সর্বাত্মক কর্মবিরতির হুঁশিয়ারি বিচার বিভাগীয় কর্মচারীদের
১৯ এপ্রিল ২০২৫ ১৪:৪৫ | আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২৫ ১৬:০৬
ঢাকা: বেতন ভাতা-পদোন্নতিসহ দুই দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে সংবাদ সম্মেলন করেছে বাংলাদেশ বিচার বিভাগীয় কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশন। নির্দিষ্ট সময়ে দাবি না মানলে আগামী ৫ মে দুই ঘণ্টার সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বক্তারা।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) দুপুর ১২টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দুস সালাম হলে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এ সময় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সভাপতি মো. রেজওয়ান খন্দকার।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, অধস্তন আদালতের কর্মচারীদের বিচার বিভাগের সহায়ক কর্মচারী হিসেবে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস বেতন স্কেল অনুযায়ী সব ধরনের সুবিধা দিতে হবে। একইসঙ্গে যুযোপযোগী পদ বানিয়ে যোগ্যতা ও জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে পদোন্নতির সুযোগ রেখে স্বতন্ত্র নিয়োগবিধি প্রণয়ণ করতে হবে। এ নিয়ে ২০১৮ সাল থেকে স্মারকলিপি দেওয়াসহ রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায়ে আমরা আলোচনা করে আসছি।
সম্প্রতি বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের কাছেও এসব দাবি তুলে ধরা হয়। আমাদের দাবি যৌক্তিক হিসেবে মেনে নিলেও সরকারের কাছে দেওয়া প্রতিবেদনের সুপারিশে কোনো প্রস্তাব রাখেনি তারা। এরই মধ্যে বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। কিন্তু সহায়ক কর্মচারীদের বৈষম্য নিরসনে উল্লেখযোগ্য কোনো পদক্ষেপ নেই। এতে অধস্তন আদালতের প্রায় ২০ হাজার সহায়ক কর্মচারী আশাহত। অথচ বিচার বিভাগের সহায়ক কর্মচারীরাই বিচারপ্রার্থীদের সেবায় দিনরাত নিরলস কাজ করছেন।
রেজওয়ান বলেন, নতুন পদ সৃজন না হওয়ায় অধিকাংশ কর্মচারীই হতাশায় ভুগছেন। এমনকি একই পদে ৩৮-৪০ বছর চাকরি করেও পদোন্নতি বঞ্চিত থেকে অবসরে যাচ্ছেন। সচিবালয়ে একজন অফিস সহায়ক যোগ্যতার ভিত্তিতে উপ-সচিব (নন ক্যাডার) পদে পদোন্নতি পেতে পারেন। সুপ্রিম কোর্টে প্রচলিত নিয়োগবিধি অনুযায়ী অফিস সহকারী পদোন্নতি পেয়ে ডেপুটি রেজিস্ট্রার হতে পারেন। কিন্তু অধস্তন আদালতের সহায়ক কর্মচারীদের কোনো সুযোগ-সুবিধা নেই।
তাই অ্যাসোসিয়শনের এসব ন্যায্য দাবি আগামী ৪ মে পর্যন্ত কোনো অগ্রগতি না হলে পরদিন সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করবেন ভুক্তভোগীরা। এদিন অধস্তন আদালত ও ট্রাইব্যুনালের সহায়ক কর্মচারীরা নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সকাল সাড়ে ১১টা পর্যন্ত কর্মসূচি পালন করা হবে।
উল্লেখ্য, ২০০৭ সালের ১ নভেম্বর নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ আলাদা হওয়ার পর বিচারকদের জন্য ছয়টি গ্রেড রেখে পৃথক পে-স্কেলসহ নিয়োগ বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়। তবে ওই স্কেলে সহায়ক কর্মচারীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এছাড়া জেলা জজ আদালত ও অধস্তন আদালত, বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের কর্মচারী নিয়োগ বিধিমালা-১৯৮৯ এবং জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসি ও মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেসি আদালতের কর্মচারী নিয়োগ বিধিমালা-২০০৮ প্রণীত হয়। কিন্তু দীর্ঘ সময় পার হলেও এসব বিধিমালা হালনাগাদ করা হয়নি।
সারাবাংলা/আরএম/ইআ