Monday 21 Apr 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে কুয়েট শিক্ষার্থীদের মশাল মিছিল

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১৭ এপ্রিল ২০২৫ ২২:৫৪ | আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২৫ ১৫:৫৭

উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে কুয়েট শিক্ষার্থীদের মশাল মিছিল। ছবি: সংগৃহীত

খুলনা: খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে মশাল মিছিল করেছে শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার (১৭এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্বার বাংলা পাদদেশ থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে প্রধান ফটকসংলগ্ন কুয়েট উড পাদদেশে বিক্ষোভ মিছিল করে। এর পর সেখান থেকে তারা মশাল মিছিল সহকারে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনারে গিয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে শেষ করে।

বিজ্ঞাপন

শিক্ষার্থীদের পক্ষে প্রেস ব্রিফিং করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০ ব্যাজের শিক্ষার্থী রাহাতুল ইসলাম, ১৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী শেখ জাহিদ ও একই ব্যাচের শিক্ষার্থী গালিব রাহাত। এ সময় তারা অভিযোগ করে বলেন, গতকাল আমাদের কতিপয় শিক্ষক আমাদের বিরুদ্ধে কর্মচারী-কর্মকর্তাদের সঙ্গে মানববন্ধনে দাঁড়িয়েছেন। আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, আমাদের সংগ্রাম আমাদের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে নয়। তারা আমাদের পিতৃতুল্য। আমাদের যদি ভুল হয়ে থাকে আপনারা আমাদের ক্ষমা করবেন। কিন্তু আমরা ব্যথিত, আজ দুইমাস ধরেও আপনারা আমাদের বিরুদ্ধে যারা হামলা করেছে তাদের বিরুদ্ধে কোনো মানববন্ধন করলেন না। আমাদের নামে মিথ্যা মামলা হলো তাও আমাদের পক্ষে দাঁড়িয়ে মানববন্ধন করলেন না। আর এখন আপনারা আমাদের বিরুদ্ধে কীভাবে গেলেন। যেখানে সারাদেশ আমাদের পক্ষে দাঁড়াচ্ছে।

তারা বলেন, কার চক্রান্তে আমাদের শিক্ষকদের তাদের সঙ্গে দাঁড়া করানো হয়েছে। আমরা তার জবাব চাই। আমরা আরও দেখেছি শিক্ষকরা বলছেন, বহিষ্কারের তালিকা থেকে নাকি সবাই নির্দোষ প্রমাণ হলেও হতে পারে। তাহলে ৫৫ দিন ধরে তদন্ত কমিটি কি প্রহসনের রিপোর্ট বের করল? আমরা চাই ৩৭ জনের তালিকা দ্রুত প্রকাশ করা হোক। এতে ছাত্রদলের শিক্ষার্থীরা ছাড়া নিরীহ কেউ থাকলে তদন্ত কমিটি কেন তাকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করল তার জবাব দিতে হবে।

বিজ্ঞাপন

তারা আরও বলেন, আমাদের জন্য বুয়েট, রুয়েট, চুয়েট, ডি ইউ, সি ইউ, ব্রাক এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দাঁড়িয়েছেন। তাদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। আমাদের সংগ্রাম স্বৈরাচারিতার বিরুদ্ধে। আমাদের বিশ্বাস পুরো দেশ জুলাই আগস্টের পর আর কোনো স্বৈরাচারকে ঠাঁই দেবে না। কিন্তু আমরা ব্যথিত। কারণ ৫৮ দিন পরেও ইন্টারিম আমাদের দিকে এখনো তাকাচ্ছে না। আমাদের ক্যাম্পাসে রামদা-চাপাতি, এমনকি আগ্নেয়াস্ত্র তাক করে গুলি করা হলো তাও ইন্টেরিম নিশ্চুপ ভূমিকা পালন করে।

তারা অভিযোগ করেন, আমাদের নামে মামলা-বহিষ্কার হওয়ার পরেও তারা আমাদের দিকে তাকায়নি। যেই আসিফ মাহমুদের জন্য আমরা রাস্তায় নেমে রক্ত দিয়েছি। আসিফ মাহমুদ আমাদের দিকে তাকান। আমরা কিন্তু এখনো রাজপথ ছাড়িনি। কোথায় মাহফুজ আলম? আপনারা দেখেন, আমার ভাইয়েরা কুকুরের সঙ্গে শুয়ে ঘুমাচ্ছে। আমরা আপনাদের হুঁশিয়ার করছি, আপনারা যদি এখনো আমাদের ভিসিকে অপসারণ না করেন, তাহলে আমরা ধরে নিব সারা দেশের বিরুদ্ধে গিয়ে ইন্টেরিম স্বৈরাচারকে সেইফ গার্ড দিচ্ছে। আর স্বৈরাচার দমানোর জন্য আমরা প্রয়োজনে আবার জুলাই নামাব।

এর আগে, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় শতাধিক আহত হন। পরদিন প্রশাসনিক ভবনসহ সব একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। ওইদিন দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটে সবধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়। ২৫ ফেব্রুয়ারি সব আবাসিক হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

এরপর আবাসিক হলগুলো খুলে দেওয়ার দাবিতে শিক্ষার্থীরা ১৩ এপ্রিল বিকেল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিলে আন্দোলন ফের দানা বাঁধতে থাকে। ওইদিন রাতেও তারা দ্বিতীয় দিনের মতো প্রশাসনিক ভবনের সামনে খোলা আকাশের নিচে রাত্রিযাপন করেন। সবশেষ বুধবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের এক দফা দাবি ঘোষণা করেন এবং তালা ভেঙে হলে প্রবেশ করেন।

সারাবাংলা/পিটিএম

উপাচার্য কুয়েট টপ নিউজ পদত্যাগ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর