‘সংস্কার অসম্পন্ন রেখে নির্বাচন করলে শহিদের রক্তের সঙ্গে গাদ্দারি করা হবে’
১৭ এপ্রিল ২০২৫ ১৭:১৯ | আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২৫ ১৯:৩০
ঢাকা: সংস্কার অসম্পন্ন রেখে নির্বাচন আয়োজন করলে শহিদের রক্তের সঙ্গে গাদ্দারি করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ইউনুছ আহমাদ বলেন, ‘‘মুক্তি, সাম্য, সুশাসন ও সমৃদ্ধির জন্য এই অঞ্চলের মানুষ ৪৭ ও ৭১ এ দুই দফা যুদ্ধ করেছে। ৯০-এ স্বৈরাচার উৎখাত করেছে। তারপরও দেশে হাসিনার মতো স্বৈরাচার তৈরি হয়েছিল রাজনৈতিক সংস্কৃতি, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর দুর্বলতা ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ভঙ্গুরতার কারণে। ফলে আগামীর বাংলাদেশে নতুন স্বৈরাচারের পথ রুদ্ধ করতে সংস্কার অপরিহার্য। সংস্কারকে বাধাগ্রস্থ করে এমন কোনো কিছু দেশবাসীর পক্ষে সহ্য করা সম্ভব হবে না।’’
তিনি বলেন, ‘‘হাসিনার মতো স্বৈরাচারের সূচনা হয়েছিল একটি নির্বাচনের মাধ্যমে। পতিত ফ্যাসিবাদও তিনটা নির্বাচন করেছে। তারপরও জাতিকে ২৪-এ রক্ত দিতে হয়েছে। এর অর্থ হল, নির্বাচনই সমাধান না। বরং সংস্কারহীন নির্বাচন আরেকটি স্বৈরচার প্রতিষ্ঠার সুযোগ করে দেবে। সে কারণে ইসলামী আন্দোলন বারবার দাবি জানাচ্ছে যে, প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করেই নির্বাচন আয়োজন করতে হবে।’’
ইউনুছ আহমাদ বলেন, ‘‘সম্প্রতি নির্বাচন নিয়ে যেভাবে রাজনৈতিক চাপ তৈরি করা হচ্ছে, তাতে সংস্কার বাধাগ্রস্ত হওয়ার আসঙ্কা তৈরি হয়েছে। রাজনৈতিক চাপে সংস্কারকে অসম্পন্ন রেখে নির্বাচন আয়োজন করলে শত শত শহিদের রক্তের সঙ্গে গাদ্দারি করা হবে। অভ্যুত্থানে আহতরা এখনো হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছে। তাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করা হবে।’’
ইউনুছ আহমাদ বলেন, ‘‘এই সরকার একটি অভ্যুত্থানের উত্তরাধিকার বহন করছে। ফলে সেই অভ্যুত্থানের দাবি ও চেতনা বাস্তবায়ন করা তাদের দায়িত্ব। আজকে যারা সংস্কারকে গৌন করে নির্বাচনের জিগির তুলেছে; ২৪ এর অভ্যুত্থানে তাদের অবদান স্বীকার করার পরও বলতে হবে, ২৪ এ সাধারণ ছাত্র-জনতা এবং ক্ষমতার বাইরে থাকা রাজনৈতিক শক্তির অবদানই ছিল প্রধান ও মুখ্য। ফলে এখন ক্ষমতাকেন্দ্রীক দলগুলোর চাপে অভ্যুত্থানের প্রধান ধারার চিন্তা ও চেতনাকে জলাঞ্জলি দিলে ইতিহাস আমাদের ক্ষমা করবে না। তাই নির্বাচন নয় বরং সংস্কারকে মুখ্য করেই সরকারকে রোডম্যাপ তৈরি করতে হবে।’’
নির্বাচনের জন্য চাপ তৈরি করা দলগুলোর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘আপনার দলের নেতৃত্ব বাছাই প্রক্রিয়ায় নির্বাচন আয়োজন করে দেখুন। তাতেই দেখা যাবে রাজনৈতিক হানাহানি ও সংহিংসতা কী তীব্র ও হিংস্র আকারে এখনো বিরাজমান। এই বাস্তবতায় জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করে দেশকে আবারো সহিংস ও হিংস্র রাজনীতির মধ্যে ঠেলে দেওয়ার জন্য ২৪ এ ছাত্র জনতা রক্ত দেয় নাই।’’
সারাবাংলা/এজেড/ইআ