশগুলোকে হয় শুল্ক কমাতে বাধ্য করবেন, না হয় মার্কিন উৎপাদন খাতকে চাঙ্গা করবেন।
চীনের ক্ষেত্রে তিনি ২০ শতাংশ ‘ফেন্টানিল ট্যাক্স’ আরোপ করেছেন এবং ১২৫ শতাংশ শুল্ক দিয়েছেন অন্যায্য বাণিজ্য চর্চার কারণে। ৯ এপ্রিলের মধ্যে চীনা পণ্যের উপর মোট শুল্ক ১০০ শতাংশ অতিক্রম করে, যার ফলে বিশ্ববাজারে ধস নামে।
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও) বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র-চীন শুল্কযুদ্ধের অনিশ্চয়তা বিশ্ববাণিজ্যে গভীর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে এবং ২০২৫ সালে পণ্যবাণিজ্য শূন্য দশমিক ২ শতাংশ হ্রাস পেতে পারে। পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে এই পতন ১ দশমিক ৫ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।
সারাবাংলা/এনজে