‘দেশের ১ শতাংশ নারীও রাজনীতিতে উৎসাহী নন’
১৯ এপ্রিল ২০২৫ ২০:০৩ | আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২৫ ২৩:৩৪
জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত ‘রাষ্ট্র গঠনে সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব ও বাস্তবতা’ শীর্ষক আলোচনা সভা। ছবি: সারাবাংলা
ঢাকা: ‘বর্তমান নিবন্ধন আইন অনুসারে যেকোনো রাজনৈতিক দলের প্রতি কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারী থাকার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এর অর্ধেকেও দেশের কোনো দলে নেই। থাকা সম্ভবও নয়। কেননা রাজনীতিতে এক শতাংশ নারীও আগ্রহী বা উৎসাহী নন।’
শনিবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত ‘রাষ্ট্র গঠনে সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব ও বাস্তবতা’ শীর্ষক আলোচনায় এ তথ্য উঠে আসে। রাজনৈতিক দল নিবন্ধন আইন সংশোধন আন্দোলনের উদ্যোগে এ আয়োজন করা হয়।
সংগঠনের আহ্বায়ক বাংলাদেশ জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসাইনের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন কবি-রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার। আলোচনায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারাও অংশ নেন।
বক্তারা বলেন, ‘উত্তরাধিকার সূত্রে মুষ্টিমেয় কিছু নারী এদেশে রাজনীতি করেন। কোনো অনুর্বর মস্তিষ্ক ছাড়া ৩৩ শতাংশ নারী থাকার শর্ত কেউ দিতে পারে না। কেননা শিক্ষার্থী ছাড়া কোথাও এত নারী পাওয়া যায় না। সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে নারী কোটা বাধ্যতামূলক করা যায়। কিন্তু কোনো ঐচ্ছিক সংগঠন বা দলে নারীদের অংশগ্রহণের আবশ্যকতা সম্ভব হয় না।’
তারা বলেন, ২০০৮ সালে দল নিবন্ধনের কঠোর আইন করেছিল সেনাসমর্থিত সরকার। ওই সময় রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের জন্য কার্যালয়সহ কেন্দ্রীয় কমিটির সঙ্গে ১০টি জেলা কমিটি ও ৫০ থানা কমিটি গঠনের শর্ত ছিল। কিন্তু ২০১৩ সালে আওয়ামী লীগ সরকার এসে ২২টি জেলা ও ১০০ থানা কমিটির শর্ত দেয়। শর্ত অনুযায়ী নতুন একটি দলকে ন্যূনতম ১২৩টি কার্যালয় চালাতে হবে; যার মাসিক খরচ প্রায় ২৫ লাখ টাকা। আর এত টাকার জোগান দেওয়া নতুন দলের পক্ষে পুরোপুরি অসম্ভব। এককথায় অগণতান্ত্রিক বিধান চালু করেছিল আওয়ামী লীগ।
এছাড়া দলীয় প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিতে দলের নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এই বিধানও অসাংবিধানিক। কেননা রাজনীতি হলো ভোটের মাধ্যমে স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ করা। একই সঙ্গে জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করা বা নির্বাচিত হওয়া; যা নাগরিকের গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক অধিকার।
সংবিধান নিয়ে বক্তারা বলেন, ‘জনগণের অভিপ্রায়ের ভিত্তিতে বাংলাদেশের সংবিধান তৈরি বা সংশোধন হয়নি। এটি বিশেষ মহলের চাপিয়ে দেওয়া একটি সংবিধান, যা পাকিস্তান পার্লামেন্টের জন্য নির্বাচিত একটি গণপরিষদ রচনা করেছেন। যেকোনো গণঅভ্যুত্থানের পর নতুন গঠনতন্ত্র প্রণয়নের মাধ্যমে প্রকৃত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রগঠনের স্বপ্ন দেখেছিল এদেশের মানুষ। কিন্তু প্রত্যেক গণঅভ্যুত্থানের পর গণতন্ত্রের মোড়কে নব্য ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠিত হয়।’
সারাবাংলা/আরএম/এমপি