নলকূপে পানি নেই, দুর্ভোগ ঘরে ঘরে
২০ এপ্রিল ২০২৫ ০৮:০০ | আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০২৫ ০৫:০৮
সুনামগঞ্জ: জেলার দিরাই উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের নলকূপে পানি উঠছে না। তীব্র পানি সংকট দেখা দিয়েছে। অধিকাংশ নলকূপই এখন অকেজো। পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। পানির অভাবে সংসারের কাজকর্ম হতে শুরু করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কাজও ব্যাহত হচ্ছে। দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে ঘরে ঘরে। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে হাজার হাজার পরিবার।
সুনামগঞ্জ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মৃদুল কান্তি সরকার বলছেন, ‘ভূগর্ভস্থ থেকে অপরিকল্পিতভাবে পানি তোলার কারণে ক্রমাগত নামছে পানির স্তর। জলবায়ু পরিবর্তনে স্বাভাবিকভাবে বৃষ্টি হচ্ছে না। এর ফলে নলকূপেও উঠছে না পানি। তবে বৃষ্টি হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলেও আশা করছেন তিনি।’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার একটি পৌরসভা ও নয়টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে বৃষ্টির অভাবে পুকুর, হাওর-বাঁওড়, খাল-বিল নদী-নালার পানি শুকিয়ে গেছে। এদিকে, এলাকার অধিকাংশ নলকূপে পানি উঠছে না। ২/৩ মাস আগে থেকেই নলকূপে পানি উঠা কমে যায়। মার্চ মাসের মাঝামাঝি থেকে এই সমস্যা তীব্র হয়ে উঠে। পানি সংকটের কারণে সামর্থ্যবান অনেকেই বাড়িতে গভীর নলকূপ বসিয়ে নিচ্ছেন। তবে অনেক গভীর নলকূপেও পানি উঠছে না বলে জানা গেছে। শুষ্ক মৌসুমে নলকূপে পানি সংকটে ভোগান্তিতে পড়েছেন এলাকাবাসী।
সরেজমিনে উপজেলার চান্দপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, অধিকাংশ নলকূপে পানি উঠছে না। খাওয়ার পানির সংকট। নলকূপের সঙ্গে পাম্প বসিয়েও কাজ হচ্ছে না।
চান্দপুর গ্রামের ঝুনু রায় বলেন, ‘আমাদের গ্রামে পানির জন্য হাহাকার চলছে। গ্রামের প্রায় ৪০/৫০টি নলকূপে পানি উঠানোর চেষ্টা করেও পানি পাওয়া যাচ্ছে না। পানির জন্য অনেক কষ্টে আছি।’
অর্চনা সূত্রধর বলেন, নলকূপে পানি নেই। নদী থেকে পানি সংগ্রহ করতে হয়। নদী গ্রাম থেকে অনেক দূরে হওয়ায় তাদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।’
পৌরসভার মজলিশপুর এলাকার সোহাগ আহমদ ও দিগেন্দ্র দেবনাথ বলেন, নলকূপে পানি নেই। এলাকার একমাত্র সরকারি পুকুরের পানি শুকিয়ে গেছে। তাই বাসাবাড়ির প্রয়োজনীয় কাজ, গোসলের জন্য পানি সংকটে ভুগছি।’
পুরাতন বাগবাড়ি গ্রামের আব্দুল হান্নান বলেন, ‘গ্রামের ১০/১৫ টি টিউবওয়েলে পানি উঠছে না, তবে সংখ্যাটা আরও বেশি হবে। গ্রামের প্রতি বাড়িতে ২/৩টা করেও নলকূপ থাকলেও কোনো কাজে আসছে না।
পাইপ-ফিটিংসের মিস্ত্রি গৌর সুন্দর দেবনাথ কডু বলেন, ১০০ টিউবওয়েলে পানি উঠে না বলে জানতে পেরেছি। অনেকে এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে কম্প্রেসার পাম্প লাগিয়ে নিচ্ছেন বলে জানান তিনি।
উপজেলা জনস্বাস্থ্য বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী উজ্জ্বল খান বলেন, এই এলাকায় ধান চাষ করতে বিএডিসির পাম্পের মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ থেকে প্রচুর পানি উত্তোলন করে জমিতে দেওয়া হয়। এগুলো বন্ধ হলে এবং বৃষ্টি শুরু হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।’
সারাবাংলা/এসআর