Saturday 19 Apr 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

থানা থেকে লুট করা পিস্তলসহ পুলিশকে আক্রমণকারী ডাকাত গ্রেফতার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৭ এপ্রিল ২০২৫ ১৮:৪১ | আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২৫ ২০:০০

আরিফ হাসান মেহেদী নামের ডাকাতকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীতে দুই পুলিশ সদস্যকে ছুরিকাঘাত করার ঘটনায় এক ডাকাতকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরে তাকে নিয়ে অভিযান চালিয়ে একটি বিদেশি পিস্তল, ৫০ রাউন্ড গুলি, দুটি টিপ ছোরা, একটি চাইনিজ কুড়াল ও একটি ছুরি উদ্ধার করেছে পুলিশ।

পুলিশ জানিয়েছে, উদ্ধার করা বিদেশি পিস্তল ও গুলিগুলো গত বছরের ৫ আগস্ট পুলিশের থানা থেকে লুট করা হয়েছিল।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) নগরীর দামপাড়ায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন উপ কমিশনার (পশ্চিম) হোসাইন মোহাম্মদ কবির ভূঁইয়া।

এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে নগরীর বারেক বিল্ডিং এলাকায় অভিযান চালিয়ে ওই ডাকাতকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

গ্রেফতার ওই ডাকাতের নাম আরিফ হাসান মেহেদী (২৭)। তার বাড়ি নড়াইলে। তার নেতৃত্বে ১০ থেকে ১২ জনের একটি ডাকাতদের গ্রুপ নগরীতে অপরাধ কার্যক্রম পরিচালনা করে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

চলতি বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি দুপুরে নগরীর বারেক বিল্ডিং এলাকায় ডাকাতদের আস্তানায় অভিযান চালানোর সময় তাদের ছুরিকাঘাতে আহত হন পুলিশের দুই উপ-পরিদর্শক (এসআই) আহলাদ ইবনে জামিল ও নজরুল ইসলাম। সেসময় তিন ডাকাতকে হাতেনাতে গ্রেফতার করে পুলিশ। ওই ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলাও দায়ের করেছিল।

সংবাদ সম্মেলনে নগর পুলিশের উপ কমিশনার (পশ্চিম) হোসাইন মোহাম্মদ কবির ভূঁইয়া জানান, পুলিশের ওপর হামলার পর থেকেই মেহেদী পলাতক ছিলেন। তিনি নগরীতে প্রথমে অটোরিকশা চালাতেন। পরে ছোটখাটো ছিনতাইয়ের মধ্যে দিয়ে তার অপরাধ জগতে হাতেখড়ি। এরপর তিনি নিজেই গ্রুপ খুলে বিভিন্ন বাসা-অফিস ও ব্যাংকে ডাকাতি করা শুরু করেন। তাকে ধরতে পুলিশ অনেক দিন ধরেই অভিযান চালাচ্ছিল।

বিজ্ঞাপন

মেহেদীর এক সহযোগীকে অসুস্থ অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে, এমন তথ্য তার মা-বাবাকে বলে তাকে সেখানে নিয়ে আসার পরিকল্পনা করেছিল পুলিশ। মেহেদী সেদিন তার সহযোগীকে দেখতে আসলেও পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায়।

তিনি বলেন, ‘পরে আমরা তার কয়েকজন সহযোগীকে গ্রেফতার করি। তারা জানায়, তাদের চক্রের মূল কারিগর মেহেদী ও মুনির। তারা চট্টগ্রাম শহরে যত দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটে বেশিরভাগেরই সঙ্গে জড়িত। গ্রেফতার মেহেদীর বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় ৫০টির বেশি মামলা আছে। আমরা তাকে আদালতে হাজির করে রিমান্ডের আবেদন করব।’

উপকমিশনার হোসাইন মোহাম্মদ কবির ভূঁইয়া জানান, সম্প্রতি চট্টগ্রাম শহরে চুরি-ছিনতাই বেড়ে গেছে। এসবের সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের ধরতে পুলিশ তার কার্যক্রম বাড়িয়েছে। গত ১ এপ্রিল পাঁচলাইশ থানার সুগন্ধা আবাসিক এলাকার একটি বাসা থেকে ৪০ ভরি সোনার গহনা, নগদ সাত লাখ ৫০ হাজার টাকা ও পাঁচ হাজার আমেরিকান ডলার চুরি করে নিয়ে যায় ডাকাতরা। পরে পুলিশ এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করে। তদন্তের একপর্যায়ে পুলিশ শ্রাবণ নামে চোরচক্রের এক সদস্যকে শনাক্ত করে।

শ্রাবণ প্রাইভেটকারে কুমিল্লার দাউদকান্দি এলাকায় থাকার সময় পুলিশ সেখানে অভিযান চালায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা সেখান থেকে রামগড়, হাটহাজারী হয়ে কর্ণফুলীর সিইউএফএল ফার্টিলাইজার এলাকায় চলে যায়। এ ঘটনায়ও মেহেদীর ডাকাত গ্রুপ জড়িত।

উদ্ধার করা অস্ত্রটি পুলিশের থানা থেকে লুট করা হয়েছে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, ‘পিয়াট্রো ব্যারেট্টা ক্যালিবার ৭ দশমিক ৬৫ এমএম পিস্তল ও গুলিগুলো ডবলমুরিং থানা থেকে গত ৫ আগস্ট লুট করা হয়েছিল। সে সেটা আমাদের কাছে স্বীকার করেছে। আমরাও থানা রেজিস্ট্রি দেখে সেটার প্রমাণ পেয়েছি। ৫ আগস্ট চট্টগ্রামের থানাগুলো থেকে এক হাজারের বেশি অস্ত্র লুট করা হয়েছিল। সব অস্ত্র এখনও উদ্ধার করা যায়নি। সেগুলো উদ্ধার করতে আমরা চেষ্টা করছি।’

বিজ্ঞাপন

সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘মেহেদীরা ১০ থেকে ১২ জনের গ্রুপ। শুধুমাত্র ডবলমুরিং নয়, পুরো চট্টগ্রামজুড়ে আতঙ্কের নাম মেহেদী-মনিরের গ্রুপ। ওরা বড় বড় আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো টার্গেট করে। ওদের শরীরগুলো দেখবেন একদম স্লিম। গেইট বা ছাদের রড কেটে তারা অনায়াসেই ঢুকে যায়। এ চক্রের বাকি সদস্যদের গ্রেফতার করতে আমরা অভিযান চালাচ্ছি।’

সারাবাংলা/আইসি/এইচআই

অস্ত্র লুট ডাকাত ডাকাত গ্রেফতার পুলিশকে আক্রমণ হামলা

বিজ্ঞাপন

আজ ৬ বিভাগে বৃষ্টি হতে পারে
১৯ এপ্রিল ২০২৫ ০৯:০৩

আরো

সম্পর্কিত খবর