আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে রাবিতে বিক্ষোভ
১৯ এপ্রিল ২০২৫ ১৯:০৭ | আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২৫ ১৯:১২
রাবি: আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ও বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা। শনিবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জোহা চত্বরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এই কর্মসূচি পালন করা হয়।
এর আগে, বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জোহা চত্বর থেকে একটি মিছিলের মধ্য দিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এরপর মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে যথাস্থানে এসে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়।
বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীরা, ‘বিচার বিচার বিচার চাই, আওয়ামী লীগের বিচার চাই’, ‘আওয়ামী লীগের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’, ‘জঙ্গি লীগের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’, ‘অ্যাকশন অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন, জঙ্গি লীগের বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’ ‘ওয়ান টু থ্রি ফোর, আওয়ামী নো মোর’ ইত্যাদি স্লোগান দেয়।
স্টুডেন্ট রাইটস অ্যাসোসিয়েশন’র সভাপতি ও সাবেক সমন্বয়ক মেহেদী সজিব বলেন, ‘বিগত ১৫ বছরে আমরা স্বৈরাচারের জাঁতাকলে পিষ্ট হতে হতে আমাদের নূন্যতম মানবাধিকার পর্যন্ত পাইনি। আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের জনগণের ওপর বিভিন্ন সময় বর্বরোচিত গণহত্যা চালিয়েছে। পিলখানা হত্যা, শাপলা চত্বরে গণহত্যার এবং সর্বশেষ জুলাই গণহত্যার মধ্য দিয়ে জার্মানির নাৎসি পার্টির ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে এই আওয়ামী লীগ। এতো কিছুর পরে এই বাংলাদেশে আওয়ামী লীগকে রাজনীতি করতে দেওয়া যায় না। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বলছি আওয়ামী লীগকে যদি নিষিদ্ধ করে বিচারের আওতায় আনা না হয় তাহলে ছাত্র-জনতা আবার গর্জে উঠবে। জুলাইয়ের হাজার শহিদের রক্তকে আমরা বৃথা যেতে দেব না।’
স্টুডেন্ট রাইটস অ্যাসোসিয়েশন’র সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সমন্বয়ক ফাহিম রেজা বলেন, ‘স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগ যখনি ক্ষমতায় এসেছে তারা রাজনীতি করে নাই। রাজনৈতিক দল সুলভ যে আচরণ সেটা গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগের কাছে দেখতে পাইনি। যে আওয়ামী লীগ রাজনীতি করতে চায়নি, রাজনীতির নামে গণহত্যা করেছে তাদের বাংলারজমিনে রাজনীতি করার অধিকার নাই। আমরা দেখেছি যে দেশে কোনো দল গণহত্যা চালিয়েছে তারা পরবর্তীতে আর রাজনীতি করতে পারেনি। আওয়ামী লীগ যে শুধু গণহত্যা চালিয়েছে তা নয়, তারা প্রতিবেশী রাষ্ট্রের কাছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে বর্গা দিয়েছে। তাই আমরা আমাদের ভাগ্যকে কারো হাতে বর্গা দেওয়ার মতো সুযোগ আর দিতে চাই না।’
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদি বলেন, ‘ইতিহাস আমাদের একটা সুযোগ দিয়েছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকে দিল্লির স্বার্থ বাস্তবায়ন করে গিয়েছে। যখনই কেউ প্রতিবাদ করেছে, তাকে আয়নাঘরে পাঠানো হয়েছে অথবা গুম করা হয়েছে। আমার ভাইদের তুলে নিয়ে জঙ্গি তকমা দিয়েছে। এরপরে জুলাইয়ে অধিকার নিয়ে কথা বলতে গেলে দেশব্যাপী গণহত্যা চালায় এই আওয়ামী লীগ। দুনিয়াতে এমন কোনো অপরাধ নেই যা তারা উৎসাহ নিয়ে করেনি। এই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করা হলে আমাদের শহিদদের সঙ্গে বেইমানি করা হবে।
সমাবেশে গণঅভ্যুত্থান মঞ্চের সংগঠক সংগঠক ইমরান হাসানের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় সংগঠক ও সাবেক সমন্বয়ক আকিল বিন তালেব এবং সাবেক সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মার। এসময় বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/এসআর