‘আ.লীগ সোনার বাংলার স্নোগান দিয়ে দেশকে শ্মশান বাংলা করেছিল’
১৯ এপ্রিল ২০২৫ ২৩:৩১ | আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২৫ ২৩:৩৩
নীলফামারী: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ড. শফিকুর রহমান বলেছেন, আওয়ামী লীগ এ যুগের নিকৃষ্ট বন্দি খেলা তৈরি করেছিল। তারা সুশাসনের নামে শাসনের প্রতিটি স্তরে মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। সোনার বাংলার স্লোগান দিয়ে বাস্তবে এই দেশকে শ্মশান বাংলায় পরিণত করেছে।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে নীলফামারীর জলঢাকা স্টেডিয়াম মাঠে জলঢাকা উপজেলা জামায়াতের উদ্যোগে আয়োজিত এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জলঢাকা উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মোয়াম্মার আল হাসানের সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা আমির মোখলেছুর রহমান।
ড. শফিকুর রহমান বলেন, আওয়ামী লীগ সাড়ে ১৫ বছরে খুন, গুম, ধর্ষণ ও লুণ্ঠনের রাজত্ব কায়েম করেছে। মানুষের বাকস্বাধীনতা হরণ করেছে, প্রতিবাদকারীদের ওপর চালিয়েছে নির্মম দমন-পীড়ন। আজও জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলাম রাজনৈতিক কারণে কারাগারে বন্দি আছেন। আমরা কোনো ধোঁকা চাই না—তাকে দ্রুত মুক্তি দিতে হবে এবং জনগণের মাঝে ফিরে আসার সুযোগ করে দিতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা চাই তিস্তা মহাপরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়ন হোক। এটি আমাদের অধিকার। আমরা স্বাধীন দেশের নাগরিক। আমাদের প্রয়োজন অনুযায়ী উন্নয়ন কর্মসূচি গ্রহণ করব, অবকাঠামো নির্মাণ করব—এখানে বাইরের কারো নাক গলানোর অধিকার নেই।
জামায়াত আমির অভিযোগ করেন, ফ্যাসিস্ট সরকার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর ওপর সবচেয়ে বেশি আঘাত হেনেছে। আমাদের ১১ জন দায়িত্বশীল নেতাকে জুডিশিয়াল ক্লিনিংয়ের মাধ্যমে হত্যা করা হয়েছে। পাঁচজনকে অন্যায়ভাবে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে এবং ছয়জনকে কারাগারে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। আমরা এই সকল হত্যার বিচার চাই।
মীর কাসেম আলী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তিনি জানতেন দেশে ফিরে এলে তাকেও ফাঁসি দেওয়া হতে পারে, তবুও তিনি ফিরেছিলেন। তিনি দেশপ্রেমিক ও নির্দোষ মানুষ ছিলেন। তিনি যুবসমাজের শক্তি গঠনে ভূমিকা রেখেছেন। অথচ ফ্যাসিস্ট সরকার মিথ্যা মামলায় তাকে ফাঁসি দেয়।
তিনি আরও বলেন, আমরা চাই ‘জুলাই হত্যাকাণ্ডের’ বিচার এবং প্রয়োজনীয় রাজনৈতিক সংস্কার। এই দুইটি দাবি পূরণ না হলে নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি হবে না। জনগণও আর কোনো ভুয়া নির্বাচন মেনে নেবে না।
জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি ও রংপুর দিনাজপুর অঞ্চলের পরিচালক মাওলানা আবদুল হালিম বলেন, বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে যারা অন্যায় অত্যাচার করেছে তারা দেশ থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। তাদেরকে আর এ দেশের জনগণ চায় না। ১৫ বছর নেতৃত্ব দেওয়ার পর যিনি দলের নেতাকর্মীদের ছেঁড়ে পালিয়ে যেতে পারে তিনি আর বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্যতা রাখেন না।
জনসভায় আরও বক্তব্য দেন সহকারী অঞ্চল পরিচালক অধ্যক্ষ মাওলানা মমতাজ উদ্দিন, রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের টিম সদস্য আব্দুর রশীদ ও জেলা মজলিসে শূরা সদস্য ওবায়দুল্লাহ সালাফী প্রমুখ।
সারাবাংলা/এইচআই